ঢাকা, বুধবার, ১০ বৈশাখ ১৪৩১, ২৪ এপ্রিল ২০২৪, ১৪ শাওয়াল ১৪৪৫

জাতীয়

সেই কিশোরীর পাশে বেতাগী উপজেলা প্রশাসন

| বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৪১১ ঘণ্টা, সেপ্টেম্বর ৪, ২০১৯
সেই কিশোরীর পাশে বেতাগী উপজেলা প্রশাসন

বরগুনা: পেলাম না স্ত্রীর মর্যাদা, রাখতে পারছি না ছেলের নামও’ শিরোনামে সংবাদটি প্রকাশের পর সেই কিশোরীর পাশে দাঁড়িয়েছে বেতাগী উপজেলা প্রশাসন।

বেতাগী উপজেলার নির্বাহী কমকর্তা (ইউএনও) মো. রাজিব হোসেন বাংলানিউজকে জানান, উপজেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে সদ্য জন্ম নেওয়া শিশু ও তার মাকে চিকিৎসাসহ সব ধরনের সহযোগিতা করা হচ্ছে।

বেতাগী স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কমকর্তা ডা. তেন মং জানান, কিশোরী ও নবজাতক শিশুটির শারীরিক অবস্থা ভালো।

তবে যদি ওদের সঠিক যত্ন নেওয়া না হয়, তাহলে দুজনেরই শারীরিক অবস্থার অবনতি হতে পারে।

জানা যায়, বরগুনার বেতাগী উপজেলার দক্ষিণ হোসনাবাদ গ্রামের এক কিশোরীকে বিয়ের প্রলোভন দেখিয়ে একাধিকবার ধর্ষণ করেন একই গ্রামের কালাম বেপারীর ছোট ছেলে আক্কাস বেপারী। ওই কিশোরী অসুস্থ হয়ে পড়লে পরিবারের সদস্যরা তাকে ডাক্তারের কাছে নিয়ে যায়। এরপর চিকিৎসকেরা জানায় ওই কিশোরী চার মাসের অন্তঃসত্ত্বা।  

ঘটনাটি ছড়িয়ে পড়লে আক্কাসের পরিবারে ওই কিশোরীকে বিয়ে করার জন্য চাপ আসে। সমাজের প্রভাবশালী মহল থেকে আর্থিক লেনদেনের মাধ্যমে বিষয়টি মীমাংসার জন্য নির্যাতিত ওই কিশোরীর পরিবারেও প্রস্তাব আসে।

ওই কিশোরীর পরিবার এতে অসম্মতি জানিয়ে ন্যায় বিচারের জন্য বরগুনা নারী ও শিশু নির্যাতন ট্রাইব্যুনালে মামলা করে। খবর পেয়ে আক্কাস ওই কিশোরীকে প্রাণনাশের হুমকি দিয়ে এলাকা থেকে পালিয়ে যান। এমন পরিস্থিতিতে গত বুধবার (২৮ আগস্ট) রাতে নির্যাতিত ওই কিশোরী একটি ছেলে সন্তানের মা
হয়।

এ বিষয়ে নির্যাতিত ওই কিশোরী বাংলানিউজকে জানায়, ‘আমি যে আমার পোলার একটা নাম রাখবো সেই সৌভাগ্যও আমার হয়নি। যেদিন আমি প্রসব বেদনায় ছটফট করেছিলাম
সেদিনও আমাকে মারার জন্য আমার ঘরের দরজা কুপিয়ে গেছেন আক্কাসের বাবা কালাম বেপারী। একটি প্রভাবশালী মহলের দাপটে তারা আমাদের ভয়ভীতি দেখিয়ে চলছে। ’

এলাকাবাসী জানায়, যে বয়সে টিফিনের বক্স হাতে নিয়ে দৌঁড়ে স্কুলে যাওয়ার কথা, সেই বয়সেই একটি ছেলে সন্তানের মা হলো মেয়েটি। এক কথায় বলা যেতে পারে শিশুর কোলে শিশুর জন্ম। তবে নিষ্পাপ শিশুটি যেন তার বাবার পরিচয় পায়।

এসব অভিযোগ অস্বীকার করে আক্কাসের বাবা কালাম বাংলানিউজকে বলেন, ‘আমার সম্মানহানি করার জন্য এলাকার একটি কুচক্রী মহল এসব কথা রটিয়েছে। তাদের মিথ্যা মামলার কারণে আমার ছেলে পালিয়ে বেড়াচ্ছে। ’

নবজাতকটির বিষয়ে তিনি আরও বলেন, ‘ওই নবজাতকের বাবা আমার ছেলে না। বেশ কিছুদিন ওই মেয়ে তার বোনের বাড়িতে ছিল এবং তার বোন জামাইয়ের সঙ্গে অবৈধ সম্পর্ক ছিল তার। হতে পারে সন্তানটি তার বোন জামাইয়ের। ’

হোসনাবাদ ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) চেয়ারম্যান খলিলুর রহমান খান বাংলানিউজকে বলেন, এ ঘটনার পর থেকেই আক্কাস বেপারীকে ওই মেয়েটিকে বিয়ে করার জন্য বলেছি। কিন্তু মামলা প্রক্রিয়াধীন থাকার কারণে কোনো ধরনের মীমাংসা করা সম্ভব হয়নি।

বাংলাদেশ সময়: ০৯৫৫ ঘণ্টা, সেপ্টেম্বর ০৪, ২০১৯
এনটি

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।