ঢাকা, বৃহস্পতিবার, ১৪ চৈত্র ১৪৩০, ২৮ মার্চ ২০২৪, ১৭ রমজান ১৪৪৫

জাতীয়

আশুলিয়ায় শ্রমিক অসন্তোষ, সংঘর্ষে আহত ৪

সাভার করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ০১০০ ঘণ্টা, সেপ্টেম্বর ২, ২০১৯
আশুলিয়ায় শ্রমিক অসন্তোষ, সংঘর্ষে আহত ৪

আশুলিয়া (ঢাকা): অবৈধভাবে শ্রমিক ছাঁটাই বন্ধ ও ছাঁটাই শ্রমিকদের কাজে পুনর্বহালসহ বিভিন্ন দাবিতে সাভারের আশুলিয়ার একটি পোশাক কারখানার শ্রমিকরা কর্মবিরতিসহ বিক্ষোভ কর্মসূচি পালন করেছে। এসময় কারখানার কর্তৃপক্ষ ও শ্রমিকদের মধ্যে দফায় দফায় সংঘর্ষের সৃষ্টি হয়। এতে আহত হয়েছেন কারখানার চার নারী পোশাক শ্রমিক। 

রোববার (১ সেপ্টেম্বর) দুপুরে আশুলিয়ার জামগড়ায় অবস্থিত ‘ইএসকেই ক্লোথিকং লিমিটেড’ নামে একটি পোশাক কারখানায় এ সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে।  

আহতরা হলেন- রাজিয়া (৩২), ঝুমা (২৪), হাসনা (২২), আমেনা (২০)।

তারা সবাই ওই কারখানার সুইং অপারেটর হিসেবে কাজ করেন।  
 
আন্দোলনরত শ্রমিকরা জানান, প্রতি মাসেই কারখানাটির কর্তৃপক্ষ নির্ধারিত তারিখে বেতন পরিশোধে গড়িমসি করে বিলম্ব করেন। তাই গত কয়েকদিন থেকেই সময়মতো বেতন ও ওভারটাইম পরিশোধ, অবৈধভাবে শ্রমিক ছাঁটাই বন্ধে আন্দোলন চালিয়ে আসছেন তারা। এরই জেরে রোববার দুপুরে শ্রমিকরা কারখানায় ঢুকলে কর্তৃপক্ষের সঙ্গে তাদের সংর্ঘষ বাধে। এসময় কারখানার সহকারী ব্যবস্থাপনা পরিচালক (এজিএম) নজরুল ইসলামসহ বাইরের সন্ত্রাসীরা শ্রমিকদের ওপর হামলা চালায়। এতে ওই চার নারী শ্রমিক আহত হন। পরে তাদের উদ্ধার করে স্থানীয় নোভা ক্লিনিকে ভর্তি করানো হয়।  

কারখানাটির সুইং অপারেটর সাকিলা বাংলানিউজকে বলেন, এজিএম নজরুল ইসলাম বিভিন্ন ভাবে শ্রমিকদের হয়রানি করেন। তিনি শ্রমিকদের অভারটাইমের টাকা না দিয়ে নিজের পকেটে ভরেন। এছাড়া কোনো মাসে আন্দোলন ছাড়া আমরা বেতন নিতে পারি না। এর মধ্যে গত বৃহস্পতিবার একযোগে বিনা কারণে ৩০ জন শ্রমিককে অবৈধভাবে ছাঁটাই করা হয়। এ কারণে শনিবার থেকে কাজ বন্ধ করে আমরা আন্দোলন করেছি। রোববার দুপুরে কারখানায় ঢুকতেই আমাদের ওপর এজিএমের ভাড়া করা সন্ত্রাসীরা হামলা চালায়। আমরা এর সুষ্ঠু বিচার চাই, না হলে আন্দোলন চালিয়ে যাব।  

শ্রমিক ছাঁটাইয়ের বিষয়টি স্বীকার করে কারখানার এজিএম নজরুল ইসলাম বাংলানিউজকে বলেন, কারখানায় কিছু শ্রমিক আছেন, যারা শ্রমিকদের নিয়ে বিশৃঙ্খলার সৃষ্টি করেন। তাই ৩০ জনকে ছাঁটাই করা হয়। এনিয়ে শ্রমিকরা আন্দোলন করে আসছিল গত কয়েকদিন ধরে। রোববার দুপুরে আন্দোলনের সময় আমরা কয়েকজন তাদের বোঝাতে গেলে শ্রমিকরাই আমাদের ওপর হামলা চালায়। এতে আমার মাথা ও হাতে ব্যথা পাই। তাছাড়া শ্রমিকদের সঙ্গে আমরা আলোচনা করছি, অচিরেই বিষয়টির সমাধান হবে।  

এ বিষয়ে বাংলাদেশ বস্ত্র ও পোশাক শিল্প শ্রমিক লীগের (বিটিজিডব্লিউএল) কেন্দ্রীয় কমিটির সহ-সম্পাদক সরোয়ার হোসেন বাংলানিউজকে বলেন, শ্রমিক প্রতিনিধি হিসাবে প্রশাসন ও কারখানা কর্তৃপক্ষের সঙ্গে এ বিষয়ে আলোচনা করেছি, তারা এ ঘটনার সঠিক বিচার করবেন।  

এ ব্যাপারে শিল্প পুলিশ-১ এর পুলিশ সুপার (এসপি) সানা সামিনুর রহমান বাংলানিউজকে বলেন, ঘটনাটি ঘটার সঙ্গে সঙ্গে শিল্প পুলিশের সদস্যরা ঘটনাস্থলে গিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে। বর্তমানে কারখানাটি শিল্প পুলিশের নিয়ন্ত্রণে রয়েছে। কারখানা কর্তৃপক্ষের সঙ্গে আলোচনা করা হয়েছে। সোমবার (২ সেপ্টেম্বর) থেকে পোশাক শ্রমিকরা কাজে ফিরবেন বলে আশা রাখি।  

বাংলাদেশ সময়: ২০৫৫ ঘণ্টা, সেপ্টেম্বর ০১, ২০১৯
এসআরএস

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।