ঢাকা, শনিবার, ৭ বৈশাখ ১৪৩১, ২০ এপ্রিল ২০২৪, ১০ শাওয়াল ১৪৪৫

জাতীয়

‘সম্প্রীতির বন্ধন গড়ে তোলাই শ্রীকৃষ্ণের মূল দর্শন’

সিনিয়র করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ০০১৬ ঘণ্টা, সেপ্টেম্বর ২, ২০১৯
‘সম্প্রীতির বন্ধন গড়ে তোলাই শ্রীকৃষ্ণের মূল দর্শন’

ঢাকা: অর্থমন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামাল বলেন, ন্যায় ও সত্যের পূজারি হিসেবে পৃথিবীতে এসেছিলেন শ্রীকৃষ্ণ। সম্প্রীতির বন্ধন গড়ে তোলাই ছিল তার মূল দর্শন।

রোববার (০১ সেপ্টেম্বর) রাজধানীর ঢাকেশ্বরী মন্দিরে জন্মাষ্টমী উপলক্ষে আয়োজিত আলোচনা সভা ও সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানে তিনি এসব কথা বলেন।

মুস্তফা কামাল বলেন, দেশে সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি সমুন্নত রাখতে সরকার বদ্ধপরিকর।

জন্মাষ্টমী সনাতন ধর্মাবলম্বীদের অন্যতম প্রধান ধর্মীয় উৎসব। শ্রীকৃষ্ণ ছিলেন পরোপকারী, প্রেমিক, রাজনীতিক ও সমাজসংস্কারক। সমাজ থেকে অন্যায়-অত্যাচার, নিপীড়ন ও হানাহানি দূর করে মানুষে মানুষে অকৃত্রিম ভালোবাসা ও সম্প্রীতির বন্ধন গড়ে তোলাই ছিল শ্রীকৃষ্ণের মূল দর্শন। সনাতন ধর্ম মতে, যেখানেই অন্যায়-অবিচার এ ধরাধামকে গ্রাস করেছে, সেখানেই শ্রীকৃষ্ণ আবির্ভূত হয়েছেন আপন মহিমায়।

তিনি বলেন, পৃথিবীতে যতবার ধর্ম আক্রান্ত হবে, শ্রীকৃষ্ণের ততবার আগমণ ঘটবে। শ্রীকৃষ্ণ পৃথিবীতে বার বার আসবেন। নির্দিষ্ট সময়ের পর সৃষ্টি ও পৃথিবী ধ্বংস হয়ে যাবে। আমাদের অন্যতম কাজ হবে মানুষকে ভালোবাসা। মানুষকে ভালোবাসার মতো পরম ধর্ম আর কিছু নাই। আমাদের সবার উচিত মানুষকে ভালোবাসা। মানুষকে ভালোবাসলে পৃথিবীতে আর হানাহানি হবে না। শ্রীকৃষ্ণের বাণী প্রত্যেক ধর্মের জন্যই।

ইসলাম ধর্ম প্রসঙ্গে তিনি বলেন, ইসলাম শান্তির ধর্ম। পৃথিবী যতদিন থাকবে কোরআন অনুসরণ করে চলতে হবে। মানুষে মানুষে ভেদাভেদ দূর করতে হবে। আরব দেশ এক সময় অন্ধকারে নিমজ্জিত ছিল। এক সময় মানুষকে জীবন্ত কবর দেওয়া হত। সেই সময়েই আমাদের প্রিয় নবীজির আগমণ ঘটে। নবীজি অন্ধকার আরবে আলো নিয়ে আসে। এক লাখ ২৪ হাজার পয়গম্বরের আগমণ ঘটে পৃথিবীতে। সবাই মানুষের কল্যাণ বয়ে এনেছেন। আমাদের শেষ নবী সবার প্রিয় ছিলেন। তিনি পৃথিবীতে শান্তির বার্তা নিয়ে এসেছিলেন।

অর্থমন্ত্রী বলেন, জিহ্বা আমাদের শত্রু। আমাদের সব সময় কম কথা বলতে হবে। কটু কথা বের হলেই সমস্যা। আমাদের সবাইকে মানুষের কল্যাণে কাজ করতে হবে। মুসলিম-হিন্দু মিলে বাংলাদেশের উন্নয়ন বয়ে আনতে হবে। সব ধর্মের মেলবন্ধনে আমাদের বাংলাদেশ আরও সামনে এগিয়ে যাবে।

তিনি আরও বলেন, বাংলাদেশ ঐতিহ্যগতভাবে সাম্পদায়িক সম্প্রীতির দেশ। ১৯৭১ সালে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের আহ্বানে সাড়া দিয়ে এদেশের হিন্দু-মুসলমান, বৌদ্ধ-খ্রিস্টানসহ সব সম্প্রদায়ের জনসাধারণ ঐক্যবদ্ধ হয়ে মহান মুক্তিযুদ্ধে অংশ নিয়ে সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতির উজ্জ্বল দৃষ্টান্ত দেখিয়েছেন। স্বাধীন বাংলাদেশের সূচনা থেকেই বাংলাদেশের সংবিধানে সব ধর্মীয় সম্প্রদায়ের সমান অধিকার নিশ্চিত করা এবং ধর্মীয় কারণে কারো প্রতি বৈষম্য না করার কথা বলা হয়েছে।

‘বর্তমানে আওয়ামী লীগ সরকারের যথাযথ পদক্ষেপ গ্রহণের ফলে এদেশে প্রতিটি সম্প্রদায়ের ব্যক্তিরা সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি বজায় রেখে স্ব স্ব ধর্মীয় অনুষ্ঠান পালনসহ অত্যন্ত শান্তিপূর্ণ পরিবেশে বসবাস করছে। দেশে সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি সমুন্নত রাখতে সরকার বদ্ধপরিকর। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বাধীন সরকারের সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি রক্ষায় বিভিন্নমুখী কার্যক্রম ইতোমধ্যে দেশে-বিদেশে ব্যাপক হারে প্রশংসিত হয়েছে। পুলিশ ও অন্যান্য আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী পারস্পরিক সমন্বয়ের মাধ্যমে নিরলসভাবে কাজ করে যাচ্ছে। ’

মহানগর সার্বজনীন পূজা ক‌মি‌টির সভাপ‌তি শৈ‌লেন্দ্রনাথ মজুমদারের সভাপ‌তি‌ত্বে অনুষ্ঠা‌নে আরও উপস্থিত ছি‌লেন- বাংলা‌দেশ বেসরকা‌রি বিশ্ব‌বিদ্যালয় স‌মি‌তির চেয়ারম্যান ও বাংলা‌দেশ ইন্সু‌রেন্স অ্যা‌সো‌সি‌য়েশ‌নের সভাপ‌তি শেখ ক‌বির হো‌সেন, বাংলা‌দেশ পূজা উদযাপন প‌রিষ‌দের সভাপ‌তি মিলন কা‌ন্তি দত্ত, মহানগর সার্বজনীন পূজা ক‌মি‌টির সাধারণ সম্পাদক কি‌শোর রঞ্জন মন্ডল, সংসদ সদস্য পঙ্কজ দেবনাথ প্রমুখ।

বাংলাদেশ সময়: ২০১৫ ঘণ্টা, সেপ্টেম্বর ০১, ২০১৯
এমআইএস/এসএ

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।