ঢাকা, বৃহস্পতিবার, ১২ বৈশাখ ১৪৩১, ২৫ এপ্রিল ২০২৪, ১৫ শাওয়াল ১৪৪৫

জাতীয়

হামলার টার্গেট পুলিশ: আছাদুজ্জামান মিয়া

স্টাফ করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৯১৩ ঘণ্টা, সেপ্টেম্বর ১, ২০১৯
হামলার টার্গেট পুলিশ: আছাদুজ্জামান মিয়া নিজ কার্যালয়ে সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপ করেন ডিএমপি কমিশনার আছাদুজ্জামান মিয়া

ঢাকা: রাজধানীর সায়েন্সল্যাব মোড়ে হাতবোমা বিস্ফোরণের ঘটনায় প্রাথমিক তদন্তে পুলিশ টার্গেট ছিলো বলে জানিয়েছেন ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের (ডিএমপি) কমিশনার আছাদুজ্জামান মিয়া।

রোববার (০১ সেপ্টেম্বর) দুপুরে নিজ কার্যালয়ে সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে তিনি এ কথা জানান।

ডিএমপি কমিশনার বলেন, শনিবার (৩১ আগস্ট) আনুমানিক রাত সোয়া ৯টার দিকে সায়েন্সল্যাব মোড়ে একটি বিস্ফোরণের ঘটনা ঘটেছে।

এর পরপরই আমরা ঘটনাস্থল পরিদর্শনসহ বিভিন্ন আলামত সংগ্রহ করেছি। বিভিন্ন সাক্ষ্য প্রমাণ সংগ্রহের চেষ্টা অব্যাহত রয়েছে। আশে-পাশের সব সিসিটিভি ফুটেজ সংগ্রহ করা হয়েছে। এর বাইরে বিভিন্ন তথ্য উপাত্ত সংগ্রহ করা হচ্ছে। তাই তদন্তাধীন এ বিষয়ে এখনই চূড়ান্ত মতামত দেওয়া যাবে না।

প্রাথমিকভাবে প্রতীয়মান হয়েছে, হামলায় ব্যবহৃত বস্তুটি একটি আইইডি (ইমপ্রোভাইসড এক্সপ্লোসিভ ডিভাইস) ছিলো। কোনো সন্ত্রাসী গোষ্ঠী পুলিশকে টার্গেট করে এ বিস্ফোরণ ঘটিয়েছে।

অপর এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, প্রায় তিন মাস আগে গুলিস্তান পুলিশ বক্স লক্ষ্য করে বোমা হামলা চালানো হয়েছিলো। এরপর মালীবাগে পুলিশের গাড়িতে হামলা চালানো হয়। পল্টন-খামারবাড়িতেও পুলিশ বক্সের কাছে বিস্ফোরক পুঁতে রাখা হয়েছিলো। এ থেকে সুস্পষ্টভাবে প্রাথমিকভাবে প্রতীয়মান হয়েছে, সবগুলো হামলায় টার্গেট পুলিশ।

সন্ত্রাসী গোষ্ঠীর পুলিশের উপর ক্ষোভ থাকা স্বাভাবিক মন্তব্য করে তিনি বলেন, ২০১৫ সালে দেশজুড়ে আগুন সন্ত্রাসের মাধ্যমে তাণ্ডব চালানো হয়েছিলো। ২০১৬ সালে হলি আর্টিজানে ভয়াবহ জঙ্গি হামলার পর পুলিশ মোটাদাগে তাদের নেটওয়ার্ক দুর্বল করে দিতে সক্ষম হয়েছে। যে কারণে পুলিশের উপর ক্ষোভ থাকা স্বাভাবিক।

এসব ঘটনা সমাজে বিশৃঙ্খলা সৃষ্টি করে ধারাবাহিক উন্নয়ন বাধাগ্রস্ত করার প্রয়াস কি-না, কিংবা পুলিশের মনোবল ভেঙে দেওয়ার চক্রান্ত কি-না তদন্ত করে দেখা হবে। জনগণের মনে ভীতি সৃষ্টি করে পুলিশের মনোবল ভেঙে দেওয়ার চক্রান্ত সফল হতে দেওয়া হবে না বলেও জানান ডিএম কমিশনার।

গুলিস্তান-মালীবাগে হামলার ঘটনায় তদন্তে অগ্রগতির বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি বলেন, প্রত্যেকটি ঘটনার বিষয়েই আমাদের বিশেষজ্ঞ কর্মকর্তারা নানাভাবে খতিয়ে দেখছেন। এরইমধ্যে এসব ঘটনার তদন্তে বলার মতো অগ্রগতি আছে, তবে তদন্তের স্বার্থে কিংবা জড়িতদের গ্রেফতারের স্বার্থে এখনই বলা যাচ্ছে না।

প্রাথমিক তথ্য অনুযায়ী, গুলিস্তানের বোমাটি টাইমার সেট করা, মালীবাগেরটি রিমোট কন্ট্রোল আর পল্টন-খামারবাড়ির বোমা দুটি ছিলো পুঁতে রাখা।

সন্ত্রাসবাদের সমস্যা বৈশ্বিক মন্তব্য করে আছাদুজ্জামান মিয়া বলেন, ঘটনার পরপরই জঙ্গীগোষ্ঠী আইএস এর দায় স্বীকার কতোটা সত্য তা খতিয়ে দেখা হচ্ছে। তাদের সঙ্গে আন্তর্জাতিক কোনো সংগঠনের যোগাযোগ আদৌ আছে কি-না, নাকি অভ্যন্তরীণ ষড়যন্ত্রের অংশ হিসেবে এসব প্রচারণা, তা জানার জন্য আমরা আন্তর্জাতিক পর্যায়েও যোগাযোগ অব্যাহত রেখেছি। এসব ঘটনার সঙ্গে রাজনৈতিক ও বৈশ্বিক চক্রান্ত রয়েছে কি-না খতিয়ে দেখা হচ্ছে।

তবে এসব ঘটনায় জনসাধারণের আতঙ্কের কোনো কারণ নেই মন্তব্য করে তিনি বলেন, হোম গ্রোন জঙ্গি রয়েছে, তাদের নাম ভিন্ন হলেও বেসিক মিল রয়েছে। জঙ্গিদের নেটওয়ার্ক দুর্বল করে দিলেও হুমকি ও অপতৎপরতা অব্যাহত রয়েছে। সেসব অপতৎপরতা চিহ্নিত করতে আমরা আন্তরিকভাবে কাজ করে যাচ্ছি। অতীতের মতো এবারো আমরা সফল হবো।

অনভিপ্রেত কার্যক্রমের মাধ্যমে দেশকে অকার্যকর করতে না পারা, পাকিস্তান-আফগানিস্তান বা সিরিয়ার মতো রাষ্ট্র করতে না পারার কারণে একটি গোষ্ঠী পুলিশকে টার্গেট করতে পারে বলেও মন্তব্য করেন তিনি।

বাংলাদেশ সময়: ১৫১১ ঘণ্টা, সেপ্টেম্বর ০১, ২০১৯
পিএম/জেডএস

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।