ঢাকা, শুক্রবার, ১৫ চৈত্র ১৪৩০, ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৮ রমজান ১৪৪৫

জাতীয়

সোনা-রূপার পানি দিয়ে পরিষ্কার করা হলো মিন্নির ঘর

ডিস্ট্রিক্ট করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ০২২৩ ঘণ্টা, সেপ্টেম্বর ১, ২০১৯
সোনা-রূপার পানি দিয়ে পরিষ্কার করা হলো মিন্নির ঘর

বরগুনা: বরগুনায় রিফাত শরীফ হত্যা মামলায় জামিন পাওয়া তার স্ত্রী আয়শা সিদ্দিকা মিন্নির সঙ্গে জেলা কারাগারে দেখা করেছেন আইনজীবী মাহবুবুল বারী আসলাম। দেখা করে তাকে জামিনের বিষয়টি জানানো হয়েছে। সঙ্গে জামিনের শর্তগুলোও মিন্নিকে জানানো হয়েছে।

এদিকে আয়েশা সিদ্দিকা মিন্নি জামিনে মুক্তির পর যেন দ্রুত স্বাভাবিক হয়ে ওঠেন, সেজন্য ধুয়ে-মুছে পরিষ্কার করা হয়েছে তার ঘর। শনিবার (৩১ আগস্ট) দুপুরে সোনা-রূপা একসঙ্গে ভিজিয়ে সেই পানি দিয়ে মিন্নির ঘর পরিষ্কার করেছে তার পরিবার।

রাত সাড়ে ৮টার দিকে মিন্নির বাবা মোজাম্মেল হোসেন কিশোরের সঙ্গে কথা হলে বাংলানিউজকে একথা বলেন তিনি।

এর আগে দুপুর ১২টার দিকে মিন্নির সঙ্গে দেখা করেন তার আইনজীবী মাহবুবুল বারী আসলাম। তিনি বাংলানিউজকে জানান, উচ্চ আদালত মিন্নির জামিনের আদেশ দিয়েছেন। মিন্নি যেন হতাশাগ্রস্ত না হন, এটা আমি মিন্নিকে বুঝিয়ে বলেছি। আদালতের আদেশ অনুযায়ী কারাগার থেকে মিন্নির মুক্ত হতে আরও কয়েকটি আইনি প্রক্রিয়া ও দাপ্তরিক কাজ শেষ করতে হবে। জামিন আদেশ ডাকযোগে মঙ্গলবারের মধ্যে বরগুনা আদালতে পৌঁছাবে বলে আশা করছি। সেই আদালতে মিন্নির জামিনের জন্য মিস কেসের মাধ্যমে বন্ড দাখিল করতে হবে। আদালতে মিস কেস দাখিলের পর আইনানুগভাবে মিন্নির জামিনের আদেশ পৌঁছাবে কারাগারে। এরপর মিন্নি কারাগার থেকে মুক্তি পাবেন। তাছাড়া জামিনে মুক্ত হওয়ার পর মিন্নি যেন কোনোভাবেই গণমাধ্যমের সঙ্গে কথা না বলেন, সে বিষয়টি তাকে আমি বুঝিয়েছি।

আইনজীবী মাহবুবুল বারী আসলাম আরও বলেন, রাষ্ট্রপক্ষ যদি আপিল করেন এবং আপিলের শুনানি হতে যদি সময় লাগে তাহলে আদালত মিন্নির জামিনের আদেশ স্থগিত করতে পারেন। অথবা যদি আপিল করার সঙ্গে সঙ্গে শুনানি হয় তাহলে আদালত রাষ্ট্রপক্ষের আবেদন নামঞ্জুরও করতে পারেন। আবার মিন্নির জামিনে মুক্ত হওয়ার ক্ষেত্রে আদালত কোনো আদেশ না দিয়ে শুনানির দিন নির্ধারণ করতে পারেন। এগুলো সম্পূর্ণ আদালতের বিষয়।

বৃহস্পতিবার (২৯ আগস্ট) রিফাত শরীফ হত্যা মামলায় দুই শর্তে স্ত্রী আয়শা সিদ্দিকা মিন্নির জামিন মঞ্জুর করেন হাইকোর্ট। যে দুই শর্তে মিন্নিকে জামিন দেওয়া হয়েছে তা হলো- মিন্নি গণমাধ্যমের সঙ্গে কথা বলতে পারবেন না এবং তাকে তার বাবার জিম্মায় থাকতে হবে। জামিনে থাকা অবস্থায় মিন্নি গণমাধ্যমের সঙ্গে কথা বললে তার জামিন বাতিল হবে বলেও আদেশে উল্লেখ করেন হাইকোর্ট।

রিফাত হত্যা মামলায় এখন পর্যন্ত ১৫ জনকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। গ্রেফতার হওয়া আসামিরা হচ্ছেন- রিফাত ফরাজী, রিশান ফরাজী, চন্দন সরকার, রাব্বি আকন, হাসান, অলি, টিকটক হৃদয়, সাগর, কামরুল হাসান সাইমুন, আরিয়ান শ্রাবন, রাফিউল ইসলাম রাব্বি, তানভীর, নাজমুল হাসান, রাতুল সিকদার ও আয়শা সিদ্দিকা মিন্নি।

মামলার এজাহারভুক্ত ৫ নম্বর আসামি মুসা বন্ড, ৭ নম্বর আসামি মোহাইমিনুল ইসলাম সিফাত, ৮ নম্বর আসামি রায়হান ও ১০ নম্বর আসামি রিফাত হাওলাদারকে এখনো পুলিশ গ্রেপ্তার করতে পারেনি। প্রধান আসামি নয়ন বন্ড ২ জুলাই পুলিশের সঙ্গে ‘বন্দুকযুদ্ধে’ নিহত হয়েছে।

গত ২৬ জুন প্রকাশ্য দিবালোকে বরগুনা সরকারি কলেজ গেটের সামনে রিফাতকে কুপিয়ে আহত করা হয়। গুরুতর আহত অবস্থায় বরিশাল শেরে বাংলা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নেওয়ার পর তিনি মারা যান। এ ঘটনায় রিফাতের বাবা আবদুল হালিম দুলাল শরীফ বাদী হয়ে ১২ জনকে আসামি করে বরগুনা থানায় হত্যা মামলা দায়ের করেন।

এদিকে মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা ও বরগুনা থানার পরিদর্শক হুমায়ুন কবির বলেন, সম্পূর্ণ প্রতিবেদন তৈরি করতে না পারায় আদালতে পুলিশ প্রতিবেদন দাখিল করা সম্ভব হয়নি।

বরগুনা জেলা কারাগারের তত্ত্বাবধায়ক আনোয়ার হোসেন বাংলানিউজকে জানান, সব আইনি প্রক্রিয়া শেষ হয়ে মিন্নির জামিন আদেশ কারাগারে পৌঁছানোর সঙ্গে সঙ্গে তিনি মুক্তি পাবেন।

বাংলাদেশ সময়: ২২১৮ ঘণ্টা, আগস্ট ৩১, ২০১৯
এসএইচ

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।