বৃহস্পতিবার (২৯ আগস্ট) সন্ধ্যায় বাংলানিউজকে মোবাইল ফোনে দেওয়া এক প্রতিক্রিয়া এসব কথা বলেন রিফাত হত্যা মামলার সাক্ষী থেকে আসামি হওয়া আয়শা সিদ্দিকা মিন্নির মা মিলি আক্তার। বৃহস্পতিবার হাইকোর্ট থেকে মিন্নির জামিন পাওয়ার পর তার বাবা মোজাম্মেল হোসেন কিশোর ও মা মিলি আক্তার সন্ধ্যায় বরগুনার উদ্দেশে রওনা হয়েছেন।
মোজাম্মেল হোসেন কিশোর বলেন, রিফাত শরীফের খুনিদের বাঁচাতে আমার মেয়েকে জবাই দিয়েছে ওরা। তাই আমরা কোরবানি দিতে পারিনি। এখন আমার মেয়ে পোলাও-গোস্ত খাবে, আমি চেয়ে-চেয়ে দেখবো। আক্ষেপের সঙ্গে বাংলানিউজকে মোবাইল ফোনে এসব কথা বলেন তিনি।
মিন্নির বাবা কিশোর বলেন, জামিনের কাগজপত্র ডাকযোগে বরগুনার আদালতে পৌঁছালে মিন্নিকে আমার হাতে বুঝিয়ে দেওয়া হবে।
রিফাত হত্যা মামলায় এখন পর্যন্ত ১৫ জনকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ।
গ্রেফতার হওয়া আসামিরা হচ্ছে- রিফাত ফরাজী, রিশান ফরাজী, চন্দন সরকার, রাব্বি আকন, হাসান, অলি, টিকটক হৃদয়, সাগর, কামরুল হাসান সাইমুন, আরিয়ান শ্রাবন, রাফিউল ইসলাম রাব্বি, তানভীর, নাজমুল হাসান, রাতুল সিকদার ও আয়শা সিদ্দিকা মিন্নি।
মামলার এজাহারভুক্ত ৫ নম্বর আসামি মুসা বন্ড, ৭ নম্বর আসামি মোহাইমিনুল ইসলাম সিফাত, ৮ নম্বর আসামি রায়হান ও ১০ নম্বর আসামি রিফাত হাওলাদারকে এখনো পুলিশ গ্রেপ্তার করতে পারেনি। প্রধান আসামি নয়ন বন্ড ২ জুলাই পুলিশের সঙ্গে বন্দুকযুদ্ধে নিহত হয়েছে।
গত ২৬ জুন প্রকাশ্য দিবালোকে বরগুনা সরকারি কলেজ গেটের সামনে রিফাতকে কুপিয়ে আহত করা হয়। গুরুতর আহত অবস্থায় বরিশাল শেরে বাংলা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নেওয়ার পর তিনি মারা যান। এ ঘটনায় রিফাতের বাবা আবদুল হালিম দুলাল শরীফ বাদী হয়ে ১২ জনকে আসামি করে বরগুনা থানায় হত্যা মামলা দায়ের করেন।
নিহত রিফাত শরীফের বাবা দুলাল জানান, মিন্নির জামিন পেয়েছে, সেটা আদালতের ব্যাপার। কিন্তু রিফাত হত্যায় মিন্নির সম্পৃক্ততা শতভাগ রয়েছে। তাই পরবর্তীতে প্রমাণ অনুযায়ী আদালত আসামিদের বিচার করবে বলে আশা প্রকাশ করেন তিনি।
স্থানীয় মানবাধিকারকর্মী চিত্তরঞ্জন শীল ও হোসনেয়ারা হাসি জানান, একজন মানুষ হিসেবে আদালতে জামিন পাওয়ার আইনি অধিকার রয়েছে। তাছাড়া মিন্নি একজন কিশোরী নারী হিসেবে তার জামিনের অধিকার আরো বেশি। যেকারণে হাইকোর্ট তাকে জামিন দিয়েছেন। মিন্নি যদি অপরাধী হয়ে থাকে তাহলে কোর্ট তার বিচার করবে।
এদিকে মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা ও বরগুনা থানার পরিদর্শক মো. হুমায়ুন কবির বলেন, সম্পূর্ণ প্রতিবেদন তৈরি করতে না পারায় আদালতে পুলিশ প্রতিবেদন দাখিল করা সম্ভব হয়নি।
বাংলাদেশ সময়: ২১০৫ ঘণ্টা, আগস্ট ২৯, ২০১৯
এসএইচ