ঢাকা, শনিবার, ১৩ বৈশাখ ১৪৩১, ২৭ এপ্রিল ২০২৪, ১৭ শাওয়াল ১৪৪৫

জাতীয়

শিক্ষকের পিটুনিতে শিক্ষার্থী হাসপাতালে, তদন্ত কমিটি

স্টাফ করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৩৪২ ঘণ্টা, আগস্ট ২৯, ২০১৯
শিক্ষকের পিটুনিতে শিক্ষার্থী হাসপাতালে, তদন্ত কমিটি

লক্ষ্মীপুর: লক্ষ্মীপুরের রামগতির আলেকজান্ডার সরকারি পাইলট মডেল উচ্চ বিদ্যালয়ের সহকারী প্রধান শিক্ষকের চড়-থাপ্পড়ে ব্রেনে রক্ত জমে একই বিদ্যালয়ের ছাত্র রাকিবুল হাসান ঢাকার একটি হাসপাতালে ভর্তি রয়েছে। এই ঘটনায় তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে।

বুধবার (২৮ আগস্ট) বিকেলে এই ঘটনায় ওই শিক্ষার্থীর মা রাবেয়া বেগম রামগতি থানায় সাধারণ ডায়েরি (জিডি) করেছেন। পরে অভিযুক্ত শিক্ষক বদরুল আলমকে থানায় ডেকে জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়েছে।

এরআগে তার বিরুদ্ধে রামগতি উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা, উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান ও শিক্ষা কর্মকর্তার কাছে লিখিত অভিযোগ করা হয়।

অভিযোগের ভিত্তিতে উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তা আবুল কালাম আজাদকে প্রধান করে তিন সদস্যের একটি তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে। কমিটির প্রধান ঘটনাস্থল পরিদর্শন করে শিক্ষক-শিক্ষার্থীসহ সংশ্লিষ্টদের সঙ্গে কথা বলেছেন।  

হাসানের মা রাবেয়া বেগম বাংলানিউজকে জানান, তার ছেলের শারিরীক অবস্থায় তিনি উদ্বিগ্ন। জ্ঞান ফিরলেও সে বারবার অচেতন হয়ে পড়ছে।  

হাসান রামগতি উপজেলা পল্লী বিদ্যুৎ সমিতিতে কর্মরত মিজানুর রহমানের ছেলে। সে আলেকজান্ডার সরকারি পাইলট মডেল উচ্চ বিদ্যালয়ের অষ্টম শ্রেণির শিক্ষার্থী।

হাসানের মা রাবেয়া বেগম বাংলানিউজকে বলেন, রোববার (২৫ আগস্ট) সকালে শ্রেণিকক্ষের সামনে-পেছনে বসাকে কেন্দ্র করে সহপাঠীদের সঙ্গে কথা বলতে দেখে শিক্ষক বদরুল আলম ক্ষিপ্ত হয়ে হাসানকে চড়-থাপ্পড় দেয়। তাৎক্ষণিক সে অসুস্থতা অনুভব করে। বিষয়টি সে শিক্ষককে জানালেও তিনি কর্ণপাত না করে জোরপূর্বক হাসানকে বেঞ্চের নিচে মাথা দিয়ে কোমর উপরে উঠিয়ে রাখতে বাধ্য করেন। ওই সময় কোমর নামালে ফের তার পিঠে থাপ্পড় দেয়। এসময় হাত-পা সোজা হয়ে আসছে বলে আকুতি করে।  

এক পর্যায়ে হাসান অচেতন হয়ে পড়লে শিক্ষক আরিফসহ শিক্ষার্থীরা হাসানকে উদ্ধার করে রামগতি উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে যায়। সেখান থেকে তাকে নোয়াখালী হাসপাতালে পাঠানো হয়। পরীক্ষা-নিরীক্ষার মাধ্যমে জানা যায় হাসানের ব্রেনে রক্ত জমাট বেঁধে আছে।  

উন্নত চিকিৎসার জন্য তাকে থেকে ঢাকায় পাঠানো হয়। ঢাকার ইবনে সিনা হাসপাতালে নেওয়া হলেও তাকে ভর্তি রাখা হয়নি। পরে তাকে ধানমন্ডির পপুলার হাসপাতালে ভর্তি করে চিকিৎসা দেওয়া হচ্ছে। বুধবার দুপুরে বিদ্যালয়ে গিয়ে হাসানের সহপাঠীদের সঙ্গে কথা বলে ঘটনার সত্যতা জানা যায়।

অভিযুক্ত শিক্ষক বদরুল আলম বাংলানিউজকে বলেন, হাসানকে অচেতন হয়ে যাওয়ার মতো মারধর করা হয়নি। তবে পিঠে আস্তে করে থাপ্পড় দিয়ে বেঞ্চের নিচে মাথা রাখার বিষয়টি স্বীকার করেছেন তিনি।

রামগতি উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তা আবুল কালাম আজাদ বাংলানিউজকে বলেন, অভিযোগ পেয়ে আমি ঘটনাস্থলে গিয়েছি। এ বিষয়ে হাসানের সহপাঠী, মা ও অভিযুক্ত শিক্ষকের সঙ্গে কথা হয়েছে। বিষয়টি তদন্ত করে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।  

রামগতি উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মোহাম্মদ রফিকুল হক বাংলানিউজকে বলেন, ঘটনাটি তদন্তের জন্য শিক্ষা কর্মকর্তাকে প্রধান করে একটি তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে। অভিযুক্ত শিক্ষককে শোকজ করার নির্দেশ দেওয়া হয়। তদন্ত কমিটিকে আগামী তিনদিনের মধ্যে প্রতিবেদন জমা দিতে বলা হয়েছে।

রামগতি থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আরিচুল হক বলেন, স্কুলছাত্র হাসানের মা থানায় জিডি করেছেন। এ বিষয়ে অভিযুক্ত শিক্ষককে ডেকে জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়েছে।

বাংলাদেশ সময়: ০৯৪২ ঘণ্টা, আগস্ট ২৯, ২০১৯
এসআর/এসএ

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।

জাতীয় এর সর্বশেষ