ঢাকা, বৃহস্পতিবার, ১২ বৈশাখ ১৪৩১, ২৫ এপ্রিল ২০২৪, ১৫ শাওয়াল ১৪৪৫

জাতীয়

বঙ্গবন্ধু গ্রিক রূপকথার ফিনিক্স পাখি: অর্থমন্ত্রী

| বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ০১২৮ ঘণ্টা, আগস্ট ২৮, ২০১৯
বঙ্গবন্ধু গ্রিক রূপকথার ফিনিক্স পাখি: অর্থমন্ত্রী অনুষ্ঠানে অর্থমন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামাল, ছবি: বাংলানিউজ

ঢাকা: ‘বঙ্গবন্ধুর মৃত্যু নেই। বঙ্গবন্ধু হচ্ছেন গ্রিক রূপকথার সেই ফিনিক্স পাখির মতো। ফিনিক্স পাখিরা মরে না। বঙ্গবন্ধুও চিরজীবন আমাদের মাঝে চির ভাস্বর হয়ে থাকবেন। যতদিন পৃথিবীতে সূর্য কিরণ দেবে, যতদিন সারাবিশ্বে একজন বাঙালি থাকবেন। ততদিন আমাদের হৃদয় মাঝে বেঁচে থাকবেন বঙ্গবন্ধু।’

শোকের মাসে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধুকে এভাবে স্মরণ করেন অর্থমন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামাল। মঙ্গলবার (২৭ আগস্ট) জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ৪৪তম শাহাদত বার্ষিকী উপলক্ষে অর্থনৈতিক সম্পর্ক বিভাগ (ইআরডি) আয়োজিত আলোচনা সভা ও দোয় মাহফিলে মন্ত্রী প্রধান অতিথির বক্তব্যে এ কথা বলেন।

অর্থমন্ত্রী বলেন, একটি ফিনিক্স পাখি যখন হাজার বছরের কাছাকাছি চলে আসে, তখন সে নিজে একটা ঘর বাঁধে। ঘর বেঁধে সে তার ঘরে ঢুকে যায়। পরে নিজের ঘরে আগুন ধরিয়ে দেয়। আগুনে সে আত্মহুতি দেয়। ওখান থেকে যে ছাই-ভস্ম হয়, তা থেকে আরেকটি ফিনিক্স পাখির জন্ম হয়। এভাবে চলতে থাকে। এ জন্য বলা হয়, ফিনিক্স পাখিদের কখনও মৃত্যু হয় না।

সন্তানদের মধ্যে বঙ্গবন্ধুর চেতনা তুলে ধরার জন্য মায়েদের প্রতি আহ্বান জানিয়ে মন্ত্রী বলেন, মায়েদের বলবো আপনার সন্তানদের কাছে বেশি বেশি করে বঙ্গবন্ধুর চেতনা তুলে ধরেন। বঙ্গবন্ধু কে ছিলেন তার সারমর্ম শিশুদের কাছে তুলে ধরুন। আমেরিকার মায়েরা তাদের সন্তানদের কোলে নিয়ে বলেন, বাবা তুমি একদিন বড় হয়ে জর্জ ওয়াশিংটন হবে, দক্ষিণ আফ্রিকার মায়েরা বলেন, বাবা তুমি বড় হয়ে নেলসন ম্যান্ডেলা হবে। কিন্তু আমাদের দুর্ভাগ্য যে আমাদের মায়েরা বলতে পারেন না তুমি বড় হয়ে বঙ্গবন্ধু হবে। কারণ একটি কুচক্রী মহল আমাদের সেই জায়গাটাতে পৌঁছাতে দেয়নি। কিন্তু তারা জানে না জাতির পিতাকে কখনও জাতির কাছ থেকে দূরে রাখা যায় না। বঙ্গবন্ধুকে আমাদের কাছ থেকে দূরে সরিয়ে রাখা যাবে না।

বঙ্গবন্ধুর স্মৃতিচারণ করে মুস্তফা কামাল বলেন, আগস্ট মানে বাঙালির শোকের মাস, বেদনার মাস। বছর ঘুরে আবার এসেছে বাঙালি জাতির ইতিহাসে রক্তের অক্ষরে লেখা শোকাবহ আগস্ট। বঙ্গবন্ধুর অজেয় আদর্শ, তার মহান আত্মত্যাগ এবং তার যোগ্য উত্তরসূরির অকুতোভয় সংগ্রামের ফলে বাংলাদেশ আজ বঙ্গবন্ধুর রচিত পথ ধরেই বিশ্বসভায় মাথা তুলে দাঁড়িয়েছে। বঙ্গবন্ধু চেতনার বাতিঘর হয়ে বেচে থাকবেন, যতদিন এই পৃথিবী থাকবে। বাঙালি অনুপ্রেরণার উৎস হয়ে তিনি থাকবেন সারজীবন এ আমার বিশ্বাস। তিনি চিরঞ্জীব হয়ে আমাদের মাঝে থাকবেন সূর্যের মতো দেদীপ্যমান। বঙ্গবন্ধু সব সময় আমাদের মধ্যে নতুন। তার ধারণা ধারণ করেই আমরা বাজেট দিয়েছে। দেশকে ক্ষুধামুক্ত ও উন্নত করতে বঙ্গবন্ধুকে হৃদয় দিয়ে ধারণ করতে হবে।

মন্ত্রী বলেন, সব সময় বঙ্গবন্ধুর ভাষণ শুনি। এইমাত্র আমরা বঙ্গবন্ধু প্রদত্ত জাতিসংঘের ভাষণটি শুনলাম। সেখানে তিনি জলবায়ু পরিবর্তনের বিভিন্ন হুমকির কথা উল্লেখ করেছেন। যে জলবায়ু পরিবর্তনের হুমকির বিষয়টি বর্তমান বিশ্বের অন্যতম আলোচ্য বিষয়। যা তিনি এত বছর আগে উল্লেখ করে গিয়েছেন। তিনি ছিলেন প্রশাসনিক ও রাজনৈতিভাবে অত্যন্ত দক্ষ ও সুদূরপ্রসারী। আমার জীবনের অনেক বড় একটি প্রাপ্তি হচ্ছে আমি চারবার এই মহান নেতার সান্নিধ্য লাভের সুযোগ পেয়েছিলাম, কিছু নির্দেশনা পেয়েছিলাম। তিনি দেশ পরিচালনার জন্য স্বল্প সময়ে যে যগান্তকারী পদক্ষেপগুলো গ্রহণ করেছিলেন, তা এখনো অত্যন্ত সময়োপযোগী এবং ভবিষ্যতেও এর প্রয়োজনীয়তা ফুরাবে না। অতি অল্প দিনে আমাদের দিয়েছেন একটি সংবিধান, যেখানে সবকিছু রয়েছে। আমাদের আগামীর পরিকল্পনা, শহর গ্রামের ভেদাভেদ থাকবে না, ধনী-দরিদ্রের ভেদাভেদ থাকবে না, ‍উন্নয়ন অগ্রযাত্রায় সব শ্রেণিকে সম্পৃক্ত করতে হবে, যাদের জন্য উন্নয়ন তারা যেন বঞ্চিত না হয় তাদের সম্পৃক্ত করেই উন্নয়ন পরিচালনা করতে হবে- এই ধরনের সকল নির্দেশনা।

সভায় অর্থনৈতিক সম্পর্ক বিভাগের সচিব মনোয়ার আহমেদ বলেন, ক্ষুধামুক্ত-দারিদ্র্যমুক্ত বৈষম্যহীন সমাজ গড়তে হবে। এই লক্ষ্যে এসডিজর ভাবনা বঙ্গবন্ধুর চিন্তা থেকে এসেছিল। বঙ্গবন্ধু চিন্তা-চেতনায় সবসময় দেশের উন্নয়নের কথা বলেছেন। সোনার বাংলা গড়লেই বঙ্গবন্ধুর রক্তের ঋণ পরিশোধ করা যাবে। আগে উন্নয়ন কী দেখতে পেতাম না। কিন্তু এখন সব জায়গায় উন্নয়ন দেখতে পাচ্ছি। আমরা ২০৩০ ও ২০৪১ সালের লক্ষ্যমাত্রা বাস্তবায়ন করবো। আমাদের বিশ্বাস সরকারের ধারাবাহিক উন্নয়নে বঙ্গবন্ধুর স্বপ্ন অচীরেই সোনার বাংলা গড়তে পারবো।

অর্থনৈতিক সম্পর্ক বিভাগের অতিরিক্ত সচিব শামসুল আলমের সভাপতিত্বে এতে উপস্থিত ছিলেন- অতিরিক্ত সচিব (বিশ্বব্যাংক) জাহিদুল হক, অতিরিক্ত সচিব (আমেরিকা-জাপান) শহিদুল ইসলাম, অতিরিক্ত সচিব (জাতিসংঘ) সুলতানা আফরোজ, অতিরিক্ত সচিব (ইউরোপ) ড. গৌরাঙ্গ চন্দ্র মোহান্তসহ সব স্তরের কর্মকর্তা-কর্মচারিরা।

বাংলাদেশ সময়: ২১২৫ ঘণ্টা, আগস্ট ২৭, ২০১৯
এমআইএস/টিএ

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।