ঢাকা, শুক্রবার, ১৩ বৈশাখ ১৪৩১, ২৬ এপ্রিল ২০২৪, ১৬ শাওয়াল ১৪৪৫

জাতীয়

অপরাধ কর্মকাণ্ড বাড়ছে রোহিঙ্গা শিবিরে

সুনীল বড়ুয়া, স্টাফ করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৬২৯ ঘণ্টা, আগস্ট ২৫, ২০১৯
অপরাধ কর্মকাণ্ড বাড়ছে রোহিঙ্গা শিবিরে রোহিঙ্গা শিবির। বাংলানিউজ ফাইল ছবি

কক্সবাজার: রোহিঙ্গা শিবিরে অপরাধ কর্মকাণ্ড দিন দিন বাড়ছে। ক্যাম্পের অভ্যন্তরে মাদকের প্রসার, মানবপাচার ও হাটবাজার নিয়ন্ত্রণে রাখতে রোহিঙ্গা মধ্যে বাড়ছে অভ্যন্তরীণ বিরোধও। এছাড়াও বাড়ছে হামলা ও সংঘর্ষ, খুন, অপহরণ এবং ধর্ষণসহ নানা অপরাধও।

আইন-শৃঙ্খলা বাহিনী সূত্রে জানা যায়, গত দুই বছরে রোহিঙ্গা শিবিরে নিজেদের অভ্যন্তরীণ দ্বন্দ্বে ৪৩ জন রোহিঙ্গা নিহত হয়েছেন। আর আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীর সঙ্গে ‘বন্দুকযুদ্ধে’ মারা গেছেন আরও ৩২ রোহিঙ্গা।

এছাড়াও ডাকাতি, অপহরণ, ধর্ষণ, চুরি, মাদক ও মানবপাচারসহ রোহিঙ্গাদের বিরুদ্ধে মামলা হয়েছে ৪৭১টি। এর মধ্যে মাদক মামলা ২০৮, হত্যা মামলা ৪৩ ও নারী সংক্রান্ত মামলা ৩১টি। এসব মামলায় আসামি ১০৮৮ জন রোহিঙ্গা।  

স্থানীয়রা বলছেন, দিন দিন রোহিঙ্গারা বেপরোয়া হয়ে ওঠার পাশাপাশি তারা চুরি, ডাকাতি, হত্যাসহ বিভিন্ন অপরাধে জড়িয়ে পড়ছে। এমনকি বর্তমানে রোহিঙ্গারা স্থানীয় লোকজনের ওপর হামলাও করেছে। এসব কারণে রোহিঙ্গাদের প্রতি স্থানীয়দের উদ্বেগ বাড়ছে।

পুলিশসহ স্থানীয় একাধিক সূত্র জানায়, টেকনাফ ও উখিয়ার রোহিঙ্গা শিবিরে সাতটি করে সন্ত্রাসী বাহিনী আছে। এর মধ্যে টেকনাফের আব্দুল হাকিম বাহিনী বেশি তৎপর। এ বাহিনীর সদস্যরা মুক্তিপণ আদায়ের জন্য যখন-তখন লোকজনকে অপহরণ করে। মুক্তিপণ না পেলে হত্যাসহ মরদেহ গুম করা হয়। ইয়াবা, মানবপাচারে যুক্ত থাকার পাশাপাশি এ বাহিনীর সদস্যরা রোহিঙ্গা নারীদের তুলে নিয়ে ধর্ষণের ঘটনাও ঘটায়।

উখিয়া উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান অধ্যক্ষ হামিদুল হক চৌধুরী বাংলানিউজকে বলেন, উখিয়া-টেকনাফের ৩৩টি ক্যাম্পে আশ্রয় নিয়েছে ১১ লাখের বেশি রোহিঙ্গা। বিপুল এ জনগোষ্ঠীকে নিয়ন্ত্রণ করা অনেক কষ্টসাধ্য ব্যাপার। এদিকে, পরপর দুই বার রোহিঙ্গা প্রত্যাবাসন প্রক্রিয়া বাধাগ্রস্ত হওয়ায় স্থানীয়দের উদ্বেগ-উৎকণ্ঠা আরও বাড়ছে। এমনকি রোহিঙ্গাদের অপরাধ কর্মকাণ্ড ও সহিংস আচরণে আইন প্রয়োগকারী সংস্থাও উদ্বিগ্ন।

কক্সবাজার বাঁচাও আন্দোলনের সাধারণ সম্পাদক অ্যাডভোকেট আয়াছুর রহমান বাংলানিউজকে জানান, রোহিঙ্গারা দিন দিন বেপরোয়া হয়ে উঠছে। তারা জড়িয়ে পড়ছে নানা অপরাধে। রোহিঙ্গাদের হামলার শিকার হয়েছে স্থানীয় অধিবাসী, ব্যবসায়ী, সাংবাদিক, আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যরা। স্থানীয়রাও এখন রোহিঙ্গা আতঙ্কে ভুগছেন।

কক্সবাজার র‌্যাব-১৫ এর অধিনায়ক উইং কমান্ডার আজিম আহমেদ বাংলানিউজকে বলেন, রোহিঙ্গা ক্যাম্পে অপরাধ দমনে র‌্যাপিড অ্যাকশন ব্যাটালিয়নের (র‌্যাব) তৎপরতা জোরদার করা হয়েছে।  মাদক পাচারসহ বিভিন্ন অপরাধে জড়িত থাকার অভিযোগে বেশ কয়েকজন রোহিঙ্গাকে আটক করা হয়েছে।  

কক্সবাজারের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (প্রশাসন) ইকবাল হোসাইন বাংলানিউজকে  বলেন, প্রতিদিনই বাড়ছে রোহিঙ্গা সংশ্লিষ্ট মামলার সংখ্যা। হত্যা, চুরি মাদকসহ বিভিন্ন অপরাধে জড়িয়ে পড়ছে তারা। তবে রোহিঙ্গা ক্যাম্প পুলিশের নিয়ন্ত্রণে রয়েছে। নিয়মিত টহল ও অভিযান আরও জোরদার করেছে পুলিশ। কঠোর অবস্থান ও নজরদারিতে রয়েছে আইন-শৃঙ্খলা বাহিনী।

** রোহিঙ্গা সমস্যা দীর্ঘায়িত হওয়ায় স্থানীয়দের উদ্বেগ বাড়ছে

বাংলাদেশ সময়: ১০২৫ ঘণ্টা, আগস্ট ২৫, ২০১৯
এসবি/আরআইএস/

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।