ঢাকা, মঙ্গলবার, ৫ চৈত্র ১৪৩০, ১৯ মার্চ ২০২৪, ০৮ রমজান ১৪৪৫

জাতীয়

রোহিঙ্গা সমস্যা সমাধানে সরকার হাল ছাড়েনি: ওবায়দুল কাদের

স্পেশাল করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ০০১০ ঘণ্টা, আগস্ট ২৪, ২০১৯
রোহিঙ্গা সমস্যা সমাধানে সরকার হাল ছাড়েনি: ওবায়দুল কাদের বক্তব্য রাখছেন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক এবং সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের/ছবি- জি এম মুজিবুর

ঢাকা: রোহিঙ্গাদের ফেরত নিতে মিয়ানমারের উপর আন্তর্জাতিক চাপ বাড়ছে বলে জানিয়েছেন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক এবং সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের। তিনি বলেন, সরকার এ ব্যাপারে হাল ছাড়েনি। এ সমস্যার সমাধান হবেই।

শুক্রবার (২৩ আগস্ট) জাতীয় শোক দিবস উপলক্ষে বাংলাদেশ কৃষি অর্থনীতিবিদ সমিতি আয়োজিত আলোচনা সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্য শেষে সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের উত্তরে একথা বলেন মন্ত্রী। রাজধানীর ফার্মগেটে কৃষি গবেষণা কাউন্সিল মিলনায়তনে আলোচনা সভার আয়োজন করা হয়।

ওবায়দুল কাদের বলেন, রোহিঙ্গাদের একটি দল মিয়ানমারে ফেরত যাওয়ার কথা ছিলো। ফেরত যায়নি তাদের অনিচ্ছায়। সেখানে তাদের পরিবেশ, সম্মান, নাগরিকত্বের বিষয়। এখানে কূটনৈতিক ব্যর্থতার কোনো বিষয় নেই। পৃথিবীর ইতিহাসে শরণার্থীদের বরণ করা বাংলাদেশের মতো এমন দৃষ্টান্ত কোথাও নেই।  

রোহিঙ্গাদের ফেরত পাঠাতে কূটনৈতিক তৎপরতা চলমান রয়েছে জানিয়ে তিনি বলেন, কূটনীতি একটি চলমান বিষয়, রোহিঙ্গাদের না যাওয়া হুট করে কূটনৈতিক ব্যর্থতা বলা যায় না। আমাদের অব্যাহত প্রয়াস একটি সফলতা নিয়ে আসবে। সারা দুনিয়া যেভাবে মিয়ানমারের উপর চাপ দিচ্ছে, এই চাপ বেড়েই চলেছে। চাপ কমেনি, এটাই সফলতা। এখানে আজ যায়নি, কাল যায়নি, সবকিছু নির্ভর করছে মিয়ানমারের আন্তরিকতার উপর। আমাদের প্রয়াস অব্যাহত আছে। আমাদের আন্তরিকতার কোনো ঘাটতি নেই। অব্যাহত প্রয়াস একদিন সফলতা নিয়ে আসবে, এটা আমরা বিশ্বাস করি।  

‘এই সমস্যার সমাধান একদিন হবে, হতেই হবে। আমরা হাল ছেড়ে দেইনি, হাল ছেড়ে দেবো না। বাংলাদেশের পাশে আজ সবাই। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা জাতিসংঘ থেকে শুরু করে যে দেশেই, যে ফোরামেই গেছেন তিনি এ বিষয়টি সামনে নিয়ে এসেছেন। সবশেষ চীনে গিয়েও তিনি এ বিষয়টি বেশি গুরুত্ব দিয়েছিলেন,’ বলেন কাদের।

ওবায়দুল কাদের আরো বলেন, ১১ লাখ বিদেশির জন্য সীমান্ত খুলে দিয়ে শেখ হাসিনা এত উদারতা প্রকাশ করেছিলেন, যার প্রশংসা করেনি পৃথিবীতে এমন কোনো দেশ নেই। আমরা যদি সেদিন তাদের আশ্রয় না দিতাম তাহলে বিশ্ব সম্প্রদায় কি বলতো? আজকে ১১ লাখ মানুষের কি হতো? 

আলোচনা সভায় ওবায়দুল কাদের ১৫ আগস্ট বঙ্গবন্ধু হত্যাকাণ্ডের প্রসঙ্গে বলেন, পলাশীর প্রান্তরে সেনাপতি ইয়ার লতিফ, জগৎশেঠ ছিলেন। ১৫ আগস্টেও ইয়ার লতিফের মতো সেনাপতি জিয়াউর রহমান ছিলেন। বঙ্গবন্ধুর খুনিদের পুরস্কৃত করা, খুনিদের বিচার যাতে না হয় সেজন্য ইনডেমনিটি অধ্যাদেশ জারি করা হয়। এই অধ্যাদেশকে আইনে পরিণত করতে সংবিধান সংশোধন করেছিলেন জিয়াউর রহমান। কীভাবে এই দায় জিয়াউর রহমান উপেক্ষা করবেন। জিয়াউর রহমান ইতিহাসের ফুটনোট। এই ফুটনোট ১৫ আগস্ট বিশ্বাসঘাতকতা করেছিল। ফুটনোটকে স্বাধীনতার ঘোষক বলা নির্মম রসিকতা। ফুটনোট কখনও নায়ক হয় না। ২১ আগস্টের গ্রেনেড হামলার সময় বিএনপি ক্ষমতায় ছিলো। তারা যদি এই ঘটনার সঙ্গে জড়িত না থাকতো তাহলে এফবিআইকে কেন তদন্ত করতে দেওয়া হলো না। কেন স্কটল্যান্ড ইয়ার্ডকে আসতে বাধা দেওয়া হলো।

আলোচনা সভায় সভাপতিত্ব করেন কৃষি অর্থনীতিবিদ সমিতির সভাপতি সাজ্জাদুল হাসান। সভায় বিশেষ অতিথি হিসেবে বক্তব্য রাখেন আওয়ামী লীগের সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য ও কৃষিমন্ত্রী ড. আব্দুর রাজ্জাক, সাংগঠনিক সম্পাদক আফম বাহাউদ্দিন নাছিম ও কৃষি অর্থনীতিবিদ সমিতির মহাসচিব প্রফেসর ড. এম কারুজ্জামান।  

সভায় কৃষিমন্ত্রী বলেন, যারা স্বাধীনতার বিরোধিতা করেছে, পাকিস্তানের লেজুরবৃত্তি করেছে, ধর্মকে রাজনীতিতে ব্যবহার করেছে, তারাই বঙ্গবন্ধুকে হত্যার পর মুক্তিযুদ্ধের চেতনাকে তিলে তিলে ধ্বংস করার চেষ্টা করেছে। আজ জামায়াত যা করে বিএনপি তাই করে। একবার তারেক জিয়া ছাত্রশিবিরের সমাবেশে গিয়ে বলেছিলো ছাত্রদল ও ছাত্রশিবির একই মায়ের দুই সন্তান। এই বিএনপি ২০১৫ সালে তিন মাস অবরোধ দিয়ে ১৫০ জন মানুষকে পুড়িয়ে হত্যা করেছে। শত শত মানুষকে আহত করেছে। এই সন্ত্রাসী দল সম্পর্কে সতর্ক থাকতে হবে।

বাংলাদেশ সময়: ২০০৮ ঘণ্টা, আগস্ট ২৩, ২০১৯/আপডেট: ২১০৫ ঘণ্টা
এসকে/জেডএস

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।