ঢাকা, শুক্রবার, ১৫ চৈত্র ১৪৩০, ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৮ রমজান ১৪৪৫

জাতীয়

অল্পবয়সের প্রেমেই গেল আসমার জীবন!

ডিস্ট্রিক্ট করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ২৩৩৭ ঘণ্টা, আগস্ট ২০, ২০১৯
অল্পবয়সের প্রেমেই গেল আসমার জীবন!

পঞ্চগড়: ঢাকা কমলাপুর রেলস্টেশনে একটি পরিত্যক্ত রেলের বগি থেকে আসমা খাতুনের (১৮) মরদেহ উদ্ধারের খবরে পঞ্চগড়ে তার গ্রামের বাড়িতে শোকের মাতম চলছে। এ ঘটনার পর মঙ্গলবার (২০ আগস্ট) সকালে পঞ্চগড়-১ আসনের সংসদ সদস্য মজারুল হক প্রধান, জেলা প্রশাসক সাবিনা ইয়াসমিন ও পুলিশ সুপার মোহাম্মদ ইউসুফ আলী আসমার বাড়িতে গিয়ে সমবেদনা জানিয়েছেন।

এসময় পরিবার ও এলাকাবাসী জানায়, পাশের গ্রামের ভূট্টো তায়ারের ছেলে বাঁধনের সঙ্গে তার প্রেমের সম্পর্ক ছিল। রোববার (১৮ আগস্ট) সকাল থেকে বাঁধনও নিখোঁজ।

স্থানীয়দের ধারণা, বাঁধনই আসমাকে নিয়ে পালিয়ে যায়। অষ্টম শ্রেণিতে পড়া অবস্থায় দু’জনের মধ্যে প্রেমের সম্পর্ক গড়ে ওঠে। তারা দু’জনই একই মাদ্রাসা ও একই ক্লাসে পড়াশোনা করতো। একই তথ্য জানিয়েছে আসমার সহপাঠীরাও।

আসমা পঞ্চগড় জেলা সদরের কনপাড়া গ্রামের ভ্যানচালক আব্দুর রাজ্জাকের দ্বিতীয় মেয়ে। সে স্থানীয় খানবাহাদুর মাদরাসা থেকে এবার দাখিল পাস করেছে। এরপর পরিবারের আর্থিক অনটনে তাকে আর কলেজে ভর্তি করা হয়নি। গত সোমবার সকালে পরিবারের সদস্যরা জানতে পারে, কমলাপুর রেল স্টেশনের বলাকা কমিউটার ট্রেনের একটি পরিত্যক্ত বগি থেকে গলায় ওড়না পেঁচানো অবস্থায় তার মরদেহ উদ্ধার করা হয়। তার ব্যাগে মোবাইল নম্বর থেকে পরিচয় শনাক্ত করে পুলিশ।

আরও জানা যায়, রোববার সকালে আসমার মা-বাবা কাজের জন্য বাইরে গেলে বাবার ভোটার আইডি কার্ড, জন্ম নিবন্ধন নিয়ে নিখোঁজ হয় আসমা। একই সময়ে বাঁধনও নিখোঁজ হয় বলে জানিয়েছে তার পরিবার। তারা বিয়ে করার জন্যই পালিয়ে যায় বলে ধারণা করছে স্থানীয়রা। কমলাপুর রেল স্টেশনে তারা কোনো চক্রের হাতে পড়তে পারে অথবা বাঁধনের সঙ্গীরা আসমা খুন করতে পারে বলে সন্দেহ করছে এলাকাবাসী। বাঁধনকে আটক করলেই সবকিছু পরিষ্কার হতে পারে বলে দাবি তাদের।  

তবে বাঁধনের পরিবার আসমাকে নিয়ে পালিয়ে যাওয়ার ঘটনা সম্পূর্ণ অস্বীকার করেছে।  

নিহত আসমা খাতুনের মা শেফালি বেগম বাংলানিউজকে বলেন, রোববার সকাল থেকে আসমার কোনো খোঁজ পাইনি। সোমবার সকালে জানতে পারি, তার মরদেহ ঢাকার রেলস্টেশনে পাওয়া গেছে। আমি খোঁজ নিয়ে জেনেছি, পাশের হেলিপ্যাড এলাকার বাঁধন নামে এক ছেলের সঙ্গে তার সম্পর্ক ছিল। সম্ভবত তার সঙ্গেই সে চলে গেছে। এখন কীভাবে কী হয়েছে আমি জানি না।

নিহতের বড় চাচি জুলেখা বেগম বলেন, আমাদের পাশের হেলিপ্যাড এলাকার বাঁধন তাকে ফুঁসলিয়ে নিয়ে গেছে। তাকে নির্যাতন করে হত্যা করা হয়েছে। আমরা এর সঠিক বিচার চাই।

বাঁধনের মা বিলকিস খাতুন বাংলানিউজকে বলেন, আসমার সঙ্গে আমার ছেলের কোনো প্রেমের সম্পর্ক ছিলনা। রোববার সকালে সে আমাদের সঙ্গে ঝগড়া করে। পরে মাদ্রাসায় যাবার কথা বলে সে চলে যায়, আর আসেনি। বর্তমানে সে কোথায় আছে তাও জানি না।  

পঞ্চগড়ের পুলিশ সুপার (এসপি) মোহাম্মদ ইউসুফ আলী বাংলানিউজকে জানান, নিয়ম অনুযায়ী কমলাপুর জিআরপি থানায় মামলা হয়েছে। তারাই তদন্ত করবে। যেহেতু নিহতের বাড়ি পঞ্চগড়ে, এজন্য তদন্তের সময় আমাদের সহায়তার প্রয়োজন হতে পারে। আমরা ছায়া তদন্ত শুরু করেছি। কিছু আলামতও পাওয়া গেছে। তদন্তের স্বার্থে তা প্রকাশ করা যাচ্ছেনা।  

**ট্রেনের বগিতে মরদেহ: ধর্ষণের পর হত্যা করা হয় আসমাকে
**কমলাপুরে ট্রেনের বগিতে মিললো মাদ্রাসাছাত্রীর মরদেহ
বাংলাদেশ সময়: ১৯৩৬ ঘণ্টা, আগস্ট ২০, ২০১৯
এসএইচ

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।