ঢাকা, শনিবার, ৬ বৈশাখ ১৪৩১, ২০ এপ্রিল ২০২৪, ১০ শাওয়াল ১৪৪৫

জাতীয়

এবার মধ্যপ্রাচ্যে ইয়াবা পাচারের খবর!

স্টাফ করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ০০৩২ ঘণ্টা, আগস্ট ২০, ২০১৯
এবার মধ্যপ্রাচ্যে ইয়াবা পাচারের খবর!

ঢাকা: পার্শ্ববর্তী দেশ মিয়ানমার থেকে আসা ইয়াবায় সয়লাব গোটা দেশ। আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীর কঠোর নজরদারির মধ্যেও নিত্য নতুন কৌশলে ইয়াবা পাচার করে আসছে চোরাকারবারিরা। এর মধ্যেই এবার বাংলাদেশ হয়ে প্লেনযোগে মধ্যপ্রাচ্যে ইয়াবা পাচারের খবর জানালো র‌্যাব।

রোববার (১৮ আগস্ট) দিনগত রাতে রাজধানীর উত্তরা পশ্চিম থানার একটি আবাসিক হোটেলে অভিযান চালিয়ে আন্তর্জাতিক মাদক চোরাচালানকারি চক্রের সদস্য নাসির উদ্দিন সরকারকে (৩৫) আটক করে র‌্যাব-১।

এসময় তার কাছ থেকে আচারের দু’টি বয়ামে বিশেষ কায়দায় রাখা ২৬ হাজার ২০ পিস ইয়াবা ও একটি পাসপোর্ট জব্দ করা হয়েছে।

তাকে প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদের ভিত্তিতে দেশ থেকে প্লেনযোগে মধ্যপ্রাচ্যের বিভিন্ন দেশে ইয়াবা সরবরাহের বিষয়টি জানা গেছে।

র‌্যাপিড অ্যাকশন ব্যাটালিয়ন (র‌্যাব) জানায়, একটি আন্তর্জাতিক মাদক চোরাচালানকারি চক্র দীর্ঘদিন ধরে মধ্যপ্রাচ্যের বিভিন্ন দেশে মাদক ব্যবসা পরিচালনা করে আসছে। চক্রটি মিয়ানমার থেকে নিয়ে আসা ইয়াবা কৌশলে আকাশ পথে মধ্যপ্রাচ্যের বিভিন্ন দেশে সরবরাহ করছে। ইয়াবার একটি বড় চালান দুবাই নিয়ে যাওয়ার প্রস্ততি চলছে, এমন গোয়েন্দা তথ্যের ভিত্তিতে উত্তরার একটি আবাসিক হোটেলে অভিযান চালিয়ে বিপুল পরিমাণ ইয়াবাসহ নাসিরকে আটক করা হয়েছে।

আটক নাসিরকে প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদের ভিত্তিতে র‌্যাব-১ এর স্কোয়াড কমান্ডার (সিপিসি-১) এএসপি মো. কামরুজ্জামান বাংলানিউজকে বলেন, দুবাইয়ে অবস্থানরত কুমিল্লার বাসিন্দা সোহেল এ চক্রের মূলহোতা। বাংলাদেশে তার নিয়ন্ত্রণে এ মাদক সিন্ডিকেটে ১৫-২০ জন যুক্ত রয়েছেন। এ সিন্ডিকেটটি দেশের অভ্যন্তরেও মাদক ব্যবসার সঙ্গে যুক্ত।

তিনি জানান, আটক নাসির ২০০৮ সালে ৩ বছর মেয়াদি ভিসা নিয়ে দুবাই কাজের সন্ধানে যান। সেখানে আবুধাবির মোসাম্বা শহরে এসি তৈরির একটি প্রতিষ্ঠানের কাজ শুরু করেন। তখনই সোহেলের সঙ্গে তার পরিচয় হয়।

পরে কোম্পানিটি বন্ধ হয়ে গেলে ২০০৯ সালের শেষের দিকে নাসির দেশে ফিরে আসেন। দেশে ফিরে তিনি একটি মোবাইলের দোকান দেন। কিন্তু সেখানে লোকসান হওয়ায় বিভিন্ন সময় ড্রেজার মেশিনে চুক্তিভিত্তিক মাটি কাটার কাজ শুরু করেন। মাঝে মধ্যে মোবাইলে সোহেলের সঙ্গে কথা হতো নাসিরের। একপর্যায়ে সোহেল তাকে মোটা অঙ্কের টাকার প্রলোভন দেখিয়ে মাদক ব্যবসার কথা বললে তিনি রাজি হয়ে যান।

স্বল্প সময়ে অধিক উপার্জনের আশায় সোহেলের কথামতো তার মাদক চোরাচালানকারি সিন্ডিকেটে যুক্ত হন নাসির। এ পর্যন্ত তিনি এ সিন্ডিকেটের হয়ে ২০-২৫টি মাদকের বড় চালান দেশের বিভিন্ন স্থানে সরবারহ করেছেন।

এএসপি কামরুজ্জামান বলেন, এ চক্রের হয়ে দীর্ঘদিন বিশ্বস্ততার সঙ্গে কাজ করায় এবার সোহেল তাকে ইয়াবার চালান নিয়ে দুবাইয়ে যেতে বলেন। মোটা অঙ্কের টাকার প্রলোভনের পাশাপাশি দুবাই যাওয়ার জন্য নাসিরকে ভিসা ও টিকিট বুকিংসহ সব কাজ সোহেলের লোক করে দেন। এছাড়াও তাকে অগ্রিম ১০ হাজার টাকা দেন।

বিমানবন্দরে চেকিংয়ের সময় ধরা না পড়ার কৌশল হিসেবে একটি বিশেষ কৌশলে ইয়াবাগুলো প্রথমে কার্বন পেপারে মুড়িয়ে নেওয়া হয়। এরপর তার উপর কালো স্কচটেপ দিয়ে পেঁচিয়ে দু’টি আচার ভর্তি বয়ামের ভেতর নেওয়া হয়।

এ প্রক্রিয়ায় ওই সিন্ডিকেটের সদস্যরা অসংখ্য মাদকের চালান আকাশ পথে দেশের বাইরে নিয়ে গেছে। চক্রের অন্যান্য সদস্যদের গ্রেফতারে তৎপরতা অব্যাহত রয়েছে বলেও জানান এএসপি কামরুজ্জামান।

বাংলদেশ সময়: ২০২৮ ঘণ্টা, আগস্ট ১৯, ২০১৯
পিএম/আরবি/

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।