ঢাকা, বুধবার, ১১ বৈশাখ ১৪৩১, ২৪ এপ্রিল ২০২৪, ১৪ শাওয়াল ১৪৪৫

জাতীয়

‘একটা সুতাও বের করতে পারিনি’

| বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ০১০১ ঘণ্টা, আগস্ট ১৮, ২০১৯
‘একটা সুতাও বের করতে পারিনি’ আগুনে পুড়ে গেছে বস্তির পাঁচ শতাধিক ঘর। ছবি: বাংলানিউজ

ঢাকা: রাজধানীর ঝিলপাড় বস্তির বাসিন্দা জব্বার মিয়া (৩৫)। পেশায় রিকশাচালক। স্ত্রী-সন্তান নিয়ে সাজিয়েছিলেন সুখের সংসার। কিন্তু, শুক্রবারের (১৬ আগস্ট) আগুনে এলোমেলো করে দিল সব। পুড়ে ছাই হয়ে গেছে এতদিন তিল তিল করে জমানো সম্পদটুকু। শুধু জব্বার মিয়াই নন, সব কিছু পুড়ে ছাই হয়ে গেছে বস্তির আরও অনেকেরই। 

শুক্রবার (১৬ আগস্ট) সন্ধ্যা সাড়ে ৭টার দিকে মিরপুরের চলন্তিকা মোড় সংলগ্ন ঝিলপাড় বস্তিতে ভয়াবহ অগ্নিকাণ্ডের ঘটনা ঘটে। টানা তিন ঘণ্টা ধরে ২৪টি ইউনিটের চেষ্টায় রাত সাড়ে ১০টায় আগুন নিয়ন্ত্রণে আনে ফায়ার সার্ভিস।

তবে, পুরোপুরি নেভাতে নেভাতে বেজে যায় রাত দেড়টা। এর সঙ্গে পুড়ে যায় তিন হাজার পরিবারের স্বপ্ন।  

একই বস্তির বাসিন্দা সাবিনা আক্তার। আগুনের লেলিহান শিখা থেকে বাঁচাতে পারেননি কোনো কিছুই। সব পুড়ে ছাই। প্রাণ বাঁচাতে এক কাপড়ে ঘর থেকে বেরিয়ে যেতে হয়েছে তার মতো অসংখ্য মানুষকে।

ফায়ার সার্ভিস জানিয়েছে, আগুনে অন্তত পাঁচ থেকে ছয়শ’ ঘর পুড়ে গেছে। এতে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে প্রায় তিন হাজার পরিবার।  

রিকশাচালক মো. হাবিব কাঁদো কাঁদো কণ্ঠে বাংলানিউজকে বলেন, খাট, দু’টি ফ্যান, সেলাই মেশিন, হাড়ি-পাতিলসহ ঘরের সব পুড়ে গেছে। আমার স্ত্রী কাপড় সেলাই করতো। কাস্টমারের কাপড় ঘরে ছিল। এখন ঘরের সব জিনিসপত্র বিক্রি করলাম মাত্র দুই হাজার টাকায়।

ময়মনসিংহের ফুলবাড়িয়া থানার হাবিব বাংলানিউজকে বলেন, ৩০ বছর ধরে এ বস্তিতে আছি। শুক্রবারের (১৬ আগস্ট) আগুনে একটা সুতাও নিয়েও বের হতে পারিনি। আমার স্ত্রী তিন সন্তানকে নিয়ে এক কাপড়ে বাসা থেকে বেরিয়ে আসে।

মাল-জিনিস সরাচ্ছেন বাসিন্দারা।  ছবি: বাংলানিউজ

ঝিলপাড় বস্তির বাসিন্দা জব্বার মিয়া বাংলানিউজকে বলেন, আমার কিছু আর নেই। সব শেষ হয়ে গেছে। নিঃস্ব হয়ে গেলাম। আমার পরনে যা আছে, এখন তাই সম্বল।  

তিনি বলেন, ঈদ করতে কুমিল্লা গিয়েছিলাম‌। আগুনের খবর শুনে তাড়াতাড়ি চলে আসি। আমার ঘর ছিল দু’টি। সব পুড়ে গেছে। হাদা মালে পেয়েছি আদা দাম। তিনটি পোড়া সিলিং ফ্যান বিক্রি করে পেয়েছি আড়াইশ’ টাকা।
জব্বার মিয়া বলেন, সরকার আমাদের নাম নিয়ে গেছে। এখন সাহায্যের অপেক্ষায় আছি। সরকারি সাহায্য পেলে নতুন করে আবার সব শুরু করবো।

বাংলাদেশ সময়: ২১০৫ ঘণ্টা, আগস্ট ১৭, ২০১৯
এমএমআই/একে

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।