ঢাকা, বৃহস্পতিবার, ১২ বৈশাখ ১৪৩১, ২৫ এপ্রিল ২০২৪, ১৫ শাওয়াল ১৪৪৫

জাতীয়

দায়িত্ব পালনই বঙ্গবন্ধুর প্রতি প্রকৃত শ্রদ্ধা প্রদর্শন

সিনিয়র করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ২৩৪৩ ঘণ্টা, আগস্ট ১৫, ২০১৯
দায়িত্ব পালনই বঙ্গবন্ধুর প্রতি প্রকৃত শ্রদ্ধা প্রদর্শন শোক দিবস উপলক্ষে দুদকের আলোচনা সভা। ছবি: বাংলানিউজ

ঢাকা: সততা, নিষ্ঠা ও দক্ষতার সঙ্গে নিজ নিজ দায়িত্ব পালনের মাধ্যমে বঙ্গবন্ধুর প্রতি প্রকৃত শ্রদ্ধা প্রদর্শন করা যায় বলে মন্তব্য করেছেন দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) চেয়ারম্যান ইকবাল মাহমুদ।

বৃহস্পতিবার (১৫ আগস্ট) দুদকের প্রধান কার্যালয়ে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ৪৪তম শাহাদত বার্ষিকী ও জাতীয় শোক দিবস উপলক্ষে এক আলোচনা সভায় তিনি একথা বলেন।  

ইকবাল মাহমুদ বলেন, প্রতি বছরই জাতির পিতার মহাপ্রয়াণ দিবসে আমরা আলোচনা সভা করি, কবিতা আবৃত্তি হয়, তথ্যচিত্র দেখি, আমরা শপথগ্রহণ করি।

কেন যেন মনে হয়, কেউ কেউ সে শপথ ভঙ্গও করি। শপথ যদি ভঙ্গ না হয়, তাহলে নিজ নিজ দায়িত্ব সততা ও নিষ্ঠার সঙ্গে পালন করার কথা, সবার মানসিকতার পরিবর্তন হওয়ার কথা। তা তো অনুধাবন করা যাচ্ছে না। বলুন, আপনারা কি ঠিকভাবে দায়িত্ব পালন করছেন? এ ব্যাপারে আমার বেশ সংশয় রয়েছে। আমরা যদি কাজ না করে শুধু মিটিং নিয়ে ব্যস্ত থাকি, তাহলে এসব আনুষ্ঠানিকতা অর্থহীন।  

তিনি বলেন, জাতির পিতার স্বপ্ন বাস্তবায়ন করতে হলে সঠিকভাবে দায়িত্ব পালনের বিকল্প নেই। গত বছর যা করেছি, এবার নিজেকে জিজ্ঞাসা করুন। আত্মজিজ্ঞাসার প্রয়োজন রয়েছে। নিজেকে নিজেই আবিষ্কার করুন। নিজের মানসিকতা নিজেকেই পরিবর্তন করতে হয়।

কমিশনের কর্মকর্তাদের উদ্দেশে দুদক চেয়ারম্যান বলেন, আইন করা হয় মান্য করার জন্য। আপনারা তা কতটুকু মানেন। প্রতিটি অনুসন্ধান লোভ-লালসার ঊর্ধ্বে উঠে করেন? এর উত্তর আশা করবো ‘হ্যাঁ’, তবে সমাজের অনেকেই উত্তর দেবেন ‘না’। এটা করার জন্য আমাদের সবধরনের চাপ, যা রাজনৈতিক হতে পারে, সামাজিক হতে পারে, পেশাগতও হতে পারে- এসবের ঊর্ধ্বে থাকতে হবে। এমনটি হলেই জাতির পিতার প্রতি প্রকৃত শ্রদ্ধা প্রদর্শন করা হবে।  

তিনি বলেন, জীবনের ক্রান্তিলগ্নে এসে আমার দৃঢ় বিশ্বাস জন্মেছে, অর্থ-বিত্ত শান্তি-স্বস্তি দেয় না। বরং বিশ্বাস অনুযায়ী দায়িত্ব পালন করলে শান্তি-স্বস্তি দুটোই পাওয়া যায়।

ইকবাল মাহমুদ বলেন, আমি কমিশনের চেয়ারম্যান হিসেবে যোগদান করেই বলেছিলাম- প্রতিটি অভিযোগ নির্ধারিত সময়ের মধ্যে নিষ্পত্তি করতে হবে। তারপর অনেকেই সময়ের স্বল্পতার কথা বললেন। আমরা বিধি পরিবর্তন করে সময় বাড়িয়ে দিয়েছি। তারপরও নির্ধারিত সময়ে তদন্ত শেষ হচ্ছে না কেন? এ সময়সীমা না মানার কারণেই তদবির হয়, ঘুষখোররা ঘুষ খাওয়ার সাহস পায় ও কমিশনের ভাবমূর্তিতে নেতিবাচক প্রভাব পড়ে।  

তিনি বলেন, বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের আদর্শ বাস্তবায়নের জন্য সততা ও নিষ্ঠার সঙ্গে দায়িত্ব পালনের জন্য মানসিকতার ইতিবাচক পরিবর্তন দরকার। যাদের পরিবর্তন হয়েছে, তাদের ধন্যবাদ। যাদের হয়নি, তাদের প্রতি অনুরোধ, নিজেকে পরিবর্তন করুন।  

আলোচনা সভায় দুদক কমিশনার ড. মো. মোজাম্মেল হক খান বলেন, বঙ্গবন্ধু মাত্র ৫৫ বছর জীবনে কোটি কোটি মানুষের হৃদয়ে স্থান করে নিয়েছেন। নবাব সিরাজ-উদ-দৌলার খুনিরা যেভাবে ঘৃণিত অবস্থায় মৃত্যুবরণ করেছে, তেমনি বঙ্গবন্ধুর খুনিদেরও একই পরিণতি হয়েছে। যারা এখনো বেঁচে আছে, তারা দুর্বিষহ যন্ত্রণা নিয়ে আছে।

এসময় আরও বক্তব্য রাখেন দুদক সচিব মুহাম্মদ দিলোয়ার বখত, মহাপরিচালক এ কে এম সোহেল, পরিচালক সৈয়দ ইকবাল হোসেন, মো. আক্তার হোসেন, উপ-পরিচালক সেলিনা আক্তার, সহকারী পরিচালক শেখ গোলাম মওলা প্রমুখ।  

আলোচনা শেষে বঙ্গবন্ধুসহ ১৫ আগস্টে নিহত শহীদদের আত্মার মাগফিরাত কামনা করে বিশেষ মোনাজাত করা হয়। মোনাজাত পরিচালনা করেন দুদকের উপ-পরিচালক মো. রফিকুল ইসলাম।

বাংলাদেশ সময়: ১৯৪৫ ঘণ্টা, আগস্ট ১৫, ২০১৯
এসএমএকে/একে

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।