ঢাকা, শুক্রবার, ১২ বৈশাখ ১৪৩১, ২৬ এপ্রিল ২০২৪, ১৬ শাওয়াল ১৪৪৫

জাতীয়

‘কুড়ি বিলের পুরি’ সংগ্রামী হুনুফা

| বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ২২২৬ ঘণ্টা, আগস্ট ১৫, ২০১৯
‘কুড়ি বিলের পুরি’ সংগ্রামী হুনুফা

জামালপুর: সুস্বাদু মাছের জন্য বিখ্যাত জামালপুরের বকশীগঞ্জের কুড়ি বিল। ভারতীয় সীমান্তবর্তী বাট্টাজোড় ইউনিয়নের পলাশতলা গ্রামের দক্ষিণে অবস্থান এ বিলের। নামকরণ হয়েছে শাপলা ফুলের কুড়ি থেকে। আগের সেই নানা রংয়ের শাপলা নেই, তবু থেকে গেছে নাম। সেই কুড়ি বিলের একমাত্র পুরি (মেয়ে) হুনুফা। অভাবের তাড়নায় হাতে তুলে নিয়েছেন নৌকার বৈঠা। 

বর্ষাকালে প্রায় চার মাস পানিতে টইটম্বুর থাকে কুড়ি বিল। সেখানে মানুষের পারাপারের একমাত্র ভরসা হুনুফার ছোট নৌকাটি।

বর্ষার শেষে মানুষের বাড়িতে ঝি হিসেবে, আবার কখনো পুরুষের সঙ্গে দিনমজুরেরও কাজও করতে হয়।

জানা যায়, ২৭ বছর আগে হুনুফার স্বামী দিনমজুর হাছেন আলী দুনিয়া থেকে বিদায় নিয়েছেন। এখন এক ছেলে আর চার মেয়েকে নিয়েই তার সংসার। এক মেয়ে প্রতিবন্ধী। স্বামী মারা যাওয়ার সময় ছেলের বয়স ছিল মাত্র ছয় মাস। সেই থেকে কুড়ি বিলে মাছ ধরে, নৌকা বেয়ে চলেছেন হুনুফা।

দাম কম বলে কুড়ি বিলের ঠিক মধ্যখানে কিনেছেন এক টুকরো জমি। থাকেনও সেখানেই। তবে, বয়স বাড়ার কারণে এখন আর আগের মতো পরিশ্রম করতে পারেন না পঞ্চাশোর্ধ হুনুফা। পলে, বর্ষাকাল ছাড়া বছরের আট মাসই অনাহারে-অর্ধাহারে দিন কাটে তার। এমনও রাত যায় যখন এক গ্লাস পানিই হয়ে ওঠে একমাত্র খাবার।

দারিদ্র্য আর বয়সের ভারে কাতর এ নারীর কপালে এখনো জোটেনি কোনো সরকারি সাহায্য। নিজে বিধবা ও মেয়ে প্রতিবন্ধী হলেও সে ভাতাও পাননি তিনি। দীর্ঘদিন ধরে স্থানীয় ইউপি সদস্য ও চেয়ারম্যানের দ্বারে দ্বারে ঘুরেও মেলেনি কোনো সরকারি ভাতা।

মুখ ভার করে সংগ্রামী নারী হুনুফা বাংলানিউজকে বলেন, কত রাত না খেয়ে থাকি, সেটা আর কীভাবে বলবো? মেম্বারদের কাছে গেলে টাকা চায়। আমি টাকা জোগাড়ও করতে পারি না, কপালে সরকারি কার্ডও জোটে না।

বাংলাদেশ সময়: ১৮২৫ ঘণ্টা, আগস্ট ১৫, ২০১৯
একে

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।