ঢাকা, বুধবার, ১০ বৈশাখ ১৪৩১, ২৪ এপ্রিল ২০২৪, ১৪ শাওয়াল ১৪৪৫

জাতীয়

নির্ধারিত স্থানে পশু কোরবানিতে সাড়া নেই

এম আব্দুল্লাহ আল মামুন খান, সিনিয়র করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৬২৭ ঘণ্টা, আগস্ট ১২, ২০১৯
নির্ধারিত স্থানে পশু কোরবানিতে সাড়া নেই

ময়মনসিংহ: দূষণ প্রতিরোধ ও বর্জ্য ব্যবস্থাপনায় শৃঙ্খলা আনতে নির্ধারিত স্থানে পশু কোরবানির আহ্বান জানিয়েছিল ময়মনসিংহ সিটি করপোরেশন (মসিক)। এজন্য প্রায় সাড়ে ৩শ’ পয়েন্ট নির্ধারণ করা হয়েছিল। টানা কয়েক দিন মাইকিং থেকে শুরু করে প্রচারপত্র বিলি, মতবিনিময় সভা ও সচেতনতা বাড়াতে সব কর্মযজ্ঞই সম্পন্ন করেছিল। 

কিন্তু কে শোনে কার কথা! হাতেগোনা কোরবানি দাতার বাইরে রাস্তায়, অলিগলিতে যত্রতত্র পশু কোরবানি হচ্ছে। প্রত্যেকেই পশু কোরবানির জন্য নিজের বাসার সামনের সড়ক বা ফাঁকা স্থানকেই বেছে নিচ্ছেন।

এ নিয়ে রীতিমতো অসন্তুষ্ট সিটি করপোরেশনের স্বাস্থ্য বিভাগ।  

তবে কোরবানিদাতাদের হুঁশ না ফিরলেও হাত গুটিয়ে বসে নেই স্বাস্থ্য বিভাগ। গত চার বছরের মতো এবারও দ্রুত সময়ের মধ্যেই কোরবানির বর্জ্য অপসারণ করে দৃষ্টান্ত স্থাপনের সুনাম ধরে রাখতে চায় তারা। ঈদের পরের দিনও কোরবানি হতে পারে এ বিষয়টি মাথায় রেখেই ৪৮ ঘণ্টার মধ্যে বর্জ্য অপসারণ করে পরিচ্ছন্ন ময়মনসিংহ উপহার দিতে স্বাস্থ্য বিভাগকে আগেই সময়সীমা বেঁধে দিয়েছিলেন সিটি করপোরেশনের মেয়র ইকরামুল হক টিটু।  

তার কঠোর নির্দেশনায় ঈদের দিন সকাল ১১টা থেকে মাঠে সক্রিয় রয়েছেন সিটি করপোরেশনের প্রায় ৫৫০ জন পরিচ্ছন্নতাকর্মী। প্রস্তুত রয়েছে ১৮টি ট্রাক ও ২০টি পাওয়ার ট্রলি। নগরের ৩৩টি ওয়ার্ড ঘুরে দুপুরের পর থেকেই অ্যাকশন শুরু করবেন। উৎকট দুর্গন্ধ কমাতে ব্যবহার করা হবে ফিনাইল ও ব্লিচিং পাউডার।  

সোমবার (১২ আগস্ট) সকাল সাড়ে ৯টা থেকে ১১টা পর্যন্ত নগরের কাশর, জামতলা, সানকিপাড়া, সানকিপাড়া শেষ মোড়, গোহাইলকান্দিসহ একাধিক এলাকা ঘুরে এমন চিত্রের দেখা মিলেছে।  

মসিক সূত্র জানায়, বর্জ্য অপসারণ ও পরিবেশ বিপর্যয় ঠেকাতে ২০১৬ সাল থেকে পশু জবাইয়ের জন্য এলাকাভিত্তিক স্থান নির্ধারণ করা হয়। মসিকের পুরাতন ২১টি ওয়ার্ডে ১৯১টি স্পট ও নতুন ১২টি ওয়ার্ডে ১৫৯টি স্পট বাছাই করা হয়।  

প্রায় সপ্তাহখানেক নগরের বিভিন্ন ওয়ার্ডে ওয়ার্ডে মাইকিং করে সিটি করপোরেশনের বাছাই করা নির্ধারিত স্থানে পশু জবাইয়ের জন্য আহ্বান জানানো হয়। স্বভাবতই ধরে নিয়েছিলেন, সচেতন নগরবাসীর একটি বড় অংশই অন্তত এবার নির্ধারিত স্থানেই কোরবানি করবেন। স্বতঃস্ফূর্তভাবেই তারা সাড়া দেবেন আহ্বানে।  

কিন্তু সরেজমিনে ঘুরে দেখা গেছে, মাংস পরিবহনে যান সঙ্কটকেই দায়ী করে নগরবাসীর অনেকেই নির্ধারিত স্থানে পশু কোরবানিতে আগ্রহ দেখাননি। তাদের এমন খামখেয়ালিপনায় পশুর বর্জ্য ও রক্তে ঢেকে গেছে নগরের অলিগলির অনেক সড়কপথ।  

এর বাইরে আবার ইতিবাচক চিত্রও রয়েছে। সেই চিত্রের কথা জানালেন মসিকের স্যানেটারি ইন্সপেক্টর দীপক মজুমদার।  

নগরের স্টেশন রোড এলাকার মুকুল নিকেতন উচ্চ বিদ্যালয়ের চিত্র তুলে ধরে বাংলানিউজকে তিনি বলেন, এ স্কুল মাঠে বেশ কিছু গরু কোরবানি হয়েছে। এখানকার বাসিন্দারা অনেক সচেতন। আবার নিজ আঙিনায় করতে গিয়ে অনেকেই রাস্তায় কোরবানি করছেন। এ সচেতনতা বাড়তে আরও সময় প্রয়োজন।

দেখা গেছে, মসিক প্রায় সাড়ে ৩শ’ নির্ধারিত স্থান ঠিক করে দিলেও আদতে নগরের ৩৩টি ওয়ার্ডের কমপক্ষে ৬ শতাধিক স্পটে পশু কোরবানি হচ্ছে। নগরের কাশর সড়কে প্রায় আধা কিলোমিটারজুড়ে উৎসবের আমেজে পশু কোরবানি হচ্ছে। সব বয়সী মানুষ সেখানে জড়ো হয়েছেন।  

এ সড়কেই কথা হয় রুবেল আহমেদ (৩০) নামে এক যুবকের সঙ্গে। তিনি জানান, এমনিতেই গরু কোরবানির পর আনুষাঙ্গিক আরও অনেক কাজ রয়েছে। তাই সবাই নিজের বাসার কাছাকাছিই কোরবানি করতে চান। নির্ধারিত স্থানে কোরবানি করতে গেলে যানবাহন সঙ্কট রয়েছে। এতে করে মাংস আনা-নেওয়াও কষ্টসাধ্য।  

দীপক মজুমদার বলেন, ১৮টি ট্রাক ও ২০টি পাওয়ার ট্রিলার নিয়ে আমাদের সাড়ে ৫শ’ পরিচ্ছন্নতাকর্মী তৎপর রয়েছেন। মেয়রের নির্দেশনা মোতাবেক অতীতের মতোই আমরা ৪৮ ঘণ্টার মধ্যে পরিচ্ছন্ন ময়মনসিংহ উপহার দেবো।  

বাংলাদেশ সময়: ১২১৩ ঘণ্টা, আগস্ট ১২, ২০১৯
এমএএএম/আরবি/

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।