ঢাকা, শুক্রবার, ১৫ চৈত্র ১৪৩০, ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৮ রমজান ১৪৪৫

জাতীয়

মাঝারি গড়নের গরুতেই নজর বেশি ক্রেতাদের

মুশফিক সৌরভ, স্টাফ করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১২৪৯ ঘণ্টা, আগস্ট ১০, ২০১৯
মাঝারি গড়নের গরুতেই নজর বেশি ক্রেতাদের

ব‌রিশাল: ঈদ এগিয়ে আসতেই জমতে শুরু করেছে কোরবানির পশুর হাট।এরই মধ্যে পশুর হাটগুলোতে বিগত কয়েকদিনের চেয়ে ক্রেতা সমাগমও বেড়েছে কয়েকগুণ। পশু ক্রেতা-বিক্রেতাদের উপস্থিতিতে অনেকটাই জমজমাট অবস্থা হাটে। 

পাশাপাশি গত কয়েকদিনে বরিশালের কোনো হাটেই তেমন কোনো বেচা-বিক্রি না হলেও, শুক্রবার সকাল থেকে দামে বনলেই ক্রেতারা পছন্দের পশুটি কিনে নিচ্ছেন। বাজার পর্যালোচনায় জানা যায়, বড় ও ছোট গরুর থেকে মাঝারি গড়ন বা আকারের গরুর দিকেই নজর বেশি ক্রেতাদের।

আবার খামারির পাশাপাশি গৃহস্থালির গরুতেও আগ্রহ রয়েছে এক শ্রেণির ক্রেতার।

যদিও অনেক ক্রেতা দাম কমার আশায় আরও কিছুটা সময় অপেক্ষা করতে চান বলে জানিয়েছেন, তবে বিক্রেতারা বলছেন আকার-আকৃতি অনুযায়ী গরু বা ছাগল কোনোটারই দর বেশি চাওয়া হচ্ছে না।

বরিশাল সদর উপজেলার চরমোনাইয়ে মাদ্রাসা বাজার গরুর হাটটি স্থানীয়ভাবে সবচেয়ে বড় বলেই দাবি করা হয়। যেখানে সকালে তেমন একটা ক্রেতার দেখা না মিললে দুপুর গড়িয়ে বিকেল হতে না হতে ক্রেতাদের সমাগম ঘটে। গরু কিনতে হাটে ক্রেতারা।  ছবি: বাংলানিউজএ হাটে গরু নিয়ে আসা প্রোমোজেন অ্যাগ্রোর আব্দুল হাই জানান, তাদের খামারে প্রাকৃতিকভাবে গরু মোটাতাজাকরণ ও পালন করা হয়। আর সেই খামার থেকেই ১৫টি গরু এ হাটে নিয়ে আসা হয়েছে। ১৫টি গরুর মধ্যে বড়টির দাম সাড়ে তিন লাখ চাচ্ছেন। অনেকে বিভিন্ন দর বলছেন তবে সোয়া তিন লাখ হলে গরুটি ক্রেতার হাতে তুলে দিতে পারেন বলে ইঙ্গিত দেন তিনি।

এখানও মানুষ গরু দেখছে, এ হাট থেকে ও হাটে যাচ্ছে আর যাদের পছন্দ অনুযায়ী দামের মধ্যে গরু মিলছে তারাই শুধু কিনে ফেলছেন। কুষ্টিয়া থেকে এ হাটে গরু নিয়ে আসা আব্দুর রহমান জানান, তিনি চারটি গরু বড় সাইজের গরু নিয়ে এসেছেন, যার মধ্যে তিন লাখ টাকা দর চাওয়া গরুটিই সবচেয়ে বড়।  

তবে বাজারে মাঝারি ধরনের গরুর চাহিদা বেশি বলে জানিয়ে কুষ্টিয়ার অপর গরু ব্যবসায়ী মাসুম জানান, তিনি ৩১টি গরু নিয়ে এসেছেন বরিশালে। যার মধ্যে সাতটি গরু বিক্রি হয়ে গেছে। এখন যা আছে তার মধ্যে সর্বোচ্চ ৩ লাখ টাকা দর চেয়েছেন একটি গরুর। আর সর্বনিম্ন ৮৫ হাজার টাকা দাম ছোট গরুটির। বাকিগুলো এর মাঝামাঝি দরে রয়েছে।  

এদিকে সদর উপজেলার বুখাইনগরে নিজের হাতে পালা (গৃহস্থালি) গরু নিয়ে হাটে এসেছেন ছত্তার মিয়া। তিনি বলেন, খামারির গরুর চেয়ে আমার গরু দেখতে যেমন একটু ছোট-খাটো, তেমনি দামও কম। কারণ এতে কোনো ভেজালের বালাই নেই। তার সঙ্গে নিয়ে আসা গরুটির দাম চাচ্ছেন ৩৫ হাজার টাকা। কিন্তু ক্রেতারা এ অব্দি ২২ হাজার টাকা পর্যন্ত দাম বলেছেন। তবে বরিশাল সদর উপজেলার এ হাটসহ চরবাড়িয়া ইউনিয়নের কাগাসুরা হাট, নগরের থানা কাউন্সিল, বাঘিয়া, রুপাতলী এলাকার হাটগুলোতেও প্রচুর গরুর আমদানি ঘটেছে। যেসব হাটে খামারি ও গৃহস্থালির গরুর দেখা মিললেও ভারতীয় কোনো গরু থাকার বিষয়ে অভিযোগ তোলেননি কেউ।  বিক্রির জন্য হাটে তোলা গরু।  ছবি: বাংলানিউজনগরের থানা কাউন্সিল সংলগ্ন এলাকার হাট পরিচালনার দায়িত্বরতরা বলেন, ‍তাদের হাটে দেশে পালন করা বিভিন্ন জাতের গরু রয়েছে। ক্রেতাদের চাহিদা অনুযায়ী বিক্রেতারা পশু আমদানি করেছেন। তবে মাঝারি আকারের গরুর চাহিদা বেশি থাকায় হাটে সে গরুর সংখ্যাই বেশি। আর হাটের নিরাপত্তা ব্যবস্থাও করছেন ক্রেতা-বিক্রেতাদের চাহিদা অনুযায়ী।  

বরিশাল নগরের বাসিন্দা ও ক্রেতা মো. হারুন বলেন, গতবছরের চেয়ে গরুর দাম সব হাটেই একটু বেশি। নির্দিষ্ট বাজেট রয়েছে, চেষ্টা করছি তার মধ্যেই পছন্দের একটি গরু কিনতে।  

জাহাঙ্গীর গাজী নামে অপর এক ক্রেতা বলেন, কোরবানি বলে কথা, তাই বেশি দামাদামি করতে মন চাচ্ছে না। তারপরও বাজার তো ঘুরে দেখতে হবে।

কিন্তু বিক্রেতারা বলছেন, যে দাম চাওয়া হচ্ছে তাও বেশি নয়। একটি গরুর লালন-পালনে আর হাট পর্যন্ত আনতে যা খরচ হয়, তা মিটিয়ে সামান্য কিছুটা লাভ ধরেই গরুর দাম চাওয়া হচ্ছে।

যদিও গতবারের থেকে এবারে এখন পর্যন্ত পশুর চাহিদা কম বলেই মনে হচ্ছে বলে জানিয়েছেন চরমোনাইয়ে মাদ্রাসা বাজার গরুর হাটের পরিচালনার দায়িত্বে থাকা সৈয়দ মাসুম।  

এদিকে হাটগুলোতে ছাগলের আমদানিও ঘটেছে। বিভিন্ন ঘাট ঘুরে দেখা যায় আকার-আকৃতি অনুযায়ী সর্বনিম্ন ৭ থেকে ৫০ হাজার টাকা পর্যন্ত ছাগলের দাম হাঁকছেন বিক্রেতারা।

বাংলা‌দেশ সময়: ০৮৪৫ ঘণ্টা, আগস্ট ১০, ২০১৯
এমএস/এএ

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।