ঢাকা, বৃহস্পতিবার, ১৪ চৈত্র ১৪৩০, ২৮ মার্চ ২০২৪, ১৭ রমজান ১৪৪৫

জাতীয়

‘দেখা হবে অন্য কোথাও, অন্য কোনো পোশাকে’

স্টাফ করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ২৩০০ ঘণ্টা, আগস্ট ৮, ২০১৯
‘দেখা হবে অন্য কোথাও, অন্য কোনো পোশাকে’

ঢাকা: পুলিশে দীর্ঘ ৩২ বছর কর্মজীবনের ইতি টানতে চলেছেন ঢাকা মহানগর পুলিশের (ডিএমপি) কমিশনার মো. আছাদুজ্জামান মিয়া। শেষ কর্মদিবসে এসে আলাপকালে নিজের প্রিয় পোশাকটি আর কখনই গায়ে না জড়ানোর আক্ষেপ লুকিয়ে রাখতে পারেননি।

তিনি বলেছেন, দীর্ঘ এ কর্মজীবনে সফলতা-ব্যর্থতা থাকলেও চেষ্টার কোনো কমতি ছিল না।  পুলিশের চাকরি শেষ হলেও সুযোগ পেলে ভবিষ্যতে মানুষের জন্য কাজ করে যাওয়ার প্রত্যয় ব্যক্ত করেছেন আছাদুজ্জামান মিয়া।

 
 
বৃহস্পতিবার (৮ আগস্ট) ডিএমপি মিডিয়া সেন্টারে সাংবাদিকদের সঙ্গে মতবিনিময়কালে তিনি এসব কথা বলেন।
 
ডিএমপি কমিশনার বলেন, জনবান্ধব পুলিশিংয়ের স্বপ্ন নিয়েই ৩২ বছর কাজ করে গেছি। সারাজীবন মানুষের আস্থা অর্জনের চেষ্টা করে গেছি। যেকোনো পরিস্থিতিতে মানুষের কাছে যাওয়ার চেষ্টা করেছি। সবকিছুর মধ্যে সফলতা-ব্যর্থতা রয়েছে, তবে চেষ্টার কোনো কমতি ছিল না। হয়রানি বন্ধ করে সবসময় জনসেবা করার চেষ্টা করেছি।
 
তিনি বলেন, ডিএমপিতে পুলিশ কমিশনার হিসেবে ১ হাজার ৬৮০ দিন দায়িত্ব পালন করেছি। ডিএমপিতে কমিশনার হিসেবে এটিই দায়িত্ব পালনের সর্বোচ্চ সময়কাল। আজই আমার পুলিশের সর্বশেষ কর্মদিবস। আগামী দিনে এভাবে এই পোশাকে আর দেখা হবে না। হয়তো অন্য কোথাও অন্য কোনো পোশাকে দেখা হবে।
 
‘দীর্ঘ এই কর্মজীবনে অনেক শ্রম দিয়েছি। দায়িত্বে থাকা অবস্থায় আমি আমার পরিবার বন্ধু বান্ধবসহ কাউকেই কোনো সময় দিতে পারিনি। ১০ মিনিটের জন্য কারো সঙ্গে কোনো আড্ডাও দিতে পারিনি। তবে সান্ত্বনা এতটুকুই- সুস্থ্য থেকে সবার ভালোবাসা নিয়ে বিদায় নিচ্ছি। সুযোগ থাকলে ভবিষ্যতেও মানুষের জন্য কাজ করার চেষ্টা করব। সবচেয়ে বেশি মিস করবো আমার এই পবিত্র পোশাকটিকে। ’
 
ডিএমপিতে সাড়ে চার বছরের বেশি দায়িত্ব পালনের সময় সহযোগিতার জন্য সবার প্রতি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করে আছাদুজ্জামান মিয়া বলেন, আইনের শাসন প্রতিষ্ঠায় কাজ করে গেছি। ঢাকাবাসীসহ আমার সব কর্মস্থল এলাকার বাসিন্দা, সহকর্মী, গণমাধ্যমকর্মীদের প্রতি আমি কৃতজ্ঞ। আপনাদের কথা আমি সারাজীবন মনে রাখবো।
 
পুলিশ সদস্যদের উদ্দেশ্যে তিনি বলেন, আপনাদের উপলব্দি করতে হবে আপনারা জনগণের বন্ধু। জনগণের ট্যাক্সের টাকায় আপনারা বেতন পান। ক্ষমতার দম্ভ নয়, লাঠি ঘুরিয়ে নয়। সেবা দিয়ে জনগণের আস্থার প্রতীক হওয়ার চেষ্টা করুন। থানাগুলো যেন হয়, মানুষের নির্ভরতার প্রতীক।
 
ঢাকা মহনগরীর আইন-শৃঙ্খলা পরিস্থিতি বর্তমানে স্মরণকালের সবচেয়ে নিয়ন্ত্রণে মন্তব্য করে ডিএমপি কমিশনার বলেন, আমাদের সব উদ্যোগ শতভাগ সফল না হলেও সবক্ষেত্রে ইতিবাচক পরিবর্তন এসেছে। ডিএমপিতে ৩৪ হাজার সদস্য রয়েছেন। এর মধ্যে ৩৭২ জন বিসিএস অফিসার। সবাইকে এক সুতোয় বেঁধে একটা ছাতার নিচে এনে টিম ডিএমপি হিসেবে প্রতিষ্ঠিত করতে পেরেছি। এ সফলতার পেছনে এই টিম ডিএমপির স্পিরিট।
 
ডিএমপির নাগরিকসহ সবার উদ্দেশ্যে তিনি বলেন, আসুন সবাই আইন মানি এবং অন্যকে আইন মানতে উদ্বুদ্ধ করি। সবাই মিলে আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীকে সহায়তা করলে সারাদেশে শান্তিপূর্ণ পরিবেশ বজায় থাকবে।
 
বাংলাদেশ সময়: ১৮৫৪ ঘণ্টা, আগস্ট ০৮, ২০১৯
পিএম/এমএ

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।