ঢাকা, মঙ্গলবার, ৩ বৈশাখ ১৪৩১, ১৬ এপ্রিল ২০২৪, ০৬ শাওয়াল ১৪৪৫

জাতীয়

মাকে কথা রাখতে দেয়নি ‘ডেঙ্গু’

ডিস্ট্রিক্ট করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ২১০৭ ঘণ্টা, আগস্ট ৬, ২০১৯
মাকে কথা রাখতে দেয়নি ‘ডেঙ্গু’ মায়ের ছবি হাতে দিয়া, কোলে দিঘী। ছবি: বাংলানিউজ

মাগুরা: মেয়েদের কথা দিয়েছিলেন মা, ফিরে আসবেন। কিন্তু, সে কথা রাখা হলো না। রাখতে দিল না ডেঙ্গু। গত রোববার (৪ আগস্ট) পৃথিবীর মায়া কাটিয়ে পরপারে পাড়ি জমিয়েছেন জয়া সাহা। যাওয়ার সময় রেখে গেছেন ১৪ মাস ও ১২ বছরের দুই মেয়েকে। তারা এখনো অপেক্ষায়, মা কথা দিয়েছে, ঠিকই ফিরে আসবে।

মৃতের স্বজনরা জানান, গত সপ্তাহে শ্বশুরবাড়ি পুঠিয়া গ্রামে জ্বরে আক্রান্ত হন জয়া সাহা। এটিকে তারা স্বাভাবিক জ্বর মনে করলেও শনিবার (৩ আগস্ট) সকালে তার অবস্থার অবনতি হলে ফরিদপুর নেওয়া হয়।

সেখানে তার শারীরিক অবস্থার আরও অবনতি হলে উন্নত চিকিৎসার জন্য ওই দিন বিকেলেই ঢাকার একটি প্রাইভেট ক্লিনিকে নিয়ে যাওয়া হয়। সেখানে চিকিৎসাধীন অবস্থায় রোববার (৪ আগস্ট) ভোরে মারা যান তিনি।

মৃতের স্বামী চঞ্চল সাহা বাংলানিউজকে বলেন, ডেঙ্গু আক্রান্ত হয়ে আমার স্ত্রী মারা গেছে। এখন মেয়ে দু’টি কীভাবে থাকবে? তাদের কীভাবে মানুষ করবো?

সরেজমিনে দেখা যায়, ছোটবোন দিঘীকে কোলে নিয়ে ঘরের দুয়ারে বসে আছে দিয়া। মুখে বিষাদের ছায়া।

সে বাংলানিউজকে বলে, মা বলেছিল, আমি ফরিদপুর যাচ্ছি চিকিৎসা নিতি। কয়দিনের মধ্যে বাড়ি ফিরে আসবো। তুমি তোমার বুনুর দিকে খেয়াল রেখো। আমি সুস্থ হয়ে ফিরে আসবো। আমার জন্য চিন্তা করো না।

কান্নজড়িত কণ্ঠে দিয়া বলে, মা বাড়ি ফিরে এলো ঠিকই, কিন্তু আমাকে আর মনি বলে ডাকলো না। ডেঙ্গু তাকে কথা রাখতে দিল না।

ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা আবু সুফিয়ান বাংলানিউজকে বলেন, গ্রামবাসীকে ডেঙ্গু বিষয়ে সচেতন করার কাজ করছি। আমরা উপজেলার প্রশাসনের পক্ষ থেকে ফগার মেশিন দিয়ে মশক নিধন অভিযান চালাচ্ছি। স্বাস্থ্য বিভাগের কর্মকর্তারা সবসময় কাজ করছেন।

মাগুরার সিভিল সার্জন প্রদীপ কুমার সাহা বাংলানিউজকে বলেন, মাগুরা থেকে ডেঙ্গু আক্রান্ত হয়ে ঢাকায় চিকিৎসাধীন অবস্থায় এক গৃহবধূর মৃত্যু হয়েছে। তবে, ওই রোগী এখানকার কোনো হাসপাতাল বা ক্লিনিকে চিকিৎসা নেননি।
 
তিনি বলেন, মাগুরা ২৫০ শয্যা হাসপাতাল ও মহম্মদপুর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে এ পর্যন্ত ৩৫ জন ডেঙ্গু আক্রান্ত রোগী ভর্তি হয়েছেন। এর মধ্যে ২৫০ শয্যা হাসপাতলে ২৪ জন ও মহম্মদপুর হাসপাতলে ৮ জন।  

বাংলাদেশ সময়: ১৭০৩ ঘণ্টা, আগস্ট ০৬, ২০১৯
একে

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।