ঢাকা, বৃহস্পতিবার, ১৪ চৈত্র ১৪৩০, ২৮ মার্চ ২০২৪, ১৭ রমজান ১৪৪৫

জাতীয়

হাওর অঞ্চলের জীবন-জীবিকা: সরকারি পরিষেবার ভূমিকা 

ডিস্ট্রিক্ট করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ২১৫৭ ঘণ্টা, আগস্ট ৩, ২০১৯
হাওর অঞ্চলের জীবন-জীবিকা: সরকারি পরিষেবার ভূমিকা  সংলাপের আলোচকরা। ছবি: বাংলানিউজ

সুনামগঞ্জ: ‘হাওর অঞ্চলের জীবনমান উন্নয়নে সরকারি পরিষেবার ভূমিকা’ শীর্ষক সংলাপ অনুষ্ঠিত হয়েছে সুনামগঞ্জে।

শনিবার (৩ আগস্ট) সকাল ১১টার দিকে শহরের পুরাতন বাসস্ট্যান্ড এলাকায় একটি রেস্টুরেন্টে এ সংলাপ অনুষ্ঠিত হয়।

হাওরের মানুষদের জীবনমান কীভাবে উন্নত করা যায় তা নিয়ে স্থানীয় পেশাজীবী, সাংবাদিক, হাওর পাড়ে সববাসকারী ব্যক্তিবর্গ তাদের মতামত তুলে ধরেন।

এ সময় তারা বলেন, হাওর অঞ্চলের মানুষের জীবনমান উন্নয়ন ও টেকসই জীবিকা নিশ্চিতকরণে সেবার মান বৃদ্ধিতে সরকারের আরও কার্যকর ভূমিকা গ্রহণ জরুরি। হাওর অঞ্চলের কর্মসংস্থানের সুযোগ বৃদ্ধিতে কৃষি ব্যাংকসহ বিভিন্ন তফসিলি ব্যাংকের ঋণ গ্রহণে জটিলতা কমানো এবং বিশেষায়িত হাওর ব্যাংক স্থাপন করা প্রয়োজন। যে সময়ে মৎস্য আহরণ নিষিদ্ধ করা হয় সে সময়ে মৎস্যজীবীদের জন্য বিশেষ ভাতা এবং বিকল্প কর্মসংস্থানের ব্যবস্থা করা হলে সেটি হাওর অঞ্চলে টেকসই জীবিকা নিশ্চিতে সহায়ক হবে। এ ক্ষেত্রে বিভিন্ন সরকারি পরিষেবা দেওয়া ও উন্নয়ন পরিকল্পনা বাস্তবায়নের ক্ষেত্রে স্বচ্ছতা ও জবাবদিহিতা বৃদ্ধিতে নীতি নির্ধারকদের মনযোগী হওয়া প্রয়োজন বলে স্থানীয়রা তাদের এ বক্তব্য তুলে ধরেন।

‘গণতান্ত্রিক সুশাসনে জনসম্পৃক্ত প্রতিষ্ঠানের অংশগ্রহণ’ শীর্ষক এক চলমান প্রকল্পের আওতায় সেন্টার ফর পলিসি ডায়লগ (সিপিডি),  অক্সফাম ইন্ বাংলাদেশের যৌথ উদ্যোগে ও ইউরোপীয় ইউনিয়নের সহায়তায় এবং স্যানক্রেড ওয়েলফেয়ার ফাউন্ডেশনের সহযোগিতায় সংলাপটি অনুষ্ঠিত হয়।

সেন্টার ফর পলিসি ডায়লগ (সিপিডি) সিনিয়র রিসার্চ ফেলো তৌফিকুল ইসলাম খান সংলাপে মূল প্রতিবেদন উপস্থাপন করেন।

এ প্রতিবেদনে তিনি টেকসই জীবিকা কাঠামো এবং টেকসই উন্নয়ন অভীষ্ট (এসডিজি)-এর সম্পৃক্ততা টেকসই জীবিকা কাঠামোতে সুনামগঞ্জের বিভিন্ন চ্যালেঞ্জ ও তা বাস্তবায়নে সুনির্দিষ্ট প্রস্তাবনা তুলে ধরেন।

বন্যা ও অতিরিক্ত বৃষ্টিপাতের কারণে বোরো ফসলের ক্ষেত্রে জাতীয়ভাবে মোট ক্ষতির ৫০ শতাংশের বেশি হয় সুনামগঞ্জে।

এক্ষেত্রে জেলা ত্রাণ ও পুনর্বাসন কর্মকর্তার নেতৃত্বে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা, মাঠ পর্যায়ের ত্রাণ বিতরণ কর্মী এবং জনসম্পৃক্ত প্রতিষ্ঠানের প্রতিনিধিদের নিয়ে পর্যবেক্ষণ ও মূল্যায়ন কমিটি গঠন করে চ্যালেঞ্জ মোকাবেলায় এগিয়ে আসতে হবে।

সংলাপে বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ আব্দুল আহাদ। এ সময় তিনি বলেন, বর্তমান সরকার হাওর অঞ্চলের টেকসই জীবিকা নিশ্চিতকরণে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ। স্বচ্ছ ও সুষ্ঠুভাবে সরকারি পরিষেবা দেওয়ার ক্ষেত্রে জেলা প্রশাসনের সব প্রতিষ্ঠান কার্যকরভাবে সহযোগিতা দিয়ে যাবে।

স্বাগত বক্তব্য রাখেন স্যানক্রেড ওয়েলফেয়ার ফাউন্ডেশনের নির্বাহী পরিচালক তপন রুরাম। সূচনা বক্তব্য দেন অক্সফাম ইন্ বাংলাদেশ কান্ট্রি ডিরেক্টর ড. দীপঙ্কর দত্ত।

বিশেষ বক্তা হিসেবে সংলাপে উপস্থাপিত বিভিন্ন আলোচনার সারমর্ম তুলে ধরেন সম্মাননীয় ফেলো (সিপিডি) অধ্যাপক মোস্তাফিজুর রহমান। সম্মানীত অথিতি হিসেবে বক্তব্য রাখেন সুনামগঞ্জ জেলা মহিলা পরিষদের সাবেক সভাপতি শীলা রায়।

সংলাপের সভাপতিত্ব করেন সম্মাননীয় ফেলো (সিপিডি) ড. দেবপ্রিয় ভট্টাচার্য। এসময় তিনি বলেন, এসডিজি বাস্তবায়ন করতে হলে জাতীয় পর্যায়ের বাইরেও হাওর অঞ্চলের প্রতি বিশেষ নজর দিতে হবে। এক্ষেত্রে যেসব জাতীয় ও স্থানীয় পরিকল্পনা ও প্রতিশ্রুতি দেওয়া হয়েছে সেগুলো বাস্তবায়নের প্রতি সরকারকে মনযোগী হতে হবে। আর এসব কার্যক্রম বাস্তবায়নের ক্ষেত্রে স্বচ্ছতা ও জবাবদিহিতা নিশ্চিতকরণের ক্ষেত্রে জনসম্পৃক্ততা কার্যকরভাবে বৃদ্ধি করতে হবে।

এছাড়াও সংলাপে সুনামগঞ্জের বিভিন্ন উপজেলার অধিবাসী, জনপ্রতিনিধি, গবেষক, জনসম্পৃক্ত প্রতিষ্ঠান প্রতিনিধি, শিক্ষার্থী ও বিভিন্ন পেশাজীবীসহ দুই শতাধিক স্থানীয় নাগরিক অংশগ্রহণ করেন এবং সংলাপে হাওর অঞ্চলের বিভিন্ন সমস্যা ও তা সমাধানে প্রস্তাবনা তুলে ধরেন।

বাংলাদেশ সময়: ১৭৫৫ ঘণ্টা, আগস্ট ০৩, ২০১৯
আরএ

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।