ঢাকা, শনিবার, ১৩ বৈশাখ ১৪৩১, ২৭ এপ্রিল ২০২৪, ১৭ শাওয়াল ১৪৪৫

জাতীয়

বাঘের থাবায় প্রাণ গেলে লাখ টাকা ক্ষতিপূরণ!

সিনিয়র করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ০০২৮ ঘণ্টা, আগস্ট ১, ২০১৯
বাঘের থাবায় প্রাণ গেলে লাখ টাকা ক্ষতিপূরণ! ফাইল ফটো

ঢাকা: সুন্দরবনে রয়েল বেঙ্গল টাইগার রক্ষায় নতুন উদ্যোগ নিতে যাচ্ছে সরকার। এক্ষেত্রে, বাঘের হামলায় নিহত ব্যক্তির পরিবারকে এক লাখ টাকা ও আহতদের ৫০ হাজার টাকা ক্ষতিপূরণ দেওয়ার পরিকল্পনা নেওয়া হয়েছে।
 

বুধবার (৩১ জুলাই) পরিবেশ, বন, ও জলবায়ু পরিবর্তন মন্ত্রী মো. শাহাব উদ্দিন এক আলোচনা সভায় একথা জানিয়েছেন। বাঘ দিবস পালন উপলক্ষে এ আলোচনা সভার আয়োজন করে বন অধিদফতর।

‘বাঘ বাড়াতে শপথ করি, সুন্দরবন রক্ষা করি’ স্লোগান সামনে রেখে এবারের বাঘ দিবস পালিত হচ্ছে।

সভায় বনমন্ত্রী বলেন, আমার সিলেটেও একসময় অনেক বাঘ ছিল। তখন বাঘ শিকারকারীকে ‘বীর’ উপাধি দেওয়া হতো। কালের পরিক্রমায় এখন বাঘ শিকারীকে দুষ্কৃতিকারী হিসেবে চিহ্নিত করা হয়।

তিনি বলেন, বাঘের সবচেয়ে বড় শত্রু শিকারীরা। গবেষণায় বলা হয়েছে, বছরে একটি বাঘ শিকার করা হচ্ছে। তবে, একটিও বাঘ যাতে শিকার করা না হয়, সেটি নিশ্চিত করতে হবে। বাঘ বৃদ্ধির জন্য মন্ত্রণালয় থেকে কার্যক্রম শুরু হয়েছে। জনসচেতনতা বাড়াতে হবে। সুরক্ষা দিতে হবে। মানুষকে উৎসাহ দিতে হবে। তাই, বাঘের আক্রমণে কেউ নিহত হলে, তার পরিবারকে এক লাখ টাকা ও আহতদের ৫০ হাজার টাকা ক্ষতিপূরণ দেওয়া হয়, তাহলে সাধারণ মানুষের আরও সহযোগিতা পাওয়া যাবে।

মন্ত্রণালয়ের সচিব আবদুল্লাহ আল হোসেন চৌধুরী বলেন, গত একশ’ বছরে সুন্দরবনের আয়তন কমেছে বলে আমরা শুনি না। কিন্তু, বাঘের সংখ্যা কমেছে। একসময় এ বনে ৪৫০টি বাঘ ছিল, কখনো শুনেছি ১০৬টি। আর, বর্তমানে শুনছি ১১৪টি বাঘ আছে।

তিনি বলেন, বাঘের জন্য সবচেয়ে ঝুঁকিপূর্ণ বিষয় হলো, বাঘ-মানুষের দ্বন্দ্ব। লোকালয়ে বাঘ আসলে মানুষ মেরে ফেলতো। জনসচেতনার কারণে গত কয়েক বছরে লোকালয়ে বাঘ মারা যায়নি। বাঘের সংখ্যা বাড়ছে। আরও বাড়ানোর জন্য আমাদের পরিকল্পনা নেওয়া আছে। তবে সুন্দরবনে কী পরিমাণ বাঘের ধারণ ক্ষমতা আছে, সে তথ্য আমাদের কাছে নেই। কাজেই এ বিষয়টি নিয়ে গবেষণার প্রয়োজন আছে।

আলোচনা সভায় জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রাণিবিদ্যা বিভাগের অধ্যাপক ড. মনিরুল এইচ খান বাঘের জন্য বেশ কিছু হুমকির বিষয় তুলে ধরেন।  

তিনি বলেন, বাঘের সবচেয়ে বড় শত্রু চোরা শিকারী, সামুদ্রিক ঝড়, জলবায়ু পরিবর্তন প্রভৃতি। চোরা শিকারের ৮০ শতাংশই আমাদের চোখে আড়ালে থেকে যায়। সামুদ্রিক ঝড় ব্যাপক ক্ষতি করে। কিন্তু, সামনে আসে না। এছাড়া, জলবায়ু পরিবর্তনও বাঘের জন্য হুমকি।

ড. মনিরুল এইচ খান বলেন, সুন্দরবনে বাঘের বিচরণক্ষেত্র বাড়ানো দরকার। এজন্য আমার ফরেস্ট করিডর তৈরি করতে পারি। এক্ষেত্রে বিচ্ছিন্ন বনগুলোর মধ্যে সংযোগ স্থাপন করা দরকার। এভাবে আমরা নিঝুম দ্বীপকেও সংযুক্ত করতে পারি।

বন অধিদফতরের প্রধান বন সংরক্ষক মোহাম্মদ সফিউল আলম চৌধুরীর সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত সভায় মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব ড. মো. বিল্লাল হোসেনসহ অন্য কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।

বাংলাদেশ সময়: ২০২৫ ঘণ্টা, জুলাই ৩১, ২০১৯
ইইউডি/একে

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।

জাতীয় এর সর্বশেষ