ঢাকা, বৃহস্পতিবার, ১২ বৈশাখ ১৪৩১, ২৫ এপ্রিল ২০২৪, ১৫ শাওয়াল ১৪৪৫

জাতীয়

বন্যায় পানিবন্দি গাজীপুরবাসী

মো. রাজীব সরকার, স্টাফ করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৯০০ ঘণ্টা, জুলাই ৩১, ২০১৯
বন্যায় পানিবন্দি গাজীপুরবাসী গাজীপুরে নিম্নাঞ্চল প্লাবিত। ছবি: বাংলানিউজ

গাজীপুর: গাজীপুর সিটি করপোরেশনের বাইমাইল নদীরপাড়, কাতলাখালী ও ইটাহাটাসহ কয়েকটি এলাকার মানুষ বন্যায় পানিবন্দি হয়ে পড়েছেন। বন্যার পানি বাড়ায় ও সড়ক যোগাযোগ ব্যবস্থা না থাকায় ওইসব নিচু এলাকার মানুষ পানিবন্দি হয়ে পড়েছেন।

নগরবাসী সূত্রে জানা গেছে, গাজীপুর সিটি করপোরেশনের বাইমাইল নদীরপাড়, কাতলাখালী, লাঠিভাঙা, বড়ইতলী ও ইটাহাটা এলাকাসহ কয়েকটি এলাকায় সড়ক যোগাযোগ ব্যবস্থা নেই বললেই চলে। ফলে ওইসব নিচু এলাকার মানুষ বন্যায় পানিবন্দি হয়ে ভোগান্তিতে পড়েছেন নগরের শতশত মানুষ।

তাছাড়া হাট-বাজার, স্কুল-কলেজ, হাসপাতাল ও বিভিন্ন কর্মস্থলে যেতে এলাকার মানুষের চলাচলের বিকল্প শুধু নৌকা। নৌকা ছাড়া তাদের চলাচলের কোনো উপায় নেই। গাজীপুরে নিম্নাঞ্চল প্লাবিত।  ছবি: বাংলানিউজগাজীপুর সিটি করপোরেশনের বাইমাইল-রাজাবাড়ী এলাকায় মেঘের ছায়া পার্কের পূর্ব পাশ থেকে কাতলাখালী এলাকায়  স্লুইচ গেইট পর্যন্ত প্রায় ৫শ গজ দৈর্ঘ্য সরকারি একটি রাস্তা রয়েছে। রাস্তাটি নিচু থাকায় সিটি করপোরেশনের ১১ নং ওয়ার্ড কাতলাখালী ও ১২ নং ওয়ার্ড বাইমাইল নদীর পাড় এলাকায় মানুষ বর্ষার  মাসে পানিবন্দি হয়ে থাকে। ৫শ গজ দৈর্ঘ্য রাস্তাটি মাটি ভরাট করে একটু উঁচু করলেই জলাবদ্ধতা থেকে মুক্তি পেতো ওই দু’এলাকার মানুষ। এছাড়া শুকনো মৌসুমে ওই এলাকার রাস্তা দিয়ে আশপাশের আরও কয়েকটি এলাকার মানুষ চলাচল করে।

এদিকে কড্ডা বাজার এলাকা থেকে লাঠিভাঙা ঈদের মাঠ পর্যন্ত তুরাগ নদের পাড় দিয়ে প্রায় ৩শ গজ রাস্তা একেবারেই নিচু। ওই এলাকার মানুষের চলাচলের একমাত্র রাস্তাটি পানিতে ডুবে গেছে। ফলে লাঠিভাঙা এলাকার মানুষ একটু রাস্তার জন্য পানিবন্দি হয়ে পড়েছেন। প্রয়োজনীয় কাজে চলাচল করছেন নৌকা দিয়ে। এছাড়া কড্ডা বাজার এলাকা থেকে ইটাহাটা এলাকায় যাওয়ার রাস্তাটিও অনেক নিচু। বর্ষার প্রথমেই রাস্তাটি পানিতে তলিয়ে যায়।

অন্যদিকে বড়ইতলী এলাকার পশ্চিম পাশে তুরাগ নদ এবং পূর্ব পাশে একটি খাল। বর্ষার মৌসুমে উত্তর ও দক্ষিণ পাশে পানিতে ডুবে যায়। বর্ষাকালে ওই এলাকার চারদিকে পানি থৈ থৈ করে। তখন পানিবন্দি হয়ে নৌকা দিয়ে তাদের চলাচল করতে হয়।

লাঠিভাঙা এলাকার বাসিন্দা বিল্লাহ হোসেন জানান, মজলিশপুর এলাকা থেকে লাঠিভাঙা হয়ে কড্ডা বাজার পর্যন্ত প্রায় ৩ কিলোমিটার একটি রাস্তা রয়েছে। কড্ডা বাজার থেকে লাঠিভাঙা ঈদের মাঠ পর্যন্ত ৩শ গজ দৈর্ঘ্য রাস্তাটির বর্ষাকালে পানি ডুবে যায়। একটু রাস্তার জন্য পানিবন্দি হয়ে থাকে পুরো এলাকার মানুষ।

এদিকে কাতলাখালী এলাকার বাসিন্দা শাহজাহান বলেন, বর্ষাকালে আমাদের এলাকা থেকে  অন্য এলাকায় যাওয়ার কোনো রাস্তা নেই। একটি সরকারি রাস্তা আছে তাও অনেক নিচু। বর্ষাকালে রাস্তাটি পানির নিচে থাকে। ফলে এলাকার সব মানুষকে পানিবন্দি অবস্থায় জীবনযাপন করতে হয়। কাতলাখালী এলাকার মানুষের জন্য একটি উঁচু রাস্তা খুবই প্রয়োজন। গত ২/৩ বছর আগে সিটি করপোরেশন থেকে রাজাবাড়ি-বাঘিয়া রাস্তার মাটি ভরাটের কাজ শুরু করা হয়। কিন্তু রাস্তাটির অল্প একটু কাজ করেই তা বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে। গাজীপুরে নিম্নাঞ্চল প্লাবিত।  ছবি: বাংলানিউজএ ব্যাপারে ১২ নং ওয়ার্ড কাউন্সিলর মো. আব্বাছ উদ্দিন খোকন বাংলানিউজকে বলেন, কাতলাখালী ও বাইমাইল নদীরের রাস্তাটি টেন্ডার দেওয়া হয়েছে। ৫শ গজের মতো রাস্তাটি মাটি ভরাট করে উঁচু করা হবে। আশা করি, আগামী বছরের মধ্যে মেঘের ছায়া পার্কের পূর্ব পাশ থেকে তুরাগ নদ পর্যন্ত রাস্তটি মাটি বরাট কাজ সম্পন্ন হবে। তাহলে ওই দু’এলাকার মানুষকে পানিবন্দি হয়ে থাকতে হবে না।

১১ নং ওয়ার্ড কাউন্সিলর আবুল কালাম আজাদ বলেন, কাতলাখালী এলাকার মানুষের চলাচলের কোনো রাস্তা নেই এটা ঠিক। তবে দ্রুত সময়ের মধ্যে ওই এলাকার রাস্তা নির্মাণ করা হবে বলে আশা করছি।

বাংলাদেশ সময়: ১৪৫৯ ঘণ্টা, জুলাই ৩১, ২০১৯
আরএস/এএটি

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।