ঢাকা, শুক্রবার, ১৩ বৈশাখ ১৪৩১, ২৬ এপ্রিল ২০২৪, ১৬ শাওয়াল ১৪৪৫

জাতীয়

মানবপাচার রোধ করতে সমন্বিত উদ্যোগ জরুরি

| বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ২৩৪০ ঘণ্টা, জুলাই ৩০, ২০১৯
মানবপাচার রোধ করতে সমন্বিত উদ্যোগ জরুরি অনুষ্ঠানে অতিথিরা, ছবি: বাংলানিউজ

ঢাকা: মানবপাচার এমন একটি অপরাধ, যা অভিবাসী শ্রমিকদের শারীরিক ও মানসিক নির্যাতন, হয়রানি, জোরপূর্বক শ্রম, অবৈধ ও জোরপূর্বক বিয়ের ঝুঁকি বাড়ায়। মানবপাচার রোধে সচেতনতা বৃদ্ধির বিকল্প নেই। একইসঙ্গে এই অপরাধ দমনে সরকার, উন্নয়ন অংশীদার, আইন প্রয়োগকারী, নাগরিক সমাজ, বেসরকারি খাতসহ সবার সম্মিলিতভাবে কাজ করা জরুরি।

মঙ্গলবার (৩০ জুলাই) বিশ্ব মানবপাচার প্রতিরোধ দিবস উপলক্ষে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ব্যবসায় অনুষদ মিলনায়তনে ‘আই স্ট্যান্ড এগেইনস্ট হিউম্যান ট্রাফিকিং’ নামে একটি বির্তক প্রতিযোগিতার উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে মানবপাচার প্রতিরোধে কাজ করা বিশেষজ্ঞ ও বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের প্রতিনিধিরা এ কথা বলেন।

আন্তর্জাতিক অভিবাসন সংস্থা (আইওএম) এবং ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় বিতর্ক সংসদ ইউরোপীয় ইউনিয়ন, যুক্তরাষ্ট্র সরকার এবং সুইডেন দূতাবাসের সহযোগিতায় এ অনুষ্ঠোনের আয়োজন করে।

যার মূল উদ্দেশ্য ছিল- মানবপাচার সম্পর্কে শিক্ষার্থীদের মধ্যে আরও সচেতনতা তৈরি করা। এছাড়া মানবপাচার, অভিবাসন ও এর প্রভাব সম্পর্কে তুলে ধরে এই প্রতিযোগিতাটি নীতিনির্ধারক, ছাত্র, শিক্ষাবিদ, গণমাধ্যম প্রতিনিধি, উন্নয়ন অংশীদার, আন্তর্জাতিক সংস্থা এবং বেসরকারি খাতকে একটা জায়গায় নিয়ে আসবে বলে প্রত্যাশা।

প্রতিযোগিতার উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে আইওএমের মাইগ্রেন্ট প্রটেকশন অ্যান্ড অ্যাসিসটেন্সের প্রধান আসমা খাতুন মানবপাচার সম্পর্কে একটি সংক্ষিপ্ত বিবরণ দেন। সেখানে তিনি বলেন, বিশ্বায়নের কল্যাণে এক বিলিয়নেরও বেশি মানুষ এখন এক দেশ থেকে অন্য দেশে যাচ্ছেন। বর্তমানে প্রায় ১২ মিলিয়ন বাংলাদেশি বিদেশে কর্মরত আছেন। মূলত অর্থনৈতিক, সামাজিক ও পরিবেশগত কারণে বিপুল বাংলাদেশি বিদেশে পাড়ি জমাচ্ছে। ২০১৮ সালে আনুমানিক ৮.৯ মিলিয়ন বাংলাদেশি অভ্যন্তরীণভাবে অভিবাসিত হয়েছেন। এই সময়ে প্রায় সাত লাখ ৩০ হাজার জন নিয়মিত চ্যানেলগুলোর মাধ্যমে বিদেশে কাজ করার জন্য পাড়ি জমান। কিন্তু যুক্তরাষ্ট্রের স্টেট ডিপার্টমেন্টের ট্রাফিকিং ইন পারসন্স (টিআইপি) রিপোর্ট-২০১৯ অনুযায়ী, প্রতি বছর অনেকেই অনিয়মিত চ্যানেলগুলোর মাধ্যমে পাচার হন এবং পাচারকারীদের হাতে শোষণ এবং নির্যাতনের শিকার হন। যারা অবৈধভাবে বা অনিয়মিতভাবে বিদেশে যান বা যেতে বাধ্য হন, তারা সীমাবদ্ধ চলাচল, ঋণচুক্তি, জোরপূর্বক শ্রম, যৌন নিপীড়ন, জোরপূর্বক বিয়ে এবং দাসত্বের মতো সমস্যায় পড়েন।

আলোচনায় অংশ নিয়ে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অর্থনীতি বিভাগের অধ্যাপক ড. এমএম আকাশ বলেন, আমাদের দেশে পর্যাপ্ত চাকরির সুবিধা নেই। সে কারণে বিভিন্ন শ্রেণি-পেশার মানুষ বিশেষ করে তরুণরা বিদেশে যান। এদের অনেকেই পাচারের শিকার হন। যারা এই পাচারের শিকার হন, তাদের অধিকাংশই আবার গরিব। ফলে চাইলেই তারা অনেক কিছু করতে পারেন না। বাস্তবতা হলো- পাচারের বিষয়টি এখন উদ্বেগজনক। এটি ঠেকাতে আমাদের দারিদ্র্য হার কমাতে হবে। বৃদ্ধি করতে হবে তরুণদের দক্ষতা। একইসঙ্গে যারা বিদেশে যেতে আগ্রহী, তাদের সচেতনতা বৃদ্ধি করতে হবে।

এদিকে, জাতিসংঘের অভিবাসন সংস্থা- আইএমও মানবাপাচার প্রতিরোধে সরকারের সঙ্গে কাজ করছে। তথ্য প্রচার ও প্রসার এবং ক্ষতিগ্রস্তদের প্রত্যক্ষ সহায়তা করা এর মধ্যে অন্যতম।

বাংলাদেশ সময়: ১৯৩৭ ঘণ্টা, জুলাই ৩০, ২০১৯
জিসিজি/টিএ

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।