ঢাকা, শনিবার, ১৪ বৈশাখ ১৪৩১, ২৭ এপ্রিল ২০২৪, ১৭ শাওয়াল ১৪৪৫

জাতীয়

মশার ওষুধ ক্রয় সিন্ডিকেট ভেঙেছি, দাবি মেয়র আতিকের

স্টাফ করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ২২২৩ ঘণ্টা, জুলাই ২৯, ২০১৯
মশার ওষুধ ক্রয় সিন্ডিকেট ভেঙেছি, দাবি মেয়র আতিকের

ঢাকা: মশক নিধন ওষুধ সরবরাহের সঙ্গে জড়িত ‘সিন্ডিকেট’ সফলভাবে ভাঙতে পেরেছেন বলে দাবি করেছেন ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশনের (ডিএনসিসি) মেয়র আতিকুল ইসলাম। 

তিনি বলেছেন, দীর্ঘদিন ধরে চলে আসা এই সিন্ডিকেট ভাঙার ফলে কার্যকর মশার ওষুধ বিদেশ থেকে কিনে আনার প্রক্রিয়া আরও সহজ হবে।  
 
সোমবার (২৯ জুলাই) রাজধানীর গুলশান ক্লাবে জাতীয় দৈনিক ও অনলাইন নিউজপোর্টালের সম্পাদকদের সঙ্গে আয়োজিত এক মতবিনিময় সভায় মেয়র আতিকুল ইসলাম এসব কথা জানান।

 

‘ডেঙ্গু মোকাবিলা ও পরিচ্ছন্ন নগরী বিনির্মাণ’ শীর্ষক এই মতবিনিময় সভার শুরুতেই নিজ বক্তব্যে মেয়র আতিক বলেন, ‘গতকাল (রোববার) ও পরশুদিন (শনিবার) দেশে মশার ঔষধ ক্রয়ের সঙ্গে সংশ্লিষ্ট সংস্থার প্রতিনিধিদের নিয়ে বৈঠক করেছি। সেখানে দেখলাম দেশে মশার ওষুধ কেনা হয় মাত্র দুইটি কোম্পানির কাছ থেকে। এ দুই কোম্পানি হচ্ছে- নোকন ইনসেক্টিসাইড লিমিটেড ও লিমিট অ্যাগ্রো প্রোডাক্ট লিমিটেড। এর মধ্যে লিমিট অ্যাগ্রো কালো তালিকাভুক্ত। আমি প্রশ্ন করেছি, ১৭ কোটি মানুষের জন্য মাত্র দুইটি কোম্পানি ওষুধ আনবে?
 
সভায় বক্তব্য দেন বাংলানিউজের সম্পাদক জুয়েল মাজহার।  ছবি: জিএম মুজিবুর/বাংলানিউজকৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উদ্ভিদ সংরক্ষণ উইং একটি বিজ্ঞপ্তিকে কৌশলে ‘বিধি’ বানিয়ে অন্যদের ওষুধ আমদানিতে বিরত রেখেছে বলে জানান তিনি।  

ডিএনসিসির মেয়র বলেন, ওষুধ আমদানির বিষয়ে আমি যখন জানা শুরু করলাম সবাই আমাকে বললো- ২০১৫ সালে কৃষি সংরক্ষণ অধিদপ্তর এক বিধি বলে ওই দুই কোম্পানি ছাড়া অন্যদের ওষুধ আমদানিতে বিরত রেখেছে। কিন্তু বিধিটা দেখতে গিয়ে বুঝলাম এটা কোনো বিধি না বরং একটি বিজ্ঞপ্তিমাত্র।  

‘২০১৫ সালে অধিদপ্তর থেকে এই বিজ্ঞপ্তিকে বিধি উল্লেখ করে কাস্টমস, বন্দর কর্তৃপক্ষসহ সব জায়গায় চিঠি দিয়েছে যেন ওই দুই কোম্পানি বাদে অন্যদের থেকে কেউ ওষুধ আমদানি করতে বা কিনতে না পারেন। মূলত এটা একটা সিন্ডিকেট। ’

পড়ুন>>ডেঙ্গু রোধে দীর্ঘমেয়াদে কাজের প্রস্তাব সম্পাদকদের

তিনি বলেন, দুইটি কোম্পানির জন্য পুরো জাতির সামনে আমরা প্রশ্নবিদ্ধ হয়েছি।  আমি সেই সিন্ডিকেট ভেঙে দিয়েছি। আমি জরুরিভিত্তিতে হলেও সিটি করপোরেশন যেন তার ওষুধ সে নিজেই কিনে আনতে পারে সেই সুযোগ চেয়েছি। আমাকে দেওয়াও হয়েছে। এমন সিদ্ধান্তের ফলে সিটি করপোরেশন উন্মুক্ত বাজার থেকে মশার ওষুধ কিনবে। যার সুফল নগরবাসী পাবেন।

সভায় উপস্থিত বিভিন্ন জাতীয় দৈনিক ও অনলাইন নিউজপোর্টালের সম্পাদকসহ ডিএনসিসি মেয়র আতিকুল ইসলাম।  ছবি: জিএম মুজিবুর/বাংলানিউজডিএনসিসি মেয়র আতিক বলেন, যে দুইটি কোম্পানির থেকে ওষুধ কেনা হচ্ছিল এতদিন তার একটি আবার কালো তালিকাভুক্ত। অর্থ্যাৎ কোম্পানি ছিল মূলত একটি। বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা, স্বাস্থ্য অধিদপ্তর, আণবিক কমিশনসহ বিভিন্ন সংস্থার প্রতিনিধিদের নিয়ে আমাদের একটি টেকনিক্যাল কমিটি গঠন করা ছিল।  

‘কী ধরনের ও কী পরিমাণ ওষুধ কিনতে হবে, কার কাছ থেকে কিনতে হবে তা প্রায় চূড়ান্ত করে এনেছে সেই কমিটি। চূড়ান্ত প্রতিবেদন দিলেই অল্প সময়ের মধ্যে আমরা সেসব ওষুধ কিনে আনবো। ভবিষ্যতে প্রয়োজনে দরপত্র আহ্বান করে এবং অন্যান্য প্রচলিত ধারায় ওষুধ কেনা হবে। ’
 
২০১৫ সালে এমন সিন্ডিকেট গঠনের বিষয়টি কারও নজরে এলো না কেন? সম্পাদকদের এমন প্রশ্নের অবশ্য সদুত্তর দিতে পারেননি মেয়র আতিক।  

তবে পরবর্তী ওষুধ কেনার আগ পর্যন্ত সার্বিক পরিস্থিতি মোকাবেলায় ডিএনসিসি কী পদক্ষেপ নেবে- এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, এখন যে ওষুধ আছে তা দিয়েই কাজ চলবে। তবে ওষুধ বাড়িয়ে দেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছি আমরা। অর্থ্যাৎ ওষুধ ছিটানোর পরিমাণ বেড়ে যাবে। যেখানে পাঁচটি মেশিন দিয়ে ওষুধ দেওয়া হচ্ছে, এখন সেখানে মেশিন ১০টি করা হচ্ছে। আমরা ওষুধ না কেনা পর্যন্ত যে ওষুধ আছে সেগুলোই বাড়িয়ে দেওয়া হবে।
 
মতবিনিময় সভায় সিনিয়র সাংবাদিক রাহাত খান, ডেইলি অবজারভার সম্পাদক ইকবাল সোবহান চৌধুরী, ডেইলি সান সম্পাদক এনামুল হক চৌধুরী, বাংলাদেশ প্রতিদিন সম্পাদক নঈম নিজাম, বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম সম্পাদক জুয়েল মাজহার, দৈনিক ভোরের কাগজ সম্পাদক শ্যামল দত্ত, গাজী টেলিভিশন ও সারাবাংলা.নেটের এডিটর ইন চিফ  সৈয়দ ইশতিয়াক রেজা, দৈনিক সমকালের ভারপ্রাপ্ত সম্পাদক মুস্তাফিজ শফি, দৈনিক বণিক বার্তা সম্পাদক দেওয়ান হানিফ মাহমুদসহ বিভিন্ন জাতীয় দৈনিক ও অনলাইন নিউজপোর্টালের সাংবাদিকরা উপস্থিত ছিলেন।  

বাংলাদেশ সময়: ১৮১১ ঘণ্টা, জুলাই ২৯, ২০১৯
এসএইচএস/এমএ 

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।