ঢাকা, শনিবার, ৭ বৈশাখ ১৪৩১, ২০ এপ্রিল ২০২৪, ১০ শাওয়াল ১৪৪৫

জাতীয়

মাদ্রাসাছাত্র আবির হত্যার ঘটনায় অধ্যক্ষ গ্রেফতার

ডিস্ট্রিক্ট করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ২৩৪৫ ঘণ্টা, জুলাই ২৬, ২০১৯
মাদ্রাসাছাত্র আবির হত্যার ঘটনায় অধ্যক্ষ গ্রেফতার অধ্যক্ষ আবু হানিফ

চুয়াডাঙ্গা: চুয়াডাঙ্গায় মাদ্রাসাছাত্র আবির হুসাইনকে বলাৎকার ও মাথা কেটে হত্যার মামলায় মাদ্রাসার অধ্যক্ষ আবু হানিফকে গ্রেফতার দেখানো হয়েছে। 

শুক্রবার (২৬ জুলাই)বিকেলে তাকে গ্রেফতার দেখায় পুলিশ। ঘটনার দিন গত মঙ্গলবার থেকে ওই শিক্ষক পুলিশ হেফাজতে ছিলেন।

 

গত চার দিন টানা জিজ্ঞাসাবাদ শেষে শুক্রবার আনুষ্ঠানিকভাবে তাকে গ্রেফতার দেখানো হলো। বাকি চার শিক্ষককে হেফাজতে রেখে জিজ্ঞাসাবাদ অব্যাহত রেখেছে পুলিশ।  

শুক্রবার বিকেলে গ্রেফতারের বিষয়টি বাংলানিউজকে নিশ্চিত করেছেন পুলিশ সুপার মাহবুবুর রহমান।  

তিনি বলেন, বলাৎকারের ঘটনা যাতে ফাঁস না হয় এজন্যই তাকে পরিকল্পিতভাবে গলাটিপে হত্যা করা হয়। হত্যার ঘটনাটি ভিন্ন খাতে প্রবাহিত করার জন্যই সুকৌশলে শরীর থেকে মাথা বিচ্ছিন্ন করা হয়। যাতে করে খুব সহজেই ঘটনাটি ‘ছেলেধরা’ গুজবে চালিয়ে দেওয়া যায়।
 
তিনি আরও বলেন, গত চার দিন ধরে আমরা চাঞ্চল্যকর এ মামলাটি নিয়ে খুব সর্তকতার সঙ্গে তদন্ত করেছি। কারণ মামলাটি খুবই স্পর্শকাতর।  

আলমডাঙ্গা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি)  আসাদুজ্জামান মুন্সি জানান, মাদ্রাসার দ্বিতীয় শ্রেণির ওই ছাত্রকে বেশ কিছুদিন ধরে বলাৎকার করে আসছিল মাদ্রাসার অধ্যক্ষ আবু হানিফ। বিষয়টি ওই ছাত্র অন্যদের জানিয়ে দেওয়ার কথা বললে তাকে হত্যার পরিকল্পনা করেন তিনি। সে মোতাবেক মাদ্রাসার অদূরে একটি আম বাগানে নিয়ে ঠাণ্ডা মাথায় গলাটিপে খুন করা হয় আবির হুসাইনকে। এরপর হত্যার ঘটনাটি ধামাচাপা দিতে শরীর থেকে মাথাটি বিচ্ছিন্ন করে পাশের একটি পুকুরে ফেলে দেওয়া হয়।  

আলোচিত এই মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা শেখ মাহবুবুর রহমান জানান, মাদ্রাসার অধ্যক্ষ আবু হানিফ জামায়াতের একজন সক্রিয় কর্মী। ২০১৩ সালে দামুড়হুদায় পুলিশের ওপর হামলা মামলার এজাহারনামীয় আসামি।  

তিনি আরও জানান, সাম্প্রতিক সময়ে দেশে ছেলেধরা গুজব ভাসছে। মাদ্রাসার ওই ছাত্রকে হত্যার ঘটনার জন্য আবু হানিফ ঠিক এ সময়টিকেই বেছে নেন। ঠাণ্ডা মাথায় খুন করে গুম করা হয় মাথা। যাতে করে সারাদেশে গুজব ছড়িয়ে নিজেকে আড়াল রাখা যায়।  

চুয়াডাঙ্গার আলমডাঙ্গা উপজেলার কয়রাডাঙ্গা গ্রামের নুরানী হাফিজিয়া মাদ্রাসার দ্বিতীয় শ্রেণির ছাত্র আবির হুসাইন মঙ্গলবার সন্ধ্যার পর নিখোঁজ হয়। পরদিন সকালে মাদ্রাসার অদূরে একটি আম বাগানের ভেতর থেকে তার মাথাবিহীন মরদেহ উদ্ধার করে পুলিশ। এরপর পরই গোটা এলাকায় সাম্প্রতিক ছেলেধরা আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়ে। পুলিশ হত্যাকাণ্ডের রহস্য উদঘাটনে ঘটনার দিনই মাদ্রাসার অধ্যক্ষ মুফতি আবু হানিফসহ ৫ শিক্ষককে হেফাজতে নিয়ে জিজ্ঞাসাবাদ শুরু করে।  

এদিকে, হত্যাকাণ্ডের পর নিহত মাদ্রাসাছাত্রের নিখোঁজ মাথাটি উদ্ধারে তৎপর হয়ে ওঠে পুলিশ। ঘটনার দিন বুধবার দিনভর অভিযান চালিয়েও ব্যর্থ হয় পুলিশ। পরে পুলিশের এ অভিযানে যোগ দেয় ঢাকা থেকে র‌্যাবের ডগ স্কোয়াডের একটি স্পেশাল দল।  

অবশেষে বৃহস্পতিবার মাদ্রাসার অদূরে একটি পুকুর থেকে নিহত আবির হুসাইনের মাথাটি উদ্ধার করে ফায়ার সার্ভিসের একটি ডুবুরি দল।  

বাংলাদেশ সময়: ১৯৪৩ ঘণ্টা, জুলাই ২৬, ২০১৯
আরএ

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।