ঢাকা, শুক্রবার, ১৫ চৈত্র ১৪৩০, ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৮ রমজান ১৪৪৫

জাতীয়

দুই হাজার কেজি ওজনের ‘সিনবাদ’

| বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ২৩৪৩ ঘণ্টা, জুলাই ২৪, ২০১৯
দুই হাজার কেজি ওজনের ‘সিনবাদ’ দেশীয় পদ্ধতিতে লালন-পালন করা হচ্ছে সিনবাদকে/ছবি: বাংলানিউজ

মানিকগঞ্জ: নাম তার ‘সিনবাদ’। দৈর্ঘ্য ৯৬ ইঞ্চি, উচ্চতা ৬ ফিট ৭ ইঞ্চি, ওজন প্রায় দুই টন। বিশালাকৃতির গরুটি দেখার জন্য আশেপাশের অঞ্চল থেকে হাজারও মানুষ প্রতিনিয়ত ভিড় করছে।

সিনবাদ মানিকগঞ্জ জেলার সাটুরিয়া উপজেলার সাফুল্লি গ্রামের বিল্লাল হোসেনের আদরের (হলিস্টিন ফ্রিজিয়ান) ষাঁড়। ঈদুল আজহাকে সামনে রেখে সম্পূর্ণ দেশীয় পদ্ধতিতে লালন-পালন করছেন বিল্লাল।

তার দাবি, এবারের কোরবানির ঈদে মানিকগঞ্জের সবচেয়ে বড় গরু এটি।

সরেজমিনে গিয়ে জানা যায়, সাটুরিয়া উপজেলার দরগ্রামের সাফুল্লি গ্রামের বিল্লাল হোসেন দুই বছর আগে পার্শ্ববর্তী এলাকা গোপালপুর থেকে দুই বছর আগে আড়াই বছর বয়সী হলিস্টিন ফ্রিজিয়ান জাতের গরুটি তিন লাখ ত্রিশ হাজার টাকা দিয়ে কেনেন। পরে পরিবারের সবাই মিলে গরুটির নামও রাখেন ‘সিনবাদ’। এরপর থেকেই সম্পূর্ণ দেশীয় পদ্ধতিতে লালন-পালন করা হচ্ছে তাকে।
সিনবাদ
সিনবাদের থাকার ঘরটাও বেশ রাজকীয়। ঘরের মেঝে সম্পূর্ণ পাকা, পায়ে ব্যাথা যাতে না পায় সে জন্য ফ্লোরে কার্পেট এবং গরম থেকে সুরক্ষার জন্য মাথার উপরে তিনটি সিলিং ফ্যান ও একটি বড় ফাইটার ফ্যানের বাতাসের ব্যবস্থা রাখা হয়েছে তার জন্য। দিনে আর রাতে মিলিয়ে ২৪ ঘণ্টায় পনের থেকে বিশবার সিনবাদকে গোসল করানো হয়। তার দেখবালের জন্য একজন স্থায়ী লোক নিয়োগ দেওয়া হয়েছে।

সিনবাদের প্রতিদিনের খাবারের তালিকায় রয়েছে দশ কেজি ভুসি, দুই কেজি মালটা, দুই কেজি আপেল, ছয় হালি কলা, এক কেজি গুড়, নালি হাফ কেজি, ভুট্টার ফাকি দুই কেজি, ছোলার ফাকি এক কেজি, মিষ্টি কুমড়া এবং পাঁচ হালি লেবু। বর্তমানে প্রতিদিন সিনবাদের খাবারের পেছনে দুই থেকে আড়াই হাজার টাকা খরচ হচ্ছে বলে জানান বিল্লাল।

সিনবাদের মালিক বিল্লাল হোসেন বাংলানিউজকে বলেন, গত দুই বছর আগে গোপালপুর এলাকা থেকে হলিস্টিন ফ্রিজিয়ান জাতের গরুটি তিন লাখ ত্রিশ হাজার টাকা দিয়ে কিনে আনি। আর তখন ওর বয়স ছিলো আড়াই বছর। বর্তমানে সিনবাদের বয়স চার বছর সাত মাস। ‘সিনবাদ’কে নিজের সন্তানের মতো করে বড় করে তুলেছি। আমি সিনবাদকে সম্পূর্ণ দেশীয় পদ্ধতি লালন পালন করেছি।

প্রতিনিয়ত উপজেলা প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তার পরামর্শ অনুয়ায়ী পরিচর্চা করেছি জানিয়ে বিল্লাল বলেন, সিনবাদের দেখবাল করার জন্য একজন রাখাল রেখেছি, তাকে প্রতি মাসে সাড়ে ১২ হাজার টাকা বেতন দিতে হচ্ছে। এছাড়া তার খাবারসহ হাত খরচের ব্যবস্থা করেছি। এ পর্যন্ত সিনবাদের পেছনে ১৭ থেকে ১৮ লাখ টাকা খরচ হয়ে গেছে। এবার যদি গরুর বাজার ভালো থাকে এবং ভালো দামে সিনবাদকে বিক্রি করতে পারলে কয়টা টাকা লাভের মুখ দেখমু। বিল্লালের লক্ষ্য কমপক্ষে ২২ লাখ টাকায় বিক্রি করবে সিনবাদকে।

সিনবাদসিনবাদের পরিচর্যাকারী আনোয়ার হোসেন বাংলানিউজকে বলেন, সিনবাদ অপরিষ্কার স্থানে থাকতে চায় না। সে যেখানে শুবে সেখানে সব সময় পরিষ্কার রাখতে হয়। সিনবাদকে সারাদিনই কিছু না কিছু খেতে দিতে হয়। এছাড়া তাকে (সিনবাদ) রাত দিন মিলিয়ে ১৫ থেকে ২০ বার গোসল করাতে হয়। ও অনেক শান্ত, তবে বেশি মানুষ দেখতে পারে না সিনবাদ।

সাটুরিয়া উপজেলা প্রাণিসম্পদ অফিসের ভেটেনারি সার্জন ডা. সেলিম জাহান বাংলানিউজকে বলেন, ‘সিনবাদ’ দৈর্ঘ্য ৯৬ ইঞ্চি,উচ্চতা ৬ ফিট ৭ ইঞ্চি, ওজন প্রায় দুই টন। আমরা ধারণা করছি, দেশের বসচেয়ে বড় কোরবানির গরু এটি। গরম থেকে সুরক্ষার জন্য ফ্যানের ব্যবস্থা রাখা হয়েছে এবং প্রতিনিয়ত আমি সিনবাদের শরীর-স্বাস্থ্য মনিটর করছি। সিনবাদ সম্পূর্ণ দেশীয় পদ্ধতিতে লালন-পালন করা হয়েছে।

বাংলাদেশ সময়: ১৯৩০ ঘণ্টা, জুলাই ২৪, ২০১৯
এসএইচ

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।