মঙ্গলবার (২৩ জুলাই) দুপুরের দিকে সিরাজগঞ্জ সদর উপজেলার বন্যাদুর্গত পঞ্চসোনা গ্রামের তাঁত শ্রমিক মনিরুলের স্ত্রী সমেলা খাতুন নিজের ডুবন্ত বাড়ির পাশে কলার ভেলায় বসে বাংলানিউজকে এসব কথা বলেন।
সমেলা বলেন, প্রায় ১০ দিন ধরে বাড়িতে পানি উঠেছে।
‘আমার স্বামী সেই সকালে কাজ খুঁজতে বের হয়েছেন। কাজ করে টাকা পেয়ে যদি কিছু আনে, কলার ভেলায় বসে তাই রান্না করে বাচ্চাদের খাওয়াবো। ’
ত্রাণ পেয়েছেন কিনা জানতে চাইলে সমেলা বলেন, শুনেছি শুকনো জায়গাগুলোতে এসে ত্রাণ দিয়ে গেছে। অথচ আমরা যারা পানিতে ভাসছি, তাদের এখানে এসে কোনো ধরনের ত্রাণ দেওয়া হয় নাই।
সমেলার মতো একই অবস্থা তাঁত শ্রমিক আব্দুল বাতেনের স্ত্রী মমতা খাতুনের। বিগত ১০ থেকে ১২ দিন ধরে বাড়িতে বন্যার পানি ওঠায় পাশ্ববর্তী আব্দুল মোতালেবের খানিকটা উঁচু বাড়িতে আশ্রয় নিয়েছেন তিনি। সেই বাড়ির উঠোনেও পানি উঠেছে। ফলে অতিকষ্টে নিজের গবাদি পশু নিয়ে দিন কাটাচ্ছেন তিনি।
কথা হয় পাশ্ববর্তী গাছাবাড়ি চরের মোমেনা বেগম, মজনু মিয়া, সয়দাবাদ চরের নুরু শেখ শিউলিসহ আরও অনেকের সঙ্গে। তারা বাংলানিউজকে জানান, এবার হঠাৎ খুব তাড়াতাড়িই বন্যার পানি ঢুকে পড়েছে। একদিনের মধ্যে মাঠের জমি আর দুইদিনের মধ্যে বাড়িঘরে পানি উঠে গেছে।
তারা আরও জানান, সয়দাবাদ ইউনিয়নের বড় শিমুল, পঞ্চসোনা, চর গাছাবাড়ি, সয়দাবাদ চর, ছাতিয়ানতলী, পূর্ব মোহনপুর, বেলুটিয়াসহ যমুনা তীরের ১০ থেকে ১২টি গ্রামের অন্তত ৫০ থেকে ৬০ হাজার মানুষ পানিবন্দি হয়ে মানবেতর জীবন যাপন করছে। অনেকের ঘরে চাল-ডাল থাকলেও রান্নার পরিবেশ না থাকায় কোনোমতে একবেলা চুলা জ্বালিয়ে দু’বেলা খেয়ে বেঁচে আছেন।
অন্যদিকে চরাঞ্চলের এসব হতদরিদ্র-দুঃস্থ বন্যাদুর্গত মানুষেরা পর্যাপ্ত ত্রাণ সহায়তা পাননি বলেও জাানিয়েছেন।
বাংলাদেশ সময়: ০৪৩৭ ঘণ্টা, জুলাই ২৪, ২০১৯
এসএ