ঢাকা, শুক্রবার, ১৩ বৈশাখ ১৪৩১, ২৬ এপ্রিল ২০২৪, ১৬ শাওয়াল ১৪৪৫

জাতীয়

তুরাগে ট্যাক্সিক্যাব উদ্ধারে নৌবাহিনীর ‘স্ক্যানার’

| বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ২১৫২ ঘণ্টা, জুলাই ২৩, ২০১৯
তুরাগে ট্যাক্সিক্যাব উদ্ধারে নৌবাহিনীর ‘স্ক্যানার’

সাভার (ঢাকা): দুই দিন পার হতে চললেও সাভারের আমিনবাজারে সালেহপুর ব্রিজ থেকে নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে তুরাগ নদে পড়ে যাওয়া ট্যাক্সিক্যাবটির সন্ধান মেলেনি। তবে ঘটনার পর থেকে উদ্ধার অভিযানে কাজ করছে পুলিশ, ফায়ার সার্ভিস ও নৌ-পুলিশসহ নৌবাহিনীর ডুবুরি দল। কিন্তু পানিতে তলিয়ে যাওয়া ট্যাক্সিক্যাবের সন্ধান পাওয়া এখনো সম্ভব হয়নি। 

মঙ্গলবার (২৩ জুলাই) দুপুর থেকে ‘সাইট টোনার স্ক্যানার’ (পানির তলদেশে দেখার মতো যন্ত্র) ব্যবহার করে তুরাগ নদের প্রায় এক বর্গ কিলোমিটার জায়গাজুড়ে স্ক্যান করা হচ্ছে।  

এ ব্যাপারে বাংলাদেশ নৌবাহিনীর চিফ পেডি অফিসার ও ডুবুরি কবির হোসেন জানান, দুপুর ২টা থেকে ব্রিজের পাশে নদে পড়ে যাওয়া ট্যাক্সিক্যাব ও চালকের সন্ধানে ‘সাইট স্ক্যানার টোনার’ ব্যবহার করা হচ্ছে।

নৌবাহিনীর ১৭ দলের প্রতিনিধির মধ্যে ১৩ জন ডুবুরি অভিযানে অংশ নিয়েছেন। যেখানে এমন কিছু দেখা যাবে, সঙ্গে সঙ্গে চিহ্নিত করে ডুবুরি নামানো হবে। আপতত এক বর্গ কিলোমিটার জুড়ে কাজ করা হচ্ছে। প্রয়োজনের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তার সঙ্গে কথা বলে এরিয়া বাড়ানো হবে। আশা করছি দ্রুতই আমরা কোনো ভালো সংবাদ দিতে পারবো। এছাড়া আমাদের পাশাপাশি ফায়ার সার্ভিসও নিরলসভাবে কাজ করছে উদ্ধার অভিযানে।

এর আগে, রোববার (২১ জুলাই) রাত ৮টার দিকে ঢাকা-আরিচা মহাসড়কে একটি বাসকে ওভারটেক করতে গিয়ে হলুদ রঙের ট্যাক্সিক্যাবটি তুরাগ নদে পড়ে যায় বলে জরুরি সেবা নম্বর ৯৯৯’এর মাধ্যমে জানতে পারে পুলিশ ও ফায়ার সার্ভিস।

ট্রাস্ট ট্রান্সপোর্ট সার্ভিসের আরেক ট্যাক্সিক্যাবের চালক ফারুক বলেন, তুরাগ নদে পড়া ট্রাস্ট ট্রান্সপোর্ট সার্ভিসের ‘এক্সিও ২০১২’ মডেলের ৪২ নম্বর ট্যাক্সিক্যাবটি চালাচ্ছিলেন জিয়াউর রহমান জিয়া (৪০)। তিনি ফরিদপুরের বোয়ালমারীর আইনাল মোল্লার ছেলে। ঘটনার সময় তিনি সাভার থেকে ঢাকার দিকে যাচ্ছিলেন।

নিখোঁজ জিয়ার মামাতো ভাই জাহাঙ্গীর আলম বাংলানিউজকে বলেন, জিয়া গত দুই বছর ধরে ট্রাস্ট ট্রান্সপোর্ট সার্ভিসের ট্যাক্সিক্যাব চালায়। কখনো তার সড়ক দুর্ঘটনার খবর শুনিনি। হঠাৎ করে কী থেকে কী যে হয়ে গেলো। তবে ব্রিজের পাশে সড়কে সীমানা পিলার থাকলে হয়তো ট্যাক্সিক্যাবটি নদে পড়তো না। সড়ক কর্তৃপক্ষের উচিৎ প্রত্যেকটি ব্রিজের আগে ও পরে সীমানা পিলার দেওয়া।  

এসময় তিনি কান্না জরিত কন্ঠে বলেন, বাড়িতে তার দু’টো বাচ্চা মেয়ে রয়েছে, তাদের ভবিষ্যৎ কী হবে। তার স্ত্রী আসেনি, এলে তাকে সামলানো সম্ভব হবেনা।  

বাংলাদেশ ফায়ার সার্ভিস ও সিভিল ডিফেন্সের ঢাকা জোনের উপ-সহকারী পরিচালক মোস্তফা মহসিন বাংলানিউজকে জানান, রোববার রাত আটটার দিকে একটি ট্যাক্সিক্যাব তুরাগ নদে পড়ে যাওয়ার খবর শুনে সাভার, মিরপুর ও কল্যাণপুর থেকে ফায়ার সার্ভিসের তিনটি ইউনিট এবং ডুবুরির একটি ইউনিট নিয়ে ঘটনাস্থলে পৌঁছে উদ্ধারকাজ শুরু করা হয়। এছাড়া সোমবার (২২ জুলাই) রাত থেকে নৌবাহিনীর একটি দল উদ্ধার অভিযান শুরু করে। প্রায় দুই দিন হয়ে গেলেও এখনো সন্ধান পাওয়া যায়নি সেই ট্যাক্সিক্যাব ও তার চালকের।  

সাভার উপজেলা নির্বাহী অফিসার (ইউএনও) পারভেজুর রহমান বাংলানিউজকে বলেন, ঘটনাস্থলের সব খবর রাখছি, ফায়ার সার্ভিস ও নৌবাহিনীর দল কাজ করছেন। ওভারটেকিং ও ব্রিজের পাশে ডিভাইডার না থাকায় এ দুর্ঘটনা হয়েছে বলে ধারণা করা হচ্ছে। তবে, ট্যাক্সিক্যাবটিতে কোনো যাত্রী ছিল কি-না, তা এখনো নিশ্চিত হওয়া সম্ভব হয়নি।

ঝুকিপূর্ণ একটি এলাকায় ব্রিজের পাশে সীমানা পিলার কেনো নেই? এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, আমি এ বিষয়ে সড়ক ও জনপথ বিভাগ (সওজ) ও ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তার সঙ্গে কথা বলবো।  

বাংলাদেশ সময়: ১৭৪৮ ঘণ্টা, জুলাই ২৩, ২০১৯
এসএইচ

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।