ঢাকা, বুধবার, ১১ বৈশাখ ১৪৩১, ২৪ এপ্রিল ২০২৪, ১৪ শাওয়াল ১৪৪৫

জাতীয়

মাকে ফিরিয়ে দেওয়ার আকুতি শিশু তুবার

স্টাফ করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৯৪৬ ঘণ্টা, জুলাই ২৩, ২০১৯
মাকে ফিরিয়ে দেওয়ার আকুতি শিশু তুবার

লক্ষ্মীপুর: এক গুজবে সব শেষ হয়ে গেছে। ছোট্ট শিশু তুবা হারিয়েছে তার প্রিয় মাকে। নির্মম, নৃশংস এ হত্যাকাণ্ডের প্রতিবাদ জানাতে রাস্তায় এসেছে মা হারা শিশুটি। সে মাকে ফিরে পেতে চায়। 

রাজধানীর বাড্ডায় গুজবের গণপিটুনিতে নিহত তাসলিমা বেগম রেনুর শিশু কন্যা তাসলিমা তুবা (৪) মাকে ফিরে পাওয়ার আকুতি জানাচ্ছে।

মঙ্গলবার (২৩ জুলাই) দুপুরে লক্ষ্মীপুরের রায়পুরে গুজব ছড়িয়ে রেনুকে হত্যার প্রতিবাদ জানিয়ে হত্যাকারীদের গ্রেফতার ও শাস্তির দাবিতে মানববন্ধন করে স্থানীয়রা।

এতে রেনুর পরিবারের লোকজন, আত্মীয়-স্বজন ও শিশু তুবা অংশ নেয়।  

মানববন্ধনের ব্যানারে মায়ের ছবির দিকে অপলক তাকিয়ে ছিল তুবা। এ সময় তার চোখে-মুখে ছিল মাকে ফিরে পাওয়ার আকুতি।

রায়পুর উপজেলার উত্তর সোনাপুর গ্রামে নানার বাড়িতে নানু ও খালাদের সঙ্গে আছে তুবা। মায়ের কথা ভুলছেই না সে। কাঁদছে মায়ের জন্য। মার হাতে খাবে, মার সঙ্গে ঘুমাবে, এসব বায়না তার। মা ড্রেস নিয়ে ফিরবে এ অপেক্ষা করছে।

স্বজনরা জানায়, রেনুরা এক ভাই ও পাঁচ বোন। তিনি সবার ছোট। পড়ালেখা শেষে তিনি ঢাকায় আড়ং ও ব্র্যাকে চাকরি করেছিলেন। প্রাইভেটও পড়াতেন তিনি। পারিবারিক কলহের কারণে দুই বছর আগে বিবাহ বিচ্ছেদ হয় তার।

বিচ্ছেদের পর ছেলে তাসফিক আল মাহি (১১) বাবার সঙ্গে থাকে। মেয়ে তাসলিমা তুবা থাকতো মায়ের কাছে। মা শিশু তুবাকে ছেড়ে পরপারে চলে গেছেন। কিন্তু অবুঝ শিশু জানে না মা কোথায়।

আগামী বছরের জানুয়ারিতে বড় ভাই আলী আজগরের কাছে আমেরিকা যাওয়ার কথা ছিল রেনুর। আমেরিকা যাওয়া হল না তার। নির্মম মৃত্যুতে চলে গেলেন না ফেরার দেশে।

নিহত রেনুর বোন নাজমুন নাহার নাজমা বলেন, আদরের বোনটাকে এভাবে হারাতে হবে ভাবিনি। গুজব আমাদের সব শেষ করে দিয়েছে। গুজব ছড়িয়ে একজন নারীকে এভাবে প্রকাশ্যে হত্যা করা হয়েছে, এটি মেনে নেওয়া যায় না। আমরা এ হত্যাকাণ্ডের সুষ্ঠু তদন্ত ও দোষীদের গ্রেফতার করতে প্রধানমন্ত্রীর হস্তক্ষেপ কামনা করছি। যেন আর কোনো মানুষ এভাবে গুজবের বলি না হয়।

শনিবার (২০ জুলাই) সকালে ঢাকার উত্তর পূর্ব বাড্ডা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় মাঠে তাসলিমা বেগম রেনুকে প্রকাশ্যে পিটিয়ে হত্যা করা হয়। মেয়েকে ভর্তির জন্য ওই স্কুলে খোঁজ নিতে গিয়ে গুজবের কবলে পড়ে গণপিটুনিতে তার মৃত্যু হয়। পরের দিন রোববার (২১ জুলাই) রাতে রায়পুর উপজেলার উত্তর সোনাপুর গ্রামের পারিবারিক কবরস্থানে বাবার কবরের পাশে তাকে দাফন করা হয়। মঙ্গলবার সকালে রেনুর জন্য পরিবারিকভাবে দোয়া, মিলাদের আয়োজন ও কবর জিয়ারত করা হয়।

বাংলাদেশ সময়: ১৫৪৪ ঘণ্টা, জুলাই ২৩, ২০১৯
এসআর/আরবি/

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।