ঢাকা, শুক্রবার, ৬ বৈশাখ ১৪৩১, ১৯ এপ্রিল ২০২৪, ০৯ শাওয়াল ১৪৪৫

জাতীয়

হারিয়ে যাচ্ছে দেশি সুজি কচু

| বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৪৫৯ ঘণ্টা, জুলাই ২৩, ২০১৯
হারিয়ে যাচ্ছে দেশি সুজি কচু সুজি কচু। ছবি: বাংলানিউজ

ঠাকুরগাঁও: কালের পরিবর্তনে হারিয়ে যেতে বসেছে সুজি কচু। এটিকে গ্রামের ভাষায় বলা হত সজি কচু। একসময় প্রচুর পরিমাণে এ কচুর আবাদ হলেও এখন আর তেমন চোখে পড়ে না। কয়েক বছর আগেও অভাবের কারণে মানুষ এক বেলা এই সুজি কচু  (সজি) সিদ্ধ করে খেয়ে জীবন যাপন করতেন।

চাষে অনেক পরিশ্রম হওয়ায় বর্তমানে চাষিরা আবাদ করা প্রায় ছেড়েই দিয়েছেন এ কচু। আবাদ কম হওয়ায় বর্তমানে এ কচুর দামও অনেক বেশি।

বর্তমানে বাজারে সুজি কচু কেজিপ্রতি ৪০ থেকে ৫০ টাকায় বিক্রি হয়। কয়েক বছর আগেও এই সুজি কচুর দাম ছিল কেজিপ্রতি ১০-১৫ টাকা।

ঠাকুরগাঁও সদর উপজেলার বড়গাঁও ইউনিয়নের মিয়াজীপাড়া গ্রামের সুলতান বলেন, একসময় আমরা সুজি কচু অনেক আবাদ  করতাম, দাম কম এবং পরিশ্রম বেশি হওয়ায় সুজি কচু চাষাবাদ কমিয়ে দিয়েছি। আগে দুই থেকে তিন বিঘা জমিতে আবাদ করতাম এখন করি পাঁচ থেকে দশ কাঠা জমিতে।  

ওই গ্রামের বৃদ্ধ হুজেত আলী জানান, ১০-১৫ বছর আগে মানুষের যখন অভাব-অনটন ছিল। যখন দু’বেলা দু’মুঠো ভাত খাবার পাচ্ছিল না তখন মানুষ জমিতে পড়ে থাকা সুজি কচুর মুড়া এনে সিদ্ধ করে খেত। তখনকার যুগে মানুষ খুব কষ্ট করে জীবনযাপন করতো। সুজি কচুর আবাদে পরিশ্রম বেশি ও ফলন কম হওয়ায় মানুষ আর আগের মত চাষাবাদ করে না। তাই দিন দিন হারিয়ে যাচ্ছে এই কচু। কিছু কিছু এলাকায় সুজি কচুর আবাদ দেখা গেলেও তা শুধু নিজেদের খাওয়ার জন্যই  করা হয়।

ঠাকুরগাঁও সদর উপজেলার মিয়াজীপাড়া গ্রামের ব্যবসায়ী নজরুল জানান, আগে যখন আমরা ব্যবসা করতাম তখন মানুষের বাড়িতে বাড়িতে গিয়ে সুজি কচু নিয়ে হাট-বাজারে বিক্রি করতাম। এখন সুজি কচু নিতে হলে আমাদের যেতে হয় ঠাকুরগাঁও আড়তে। কিন্তু এখন আর আগের মতো দেশি সুজি কচু পাওয়া যায় না। যা পাওয়া যায় বগুড়ার সুজি কচু।

ঠাকুরগাঁও সদর উপজেলার কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপ কর্মকর্তা আনিসুর রহমান জানান, একসময় ঠাকুরগাঁওয়ে অনেক বেশি সুজি কচুর চাষাবাদ হত। কিন্তু এখন মানুষ আর বিক্রির জন্য সুজি কচু আবাদ করে না। যা করে শুধু নিজের খাওয়ার জন্য। আবার কিছু কিছু এলাকায় উঁচু জমিতে বাণিজ্যিকভাবে দেশি সুজি কচু বাদ দিয়ে বগুড়ার কচু আবাদ করা হচ্ছে।

বাংলাদেশ সময়: ১০৫৮ ঘণ্টা, জুলাই ২৩, ২০১৯
আরএ

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।