ঢাকা, শুক্রবার, ১৩ বৈশাখ ১৪৩১, ২৬ এপ্রিল ২০২৪, ১৬ শাওয়াল ১৪৪৫

জাতীয়

তিস্তার পানি বিপদসীমা ছুঁই ছুঁই, ফের বন্যার পদধ্বনি

খোরশেদ আলম সাগর, ডিস্ট্রিক্ট করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ০১৪৬ ঘণ্টা, জুলাই ২৩, ২০১৯
তিস্তার পানি বিপদসীমা ছুঁই ছুঁই, ফের বন্যার পদধ্বনি

লালমনিরহাট: উজানের পাহাড়ি ঢল ও ভারী বর্ষণে তিস্তার পানি বিপদসীমা ছুঁই ছুঁই করছে। ফের বন্যার পদধ্বনিতে শঙ্কিত লালমনিরহাটের তিস্তা পাড়ের হাজারো পরিবার। 

সোমবার (২২ জুলাই) সন্ধ্যা ৬টায় দেশের বৃহত্তম সেচপ্রকল্প তিস্তা ব্যারেজ ডালিয়া পয়েন্টে পানি প্রবাহ রেকর্ড করা হয় ৫২ দশমিক ৬০ সেন্টিমিটর। যা (স্বাভাবিক ৫২ দশমিক ৬০সে. মি.) বিপদসীমা বরাবরে প্রবাহিত হচ্ছে।

এর আগে একই দিন সকাল ৯টা, দুপুর ১২টায় ও ৩টায় বিপদসীমার ২ সেন্টিমিটার নীচ দিয়ে প্রবাহিত হলেও তিন ঘণ্টা পরে তা বেড়ে গিয়ে সন্ধ্যা ৬টায় বিপদসীমা বরাবর প্রবাহিত হচ্ছে। যা ক্রমেই বৃদ্ধি পাচ্ছে। এতে ফের বন্যার শঙ্কায় রয়েছে তিস্তাপাড়ের মানুষ।

স্থানীয়রা জানান, উজানের পাহাড়ি ঢল ও ভারী বৃষ্টিতে তিস্তা নদীর পানি প্রবাহ বৃদ্ধি পেয়েছে। এতে লালমনিরহাটের ৫টি উপজেলার তিস্তা অববাহিকার চরাঞ্চল ও নিম্নাঞ্চলগুলো প্লাবিত হয়ে প্রায় ২/৩ হাজার পরিবার পানিবন্দি হয়ে পড়েছে। এসব অঞ্চল গত ১০ জুলাই শুরু হওয়া সপ্তাহব্যাপী বন্যায় পানিবন্দি থেকে সবেমাত্র মুক্তি পেয়েছেন। বন্যার পানি নেমে যেতে না যেতেই ফের বন্যার আশঙ্কায় আতংকিত হয়ে পড়েছেন তিস্তার চরাঞ্চল ও নিম্নাঞ্চলের মানুষ।  

তিস্তার পানি প্রবাহ বৃদ্ধি পাওয়ায় জেলার পাটগ্রাম উপজেলার দহগ্রাম, হাতীবান্ধার সানিয়াজান, গড্ডিমারী, সিন্দুর্না, পাটিকাপাড়া, সিংগিমারী, কালীগঞ্জ উপজেলার ভোটমারী, কাকিনা, আদিতমারী উপজেলার মহিষখোচা, সদর উপজেলার খুনিয়াগাছ, রাজপুর ও গোকুন্ডা ইউনিয়নের তিস্তা নদীর চরাঞ্চল প্লাবিত হয়ে পড়েছে। ফের পানিবন্দি হতে শুরু করেছে এসব এলাকার নিম্নাঞ্চলে বসবাসকারী পরিবারগুলো। এসব অঞ্চলে বিগত বন্যায় শুরু হওয়া ত্রাণ বিতরণ কার্যক্রম চলছে রয়েছে বলে দাবি করেছে জেলা প্রশাসন।

আদিতমারী উপজেলার মহিষখোচা ইউনিয়নের তিস্তার চরাঞ্চল পাসাইটারী গ্রামের মানিক মিয়া ও মজমুল হক   বাংলানিউজকে জানান, গত বন্যার পানি দুই দিন হলো নেমে গেছে। ক্ষতিগ্রস্ত ঘরবাড়ি মেরামত শুরু করেছেন অনেকেই। এরই মধ্যে সোমবার দুপুর থেকে তিস্তা নদীর পানি বেড়ে গিয়ে বিকেলে ফের পানিবন্দি হয়ে পড়েছেন তারা। এখন ঘরে পানি প্রবেশ করেছে। আরো বেড়ে গেলে রাতেই রাস্তাঘাট ডুবে গিয়ে ফের দুর্ভোগে পড়ার আশঙ্কায় শঙ্কিত তারা।

হাতীবান্ধা উপজেলার পাটিকাপাড়া ইউনিয়নের চর হলদিবাড়ি গ্রামের শফিকুল ইসলাম বাংলানিউজকে জানান, গত বন্যার পানি নেমে যেতে না যেতেই সোমবার দুপুর থেকে ফের পানিবন্দি হয়ে পড়েছে চরাঞ্চল। পানি যত বাড়ছে পানিবন্দি পরিবারের সংখ্যা ততই বাড়ছে বলেও জানান তিনি।

দেশের বৃহত্তম সেচ প্রকল্প তিস্তা ব্যারেজের ডালিয়ার নির্বাহী প্রকৌশলী রবিউল ইসলাম বাংলানিউজকে বলেন, উজানের পাহাড়ি ঢেউয়ে তিস্তার পানি প্রবাহ বেড়ে গিয়ে সন্ধ্যা ৬টায় বিপদসীমা বরাবর প্রবাহিত হচ্ছে। ব্যারেজ রক্ষার্থে সবগুলো জলকপাট খুলে দিয়ে পানি প্রবাহ নিয়ন্ত্রণ করা হচ্ছে। এতে তিস্তার চরাঞ্চল ও নিম্নাঞ্চলগুলো প্লাবিত হয়েছে বলেও জানান তিনি।

লালমনিরহাট জেলা প্রশাসক আবু জাফর বাংলানিউজকে বলেন, তিস্তা নদীর পানি প্রবাহ বিপদসীমা বরাবরে প্রবাহিত হচ্ছে। সার্বক্ষণিক তিস্তাপাড়ের মানুষের খোঁজ খবর নেওয়া হচ্ছে। বিগত বন্যায় শুরু হওয়া ত্রাণ বিতরণ কার্যক্রম এসব এলাকায় চলছে। ফের বন্যা হলে মোকাবেলা করতে পর্যাপ্ত ত্রাণ মজুদ রয়েছে।  

বাংলাদেশ সময়: ২১৪২ ঘণ্টা, জুলাই ২২, ২০১৯
এসএইচ

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।