ঢাকা, শনিবার, ৭ বৈশাখ ১৪৩১, ২০ এপ্রিল ২০২৪, ১০ শাওয়াল ১৪৪৫

জাতীয়

পানিতে তলিয়ে যাওয়া ‘চরের বাতিঘর’ ভাঙনের ঝুঁকিতে

| বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ০০৪৮ ঘণ্টা, জুলাই ২২, ২০১৯
পানিতে তলিয়ে যাওয়া ‘চরের বাতিঘর’ ভাঙনের ঝুঁকিতে পানিতে তলিয়ে গেছে ‘চরের বাতিঘর’খ্যাত স্কুলটি। আছে ভাঙনের ঝুঁকিও। ছবি: বাংলানিউজ

মাদারীপুর: মাদারীপুরের শিবচর উপজেলার পদ্মা নদীবেষ্টিত বিস্তীর্ণ জনপদ তলিয়ে গেছে বন্যার পানিতে। পানি বৃদ্ধির সঙ্গে সঙ্গে প্রবল আক্রোশে ভাঙন শুরু হয়েছে পদ্মায়। পদ্মা নদীর চরাঞ্চল নিয়ে গঠিত বন্দোরখোলা ইউনিয়নের মাধ্যমিক বিদ্যালয়টি নদী ভাঙনের হুমকিতে রয়েছে। তলিয়ে গেছে বিদ্যালয়ের চারপাশসহ পুরো চরাঞ্চল। 

পদ্মার তীরে অবস্থিত বিদ্যালয়টির নাম নূরুদ্দিন মাদবরের কান্দি এস.ই.এস.ডি.পি মডেল উচ্চ বিদ্যালয়। মাদারীপুর জেলার শিবচর উপজেলার দুর্গম চরাঞ্চলের একটি গ্রাম নূরুদ্দিন মাদবরের কান্দিতে অবস্থিত এই বিদ্যালয়।

এটি চরাঞ্চলের মানুষের কাছে ‘চরের বাতিঘর’ হিসেবে সমধিক পরিচিত।

সরেজমিনে দেখা গেছে, চলতি বর্ষা মৌসুমে পাল্টে গেছে চরের চিত্র। পানিতে ডুবে গেছে পুরো চরাঞ্চলের মানুষের বসতবাড়ি, রাস্তাঘাট, বাজারসহ নানা স্থাপনা।

পদ্মা নদী থেকে সামান্য দূরত্বে অবস্থিত এস.ই.এস.ডি.পি মডেল উচ্চ বিদ্যালয়টি রয়েছে ভাঙনের ঝুঁকিতে। বর্ষার শুরুতেই পানিতে তলিয়ে গেছে বিদ্যালয়ের প্রাঙ্গনসহ পুরো এলাকা। ফলে পাঠদান বন্ধ রয়েছে। ভাঙনের ঝুঁকিতে থাকায় বিদ্যালয়ের বেঞ্চ, টেবিলসহ প্রয়োজনীয় সব আসবাবপত্র সরিয়ে নিরাপদ স্থানে নিয়ে যাওয়া হয়েছে।

পানিতে তলিয়ে গেছে ‘চরের বাতিঘর’খ্যাত স্কুলটি।  আছে ভাঙনের ঝুঁকিও।  ছবি: বাংলানিউজস্থানীয়দের সঙ্গে আলাপ করে জানা গেছে, ২০০৯ সালে চরের নুরুদ্দিন মাতদরের কান্দি গ্রামে স্থাপিত হয় এসইএসডিপি মডেল উচ্চ বিদ্যালয়টি। উপজেলার চরাঞ্চলের  বন্দোরখোলা ইউনিয়নের মমিন উদ্দিন হাওলাদারকান্দি. জব্বার আলী মুন্সীকান্দি, বজলু মোড়লের কান্দি, মিয়া আজম বেপারীর কান্দি, রহমত হাজীর কান্দি, জয়েন উদ্দিন শেখ কান্দি, মসত খাঁর কান্দিসহ প্রায় ২৪ টি গ্রাম ও ফরিদপুর জেলার সদরপুর উপজেলার চর নাসিরপুরসহ বেশ কয়েকটি গ্রামের ছেলে-মেয়েরা এই বিদ্যালয়ে লেখাপড়া করছে। তবে বর্ষা মৌসুমে চরের রাস্তাঘাট তলিয়ে যাওয়ায় যোগাযাগ ব্যবস্থা ভেঙে পরেছে। এবং বিদ্যালয়টির প্রাঙ্গন তলিয়ে গেছে পানিতে। বিদ্যালয়ের পেছনে ২ শত মিটারের মধ্যেই রয়েছে প্রমত্ত পদ্মা নদী। চলতি বর্ষা মৌসুমে বিদ্যালয়টি নদীগর্ভে বিলীন হয়ে যাওয়ার প্রবল আশঙ্কা রয়েছে।

স্থানীয় কৃষক আহমাদ আলী বাংলানিউজকে বলেন, ‘প্রতি বছরই পদ্মানদী ভাঙে। ভাঙতে ভাঙতে স্কুলের কাছে চলে এসেছে। এবারের ভাঙনে আর রক্ষা পাবে বলে মনে হয় না। এই স্কুলটি চরের ছেলেমেয়েদের লেখাপড়ার এক অন্যতম জায়গা ছিল। দূরদূরান্তের চরের ছেলেমেয়েরা এখানে পড়তে আসতো। ’

তিনি আরো বলেন, বর্ষা আসলেই লেখাপড়া বন্ধ হয়ে যায় চরের ছেলেমেয়েদের। বাড়ি-ঘর ডুবে যায়, স্কুল-মাদরাসা ডুবে যায় পানিতে।

বিদ্যালয়টির প্রধান শিক্ষক আবজাল হোসেন বাংলানিউজকে জানান, ‘শিবচরের মূল ভূখণ্ডের সঙ্গে যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন হয়ে গেছে চরের। তলিয়ে গেছে পাকা সড়ক। বিদ্যালয়ের মাঠ ও আশেপাশে প্রচুর পানি। পদ্মা নদী বিদ্যালয়টির ঠিক পেছনেই। আমরা আসবাবপত্র সরিয়ে মূল ভূখণ্ডে নিয়ে এসেছি। ভাঙনের ঝুঁকিতে রয়েছে আমাদের বিদ্যালয়। বন্যার কারণে লেখাপড়াও বিঘ্ন হচ্ছে। তবে বিদ্যালয়ের জন্য মূল ভূখন্ডে জায়গা নির্ধারণ করা হয়েছে। ভেঙে গেলে পুনরায় সেখানে তোলা হবে। ’

বাংলাদেশ সময়: ২০৪৮ ঘণ্টা, জুলাই ২১, ২০১৯
এমএমইউ

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।
welcome-ad