তিনি বলেন, প্রিয়া সাহা অভিযোগ করেছেন মুসলিম মৌলবাদীরা এ ঘটনা ঘটিয়েছে। এটাও অসত্য।
একইসঙ্গে কেউ যেন এ অভিযোগে বিভ্রান্ত হয়ে সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি বিনষ্ট না করেন এবং এ ঘটনাকে কেন্দ্র করে কেউ আবার ফায়দা লুটে নিতে পাল্টা মিছিল মিটিং না করেন সে আহ্বানও জানান গণপূর্ত মন্ত্রী।
রোববার (২১ জুলাই) সচিবালয়ে গৃহায়ন ও গণপূর্ত মন্ত্রণালয়ের সম্মেলন কক্ষে মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পকে অভিযোগ দেওয়া প্রিয়া সাহার ইস্যুতে এক সংবাদ সম্মেলনে তিনি এ আহ্বান জানান।
গণপূর্ত মন্ত্রী বলেন, প্রিয়া বালা বিশ্বাস (প্রিয়া সাহা) দেশের বাইরে গিয়ে অভিযোগটি করেছেন যে, তাদের ঘরবাড়ি জ্বালিয়ে দেওয়া হয়েছে, জমি নিয়ে নেওয়া হয়েছে, এটা সম্পূর্ণ অসত্য, উদ্দেশ্যপ্রণোদিত এবং কোনো অসৎপরিকল্পনা থেকেও তিনি এ জাতীয় অভিযোগ করতে পারেন।
তিনি বলেন, প্রিয় বালা বিশ্বাস মার্কিন প্রেসিডেন্টের কাছে অভিযোগ করেছেন বাংলাদেশে ৩ কোটি ৭০ হিন্দু-বৌদ্ধ-খ্রিস্ট্রান ‘ডিজঅ্যাপিয়ার’ হয়েছেন। আইনের ভাষায় ‘ডিজঅ্যাপিয়ার’ হচ্ছে গুম হয়ে যাওয়া। আমার নির্বাচনি এলাকা তথা প্রিয় বালা বিশ্বাসের বাবার বাড়ির এলাকায় অন্য ধর্মের একজনও গুম হয়নি। আমি চ্যালেঞ্জ করে বলতে পারি আমার এলাকা হিন্দু-বৌদ্ধ-খ্রিস্টান সব সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতির অপূর্ব নিদর্শনের একটি শান্তিপূর্ণ সহাবস্থানের এলাকা। এখানে ধর্মীয় দৃষ্টিকোণ থেকে কখনো কেউ অবিচারের স্বীকার হয়নি।
তিনি বলেন, আমার নিজের গ্রামের বাড়ি নাজিরপুর। নাজিরপুর থানার মাটিভাঙা ইউনিয়নের বাসিন্দা আমি। আমার ইউনিয়নের চর বানিয়ারী গ্রামের প্রিয় বালা বিশ্বাস নামের এক ব্যক্তি মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের কাছে কতগুলো মিথ্যা অভিযোগ করেছেন। প্রিয় বালা বিশ্বাসের বাবার নাম নজেন্দ্রলাল বিশ্বাস। তিনি বিবাহ সূত্রে যশোরের অধিবাসী।
আমি সেই এলাকার সংসদ সদস্য এবং একই এলাকার অধিবাসী হিসেবে দেশবাসীকে এ বিষয়ে অভিহিত করছি যে, প্রিয় বালা বিশ্বাসের বাসা চর বানিয়ারী গ্রামের হলেও এখানে তার নিজস্ব কোনো সম্পত্তি বা বাড়িঘর নেই। তিনি এ গ্রামে বসবাসও করেন না। এ গ্রামে তার বাবার পৈত্রিক সম্পত্তি ও ভাইদের সম্পত্তি রয়েছে।
তিনি বলেন, তার ভাই জগদীস চন্দ্র বিশ্বাস একজন অবসারপ্রাপ্ত সরকারি কর্মকর্তা। বাড়িতে কেউ থাকেন না। একটি পরিত্যক্ত ঘরে রাতে আগুন লাগে। এ ঘটনাকে কেন্দ্র করে জগদীস বিশ্বাসের কেয়ারটেকার কমলেশ বিশ্বাস নাজিরপুর থানায় একটি অভিযোগ দায়ের করেন। এ অভিযোগে কোনো ব্যক্তির নাম উল্লেখ করেননি, এমনকি কাউকে সন্দেহ করেন এমন কোনো নামও উল্লেখ করেননি। এজাহারে সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি নষ্ট করার জন্য কোনো মৌলবাদীরা এ ঘটনা ঘটিয়েছে এমন শঙ্কার কথাও বলা হয়নি।
‘এই মামলাটি পুলিশ তদন্ত করছে। এছাড়া এ এলাকায় বলেশ্বর নদীতে চর জেগে ওঠায় বলেশ্বরের দুই পাড়ের লোকেরা সরকারের খাস জমি দাবি করা নিয়ে দীর্ঘদিনের বিরোধ রয়েছে। এ বিরোধকে কেন্দ্র করে অসংখ্য মামলা রয়েছে। এ বিষয়ে সম্প্রতি একটি মামলা হয়েছে, সে মামলার বাদী হচ্ছেন কমলেশ বিশ্বাস’।
রেজাউল করিম বলেন, কোনোভাবেই আমার এলাকায় প্রিয় বালা সাহা অথবা প্রিয়া বালা বিশ্বাসের বাড়ি ঘর কেউ পুড়িয়ে দেয়নি। তার জমিজমা কেউ নেয়নি। তিনি বা তার পরিবারের কোনো সদস্য থানায় মামলাও করেননি।
গণমাধ্যমকর্মীদের উদ্দেশ্যে তিনি বলেন, আপনাদের স্থানীয় প্রতিনিধির মাধ্যমে বা নিজেরাও অনুসন্ধান করে দেখতে পারেন যে, আমার এলাকায় একজন হিন্দুও কোনোভাবে গুম হয়েছে, এ জাতীয় অভিযোগের কোনো সত্যতা আছে কিনা। এ কারণেই পিরোজপুর জেলা পুজা পরিষদের সভাপতি বিমল মন্ডল, হিন্দু-বৌদ্ধ-খ্রিস্টান ঐক্য পরিষদের সভাপতি তুষার মজুমদার তারা শনিবার বিবৃতি দিয়েছেন যে, প্রিয়া বালার এ বক্তব্যের সঙ্গে কেউ একমত নন।
বাংলাদেশ সময়: ১৭২৪ ঘণ্টা, জুলাই ২১, ২০১৯
জিসিজি/জেডএস