ঢাকা, শুক্রবার, ১৩ বৈশাখ ১৪৩১, ২৬ এপ্রিল ২০২৪, ১৬ শাওয়াল ১৪৪৫

জাতীয়

ছেলেধরা সন্দেহে নারী হত্যা, ৫০০ জনের বিরুদ্ধে মামলা

| বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ০৫১৩ ঘণ্টা, জুলাই ২১, ২০১৯
ছেলেধরা সন্দেহে নারী হত্যা, ৫০০ জনের বিরুদ্ধে মামলা

ঢাকা: রাজধানীর বাড্ডায় ছেলেধরা সন্দেহে একটি স্কুলে গণপিটুনিতে মানসিক অসুস্থ এক নারী নিহত হওয়ার ঘটনায় অজ্ঞাতপরিচয় ৪০০ থেকে ৫০০ জনের বিরুদ্ধে হত্যা মামলা দায়ের করা হয়েছে।

শনিবার (২০ জুলাই) রাতে বাড্ডা থানায় মামলাটি দায়ের করেন নিহত নারীর ভাগনে নাসির উদ্দিন।

মামলায় বলা হয়েছে, অতর্কিতভাবে ওই নারীকে স্কুলের অভিভাবক ও উৎসুক জনতাসহ অনেকে গণপিটুনি দেন।

এতে তিনি মারা যান। এ ঘটনায় প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষভাবে আনুমানিক ৪০০ থেকে ৫০০ জন অজ্ঞাতপরিচয় ব্যক্তি জড়িত।

বাড্ডা থানার ডিউটি অফিসার উপ পরিদর্শক (এসআই) মাসুদুর রহমান বাংলানিউজকে বলেন, মামলার বাদী নিহত নারীর ভাগিনে নাসির উদ্দিন। মামলাটি তদন্ত করার দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে বাড্ডা থানার এসআই সোহরাব হোসেনকে।

এর আগে শনিবার রাতে ঢাকা মেডিকেল কলেজ (ঢামেক) হাসপাতালে নিহত নারীর মরদেহ শনাক্ত করেন তার ভাগনে ও বোন রেহানা। তারা জানান, নিহত নারীর নাম তসলিমা বেগম রেনু। ১১ বছরের এক ছেলে ও চার বছর বয়সী এক মেয়ের মা তিনি। আড়াই বছর আগে তার স্বামী তসলিম উদ্দিনের সঙ্গে তার বিবাহ বিচ্ছেদ হয়। এরপর থেকে ছেলে আল মাহির ও মেয়ে তসলিমকে নিয়ে মহাখালী ওয়ারলেস এলাকায় একটি বাড়িতে থাকতেন তিনি।

নাসির উদ্দিন বাংলানিউজকে বলেন, রেনু মানসিক রোগে ভুগছিলেন। তিনি দীর্ঘদিন অসুস্থ ছিলেন। তার চার বছর বয়সী মেয়েকে স্কুলে ভর্তি করানোর জন্য তিনি এক স্কুল থেকে আরেক স্কুলে ঘুরছিলেন। এ কারণেই হয়তো শনিবার তিনি বাড্ডার ওই স্কুলটিতে যান।

বাড্ডা থানায় দায়ের করা মামলার এজাহারে উল্লেখ করা হয়েছে, রেনু তার মেয়েকে ভর্তি করার জন্য স্কুলে যান। কিন্তু মানসিক অসুস্থতার কারণে তার আচরণ অস্বাভাবিক ছিল। এজন্য স্কুলের অনেকেই তাকে ছেলেধরা হিসেবে সন্দেহ করছিল। পরে স্কুলের প্রধান শিক্ষক তার সঙ্গে কথা বলার জন্য নিজের রুমে নিয়ে যান। কিন্তু স্কুল প্রাঙ্গণে তার অস্বাভাবিকতা দেখে অনেকেই বের করে মারধর করতে চাইছিল। প্রধান শিক্ষক রেনুকে বাইরে বের করে দিচ্ছেন না কেনো, এ জন্য তারা হৈ হুল্লোড় করছিলেন। এসময় প্রধান শিক্ষক তাকে বাইরে বের না করলেও স্কুলের কিছু অভিভাবক ও বাইরে থেকে আসা উৎসুক জনতা তার রুমের গেট ভেঙে রেনুকে ছেলেধরা বলে বের করে নিয়ে মারধর করেন। এতে গুরুতর আহত হন রেন।  

এ অবস্থায় তাকে ঢামেক হাসপাতালে নেওয়া হলে কর্তব্যরত চিকিৎসক মৃত ঘোষণা করেন। এ ঘটনায় এ পর্যন্ত কাউকে গ্রেফতার কিংবা আটক করা হয়নি বলে ওই পুলিশ কর্মকর্তা জানান।

বাংলাদেশ সময়: ০১০৯ ঘণ্টা, জুলাই ২১, ২০১৯
এজেডএস/টিএ

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।