ঢাকা, বৃহস্পতিবার, ১২ বৈশাখ ১৪৩১, ২৫ এপ্রিল ২০২৪, ১৫ শাওয়াল ১৪৪৫

জাতীয়

ফরিদপুরের চার ইউনিয়নের ৪ হাজার পরিবার পানিবন্দি

ডিস্ট্রিক্ট করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ২২১৩ ঘণ্টা, জুলাই ২০, ২০১৯
ফরিদপুরের চার ইউনিয়নের ৪ হাজার পরিবার পানিবন্দি

ফরিদপুর: ফরিদপুরের চরভদ্রাসনের চার ইউনিয়নে পানিবন্দি হয়ে পড়েছে অন্তত চার হাজার পরিবার। পানির নিচে তলিয়ে গেছে ঘর-বাড়ি ও ফসলি জমি। পানিবন্দি হয়ে দিশেহারা হয়ে পড়েছে নিম্ন আয়ের মানুষজন।

উপজেলার গাজীরটেক, হরিরামপুর, চরঝাউকান্দা ও চরভদ্রাসন ইউনিয়ন পদ্মা নদী তীরবর্তী হওয়ায় প্লাবিত হয়েছে নিম্নাঞ্চল। বন্যার পানি অব্যাহতভাবে বাড়লেও শুরু হয়নি ত্রাণ কার্যক্রম।

স্থানীয় প্রশাসনের কাছে থাকা তালিকা অনুযায়ী মাত্র ৪০টি পরিবারকে দেওয়া হয়েছে শুকনো খাবার, এমন তথ্য জানিয়েছেন উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তা (পিআইও) আল সাইদ।

চরঝাউকান্দা ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) চেয়ারম্যান ফরহাদ হোসেন মৃধা বাংলানিউজকে জানান, তার ইউনিয়নের নদী সংলগ্ন গ্রামগুলোর প্রায় ৪০০ পরিবার পানিবন্দি হয়ে রয়েছে।  

গাজীরটেক ইউপি চেয়ারম্যান ইয়াকুব আলী বাংলানিউজকে জানান, তার ইউনিয়নের ১৪টি গ্রামের প্রায় এক হাজার মানুষ পানিবন্দি। এদের মধ্যে মাত্র ৪০টি পরিবারের মধ্যে বিতরণ করা হয়েছে শুকনো খাবার। সহায়তার পরিমাণ বাড়ানোর জরুরি বলেও মনে করেন তিনি।  

হরিরামপুর ইউপি চেয়ারম্যান আমীর হোসনে খান বাংলানিউজকে জানান, তার ইউনিয়নে ইট বিছানোসহ (এইচবিবি) কাঁচা প্রায় ৪৫ কিলোমিটার রাস্তা ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। ফলে হাট বাজারের সঙ্গে বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়েছে যোগাযোগ। পানিবন্দি রয়েছে ইউনিয়নে ছয়টি গ্রামের অন্তত দুই হাজার ২০০ পরিবার।

চরভদ্রাসন ইউপি চেয়ারম্যান আজাদ খান বাংলানিউজকে জানান, এখন পর্যন্ত পানিবন্দি রয়েছে তার ইউনিয়নের ছয়টি গ্রামের প্রায় ৪০০ পরিবার। ক্রমেই পানি বাড়ছে। এভাবে পানি বাড়তে থাকলে উপজেলার বিস্তির্ণ অঞ্চল পানিতে তলিয়ে যাওয়ার আশঙ্কা তৈরি হয়েছে।

শনিবার (২০ জুলাই) উপজেলার চরঝাউকান্দা ইউনিয়নের চর গোপালপুর এলাকা ঘুরে দেখা যায়, পরিবার-পরিজন নিয়ে উঁচু ও নিরাপদ স্থানে ছুটছেন মানুষ। গবাদিপশু নিয়েও বিপাকে পড়েছে মানুষ।
বন্যায় গবাদিপশু নিয়ে বিপাকে পড়েছে মানুষ।  ছবি: বাংলানিউজ
চর গোপালপুর গ্রামের বাসিন্দা হালিম চৌধুরী (৫৮) বাংলানিউজকে বলেন, পানি বাড়ার পর পরিবারের সবাই চর কল্যাণপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে আশ্রয় নিয়েছে। আমি গরুগুলো নিয়ে বাড়িতে ছিলাম। ঘরে পানি ওঠার কারণে নৌকায় শুয়ে রাত কাটাই। কিন্তু যেভাবে পানি বাড়ছে, তাতে করে আর ঘরে থাকা সম্ভব হবেনা।

পরিবার নিয়ে নিরাপদ আশ্রয়ের খোঁজে একই গ্রামের বাসিন্দা শেখ রহিম (৪৩) বাংলানিউজকে বলেন, নয়দিন ধরে পানিতে ডুবে গেছে বসতঘর। চিড়া-মুড়ি খেয়ে খুব কষ্টের মধ্যে কোনো রকমে পেট চালাচ্ছি।

পিআইও আল সাইদ বাংলানিউজকে বলেন, গাজীরটেক ইউনিয়নের ৪০ পরিবার ছাড়া আমাদের কাছে এখনো কোনো তালিকা আসেনি। আর তাই সঠিকভাবে বলা যাচ্ছে না বন্যাকবলিত পরিবারের সংখ্যা।  

বন্যাদুর্গতদের সহায়তার ব্যাপারে তিনি বলেন, জেলা থেকে ত্রাণ সামগ্রী বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে, তবে তা এখনো এসে পৌঁছায়নি। সামগ্রী পেলে সামগ্রিকভাবে কার্যক্রম শুরু করতে পারবো।

বাংলাদেশ সময়: ১৮১০ ঘণ্টা, জুলাই ২০, ২০১৯
এসআরএস

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।