ঢাকা, শুক্রবার, ১৩ বৈশাখ ১৪৩১, ২৬ এপ্রিল ২০২৪, ১৬ শাওয়াল ১৪৪৫

জাতীয়

নকল রুটি মেকারে সারাদেশ সয়লাব, দাবি হুমায়ুনের

স্পেশাল করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৮৪১ ঘণ্টা, জুলাই ২০, ২০১৯
নকল রুটি মেকারে সারাদেশ সয়লাব, দাবি হুমায়ুনের

ঢাকা: মাগুরার হুমায়ুন কবীরের কাঠের ‘লাইবা রুটি মেকার’ উদ্ভাবিত হওয়ায় গৃহিণীদের কষ্টের পরিসমাপ্তি ঘটেছে। ২০১১ সালে দেশে প্রথম তিনি এই রুটি মেকারের উদ্ভাবনের খবরের মাধ্যমে হৈ-চৈ ফেলে দেন।

অল্প সময়ে ও কম পরিশ্রমে পূর্ণিমার চাঁদের মতো গোল রুটি তৈরিতে সক্ষম লাইবা রুটি মেকার। এই রুটি মেকার বাজারে আসার পর ক্রেতাদের মধ্যে ব্যাপক চাহিদা বাড়ে।

আর এ সুযোগকে কাজে লাগিয়ে বহু অসাধু ব্যবসায়ী নকল কাঠের অকেজো রুটি মেকার তৈরি করে বাজারজাত শুরু করে।  

রাজধানীর নিউমার্কেটসহ বিভিন্ন ক্রোকারিজের দোকান, সুপারমার্কেট ও দেশের বিভিন্ন বাজারে এখন নকল রুটি মেকারে সয়লাব হয়ে গেছে।  

এসব নকল রুটি মেকার ক্রয় করে ঠকছেন ক্রেতারা। এগুলোতে ঠিকমতো রুটি হয় না। হুমায়ুন কবীরের কাঠের লাইবা রুটি মেকার তৈরি হয় পদার্থ বিজ্ঞানের সুক্ষ্ম কিছু পরিমাপের ওপর নির্ভর করে।  

হুমায়ুন কবীর তার পেটেন্ট বইয়ের ড্রইংগুলো দেখিয়ে বলেন, যেকোনো কাঠমিস্ত্রী হুবহু এই মেশিন তৈরি করতে পারবেন, কিন্তু যেহেতু পদার্থ বিজ্ঞানের এই সুক্ষ্ম পরিমাপগুলো কেউ জানে না, তাই তাদের মেশিনগুলো আমার উদ্ভাবিত লাইবা রুটি মেকারের মতো শতভাগ সঠিকভাবে অতি অল্প চাপে কাগজের মতো পাতলা ও বড় রুটি হয় না।  

তিনি বলেন, নকলবাজরা বৈজ্ঞানিক ফর্মুলা না জেনে ভুল পদ্ধতিতে ও আন্দাজে কোনো পরিমাপ ছাড়াই বড় বড় সাইজের কাঠের রুটি মেকার তৈরি করছে। কাঠ সিজনিং না করে কাঁচা কাঠ দিয়ে রুটি মেকার তৈরি করায় কিছুদিন পরে কাঠ সামান্য বেঁকে গিয়ে রুটি একদিকে চিকন মোটা হচ্ছে, রুটি ছিঁড়ে যায়। মেশিন তৈরির সময় ময়েশ্চার লেভেল অ্যাডজাস্ট না করায় তাদের মেশিনে ওয়াটার লেভেল থাকছে না ও রুটি ঠিকমতো হচ্ছে না। তাদের মেশিনে কব্জা সেটিংয়ে তারা ভুল করে, ফলে রুটি বড় হচ্ছে না এবং অনেক চাপাচাপির পর লুচির মতো ছোট সাইজের রুটি হচ্ছে। তারা অরিজিনাল ফুট-কন্টেন্ট ক্লিংফিল্ম র‌্যাপিং পেপার এবং অন্যান্য একক্সেসরিজ না দিয়ে সাধারণ পলিথিন দিয়ে মানুষকে ধোঁকা দেয়। নকল রুটি মেকারের ভেতরে যে পলিথিন ও রং ব্যবহার করা হয় তা স্বাস্থ্যের জন্যও ক্ষতিকর।

এসব নকল রুটি মেকার তৈরি করে অসাধু ব্যক্তিরা সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ব্যাপক প্রচার করছে। ফলে সাধারণ মানুষ কোনোভাবেই বুঝতে পারছে না যে কোনটাতে রুটি হবে আর কোনটাতে হবে না। ।

হুমায়ুন কবীর তার লাইবা রুটি মেকারের ব্যাপারে ক্রেতাদের উদ্দেশে তিনটি চ্যালেঞ্জ ছুড়ে দিয়েছেন। আসল লাইবা রুটি মেকারে তিন বছরের শিশু সর্বনিম্ন ৮ ইঞ্চি রুটি বানাতে যদি না পারে, রুটি চারিদিকে সমানভাবে কাগজের মতো পাতলা যদি না হয় এবং রুটি ভাজার পর সেটি যদি সঠিকভাবে না ফোলে তাহলে মানি রিসিপ্ট দিয়ে তিনগুণ টাকা ফেরত দেবেন।  

বর্তমানে কপিরাইট অফিসের মাধ্যমে আইনি পদক্ষেপ নিয়েছেন কাঠের রুটি মেকারের উদ্ভাবক হুমায়ুন কবীর। ইতোমধ্যে তিনি কয়েকটি নকল রুটি মেকার কোম্পানিকে লিগ্যাল নোটিশ দিয়েছেন, কয়েকটি কোম্পানির বিরুদ্ধে মামলা প্রক্রিয়াধীন রয়েছে।
 
হুমায়ুন কবীর জানান, অনেকেই ঘরে বসে অনলাইনে তার এই রুটি মেকার মেশিন কিনছেন। লাইবা রুটি মেকারের ৫টি মডেল রয়েছে। হোম ইউজ প্রোডাক্ট সর্বনিম্ন ২ হাজার টাকা হতে সর্বোচ্চ সাড়ে ৩ হাজার টাকা। একটি রুটি মেকার ৫-৬ বছর থেকে ১৫ বছর পর্যন্ত ব্যবহার করা যাবে।  

বাংলাদেশ সময়: ১৪৩১ ঘণ্টা, জুলাই ২০, ২০১৯
এমআইএইচ/এএটি/এইচএ/

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।