ঢাকা, শনিবার, ১৩ বৈশাখ ১৪৩১, ২৭ এপ্রিল ২০২৪, ১৭ শাওয়াল ১৪৪৫

জাতীয়

খুলনায় বাবা-মেয়ে হত্যার দায়ে ৫ জনের ফাঁসি

সিনিয়র করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৯৩০ ঘণ্টা, জুলাই ১৬, ২০১৯
খুলনায় বাবা-মেয়ে হত্যার দায়ে ৫ জনের ফাঁসি ফাঁসির দণ্ডপ্রাপ্ত আসামিরা

খুলনা: খুলনায় ব্যাংক কর্মকর্তা পারভীন সুলতানাকে গণধর্ষণের পর বাবা ইলিয়াছ আলীসহ শ্বাসরোধে হত্যার দায়ে ৫ জনের ফাঁসির আদেশ দিয়েছেন আদালত।

ফাঁসির আসামিরা হলেন- লবণচরা থানাধীন বুড়ো মৌলভীর দরগা রোডের বাসিন্দা শেখ আব্দুল জলিলের ছেলে সাইফুল ইসলাম পিটিল (৩০), তার ভাই শরিফুল (২৭), আবুল কালামের ছেলে লিটন (২৮), অহিদুল ইসলামের ছেলে আবু সাইদ (২৫) ও মৃত সেকেন্দারের ছেলে আজিজুর রহমান পলাশ (২৬)। এদের মধ্যে শরিফুল পলাতক।

মঙ্গলবার (১৬ জুলাই) দুপুর সোয়া ২টায় খুলনার নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ৩ নং ট্রাইব্যুনালের বিচারক মহিদুজ্জামান এ রায় ঘোষণা করেন।  

রাষ্ট্রপক্ষে মামলাটি পরিচালনা করেছেন স্পেশাল পিপি অ্যাডভোকেট ফরিদ আহমেদ।

বহুল আলোচিত এ হত্যাকাণ্ডের ৩ বছর ৯ মাস ২৭ দিন পর খুলনার নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ৩ নং ট্রাইব্যুনালে রায় ঘোষণা হয়।  

এদিকে এ মামলার আসামিদের সর্বোচ্চ শাস্তি মৃত্যুদণ্ডের দাবি জানিয়েছেন নিহতের পরিবারের সদস্যরা। রাষ্ট্রপক্ষে মামলাটি পরিচালনা করেছেন স্পেশাল পিপি অ্যাডভোকেট ফরিদ আহমেদ। এছাড়া রাষ্ট্রপক্ষকে সহায়তায় রয়েছেন বাংলাদেশ মানবাধিকার বাস্তবায়ন সংস্থার পক্ষে অ্যাডভোকেট কাজী সাবিক্ষর আহমেদ, অ্যাডভোকেট মোমিনুল ইসলাম, অ্যাডভোকেট তসলিমা খাতুন ও অ্যাডভোকেট কুদরত-ই-খুদা।  

মামলা সূত্রে জানা গেছে, হত্যাকাণ্ডের এ মামলায় ২২ জন ও গণধর্ষণের মামলায় ২৮ জন সাক্ষীর সাক্ষ্য নিয়েছেন আদালত। আসামিদের মধ্যে ফৌজদারি কার্যবিধির ১৬৪ ধারায় ২ জনের স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দিতে রোমহর্ষক এ হত্যাকাণ্ডের বর্ণনা রয়েছে। চলতি বছরের ২৪ এপ্রিল খুলনার নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ৩ নং ট্রাইব্যুনালে মামলাটির যুক্তিতর্ক (আর্গুমেন্ট) শুরু হয়। মামলার তদন্তের সময় হত্যাকাণ্ডের সঙ্গে জড়িত ৫ জনের মধ্যে ৪ জন গ্রেফতার হয়। এছাড়াও গ্রেফতার করা হয় পিটিলের স্ত্রী আসমা খাতুন, নোয়াব আলি গাজী ও আসলাম মিস্ত্রি নামের একজন সন্দেহভাজনকে। তাদের মধ্যে লিটন ও সাঈদের স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দিতে উঠে আসে হত্যাকাণ্ডের ঘটনা।  

তারা আদালতে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দিতে বলে, ব্যাংক কর্মকর্তা পারভীন অফিসে আসা-যাওয়ার পথে আসামিরা কু-প্রস্তাবসহ নানাভাবে যৌন হয়রানি করতো। এর প্রতিবাদ করায় ঘটনার দিন রাতে বাড়ির দেয়াল টপকে ভেতরে প্রবেশ করে ৫ আসামি। এরপর অস্ত্রের মুখে জিম্মি করে পারভীনের বাবাকে শ্বাসরোধে হত্যা করা হয়। পাশের রুমে থাকা পারভীনকে ৫ জন মিলে গণধর্ষণের পর হত্যা করে সেফটিক ট্যাংকির মধ্যে বাবা ও মেয়ের মরদেহ ফেলে দেয়। পরে ঘরে লুট চালিয়ে পালিয়ে যায় তারা।  

নগরীর লবণচরা থানাধীন বুড়ো মৌলভীর দরগা এলাকার ৩ নং গলির ঢাকাইয়া হাউজ এপি ভিলা নামের বাড়িতে ২০১৫ সালের ১৮ সেপ্টেম্বর নৃশংস এ হত্যাকাণ্ডের ঘটনা ঘটে।  

এদিকে আসামিদের ফাঁসির রায় হওয়ায় সন্তোষ প্রকাশ করেছেন পারভীন সুলতানার ভাই রেজাউল আলম চৌধুরী বিপ্লব।  

তিনি বলেন, এ বিচারের রায়ে আমরা খুশি হয়েছি। সম্পূর্ণ আস্থা ছিলো বিচারকের প্রতি। সঠিক রায় পাবো এ ধারণা ছিলো। সঠিক রায় পেয়েছি।

বাংলাদেশ সময়: ১৫৩০ ঘণ্টা, জুলাই ১৬, ২০১৯
এমআরএম/জেডএস

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।

জাতীয় এর সর্বশেষ