ঢাকা, শুক্রবার, ১৩ বৈশাখ ১৪৩১, ২৬ এপ্রিল ২০২৪, ১৬ শাওয়াল ১৪৪৫

জাতীয়

জামালপুর-কুড়িগ্রাম-সিলেটে তীব্র বন্যা, অবনতি হবে আরও

সিনিয়র করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ০১৩০ ঘণ্টা, জুলাই ১৬, ২০১৯
জামালপুর-কুড়িগ্রাম-সিলেটে তীব্র বন্যা, অবনতি হবে আরও তিস্তার পানির তোড়ে ভাঙছে জনপদ, মাথায় হাতে হতাশ তিস্তাপাড়ের মানুষ

ঢাকা: দেশের উত্তর ও উত্তরপূর্ব জেলাগুলোয় তীব্র বন্যা পরিস্থিতির সৃষ্টি হয়েছে। আগামী ২৪ ঘণ্টায় পরিস্থিতি আরও অবনতির আশঙ্কা করছে পানি উন্নয়ন বোর্ড (পাউবো)।

এক পূর্বাভাসে বলা হয়েছে, ১৩টি নদীর পানি বিভিন্ন পয়েন্টে বিপদসীমার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। কোথাও কোথাও ১ মিটারের বেশি ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে।

ফলে সেসব এলাকায় তীব্র বন্যা পরিস্থিতির সৃষ্টি হয়েছে।

বিপদসীমার ১ মিটারের বেশি ওপর দিয়ে পানি প্রবাহিত হলে, সেই পরিস্থিতিকে তীব্র বন্যা পরিস্থিতি হিসেবে গণ্য করে পাউবোর বন্যা পূর্বাভাস ও সতর্কীকরণ কেন্দ্র।

১৩টি নদীর মধ্যে সুরমার পানি কানাইঘাটে বিপদসীমার ১১০ সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে, কুশিয়ারার পানি অমলশীদে বিপদসীমার ১৪৬ সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে, বাল্লায় খোয়াই নদীর পানি ১০৩ সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে।

এছাড়া ধরলার পানি কুড়িগ্রামে বিপদসীমার ১০৮ সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে, ব্রহ্মপুত্রের পানি চিলমারীতে বিপদসীমার ১০২ সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে, যমুনার পানি বাহাদুরাবাদে বিপদসীমার ১১৯ সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে এবং ফুলছড়িতে ১০৬ সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। ফলে জামালপুর, কুড়িগ্রাম, সিলেটে তীব্র বন্যা পরিস্থিতির সৃষ্টি হয়েছে। অন্য নদ-নদীর পানি বিভিন্ন পয়েন্টে বিপদসীমার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হলেও ১০০ সেন্টিমিটারের নিচে রয়েছে।

বন্যা পূর্বভাস ও সতর্কীকরণ কেন্দ্রের নির্বাহী প্রকৌশলী মো. আরিফুজ্জামান ভূঁইয়া জানিয়েছেন, আগামী ২৪ ঘণ্টায় কুড়িগ্রাম, জামালপুর, গাইবান্ধা, বগুড়া ও সিরাজগঞ্জ জেলায় বন্যা পরিস্থিতি অবনতি হতে পারে। অপরদিকে স্থিতিশীল অবস্থায় থাকবে নেত্রকোণা, সুনামগঞ্জ ও সিলেট জেলায় বন্যা পরিস্থিতি। আর লালমনিরহাট, চট্টগ্রাম ও বান্দরবান জেলার বন্যা পরিস্থিতির উন্নতি আগামী ২৪ ঘণ্টা অব্যাহত থাকবে।

আগামী বৃহস্পতিবার (১৮ জুলাই) নাগাদ ব্রহ্মপুত্র-যমুনা ও গঙ্গা-পদ্মা নদ-নদীর পানির সমতল বৃদ্ধি অব্যাহত থাকবে। বিপদসীমা অতিক্রম করতে পারে ধলেশ্বরীর পানি।

বাংলাদেশ ও ভারতের আবহাওয়া অফিসের বরাত দিয়ে বন্যা পূর্বাভাস ও সতর্কীকরণ কেন্দ্র আরও জানিয়েছে, বাংলাদেশের উত্তরাঞ্চল, উত্তর-পূর্বাঞ্চল এবং তৎসংলগ্ন ভারতের আসাম ও মেঘালয়ের বিস্তৃত এলাকায় আগামী ২৪ ঘণ্টায় মাঝারি থেকে ভারী এবং কোথাও কোথাও অতি ভারী বৃষ্টিপাতের সম্ভাবনা রয়েছে। এছাড়া দেশের উত্তর-পশ্চিমাঞ্চল সংলগ্ন ভারতের বিহার এবং নেপালে মাঝারি থেকে ভারী বর্ষণ হবে।

বিভিন্ন নদীর ৯৩টি পয়েন্ট পর্যবেক্ষণ করে পাউবো জানিয়েছে, ২৬টি পয়েন্টে বিভিন্ন নদীর পানি বিপদসীমার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। এতে ১০ জেলায় বন্যা পরিস্থিতির সৃষ্টি হয়েছে। তবে কোথাও কোথাও পরিস্থিতির উন্নতি হলেও প্রতিদিন নতুন নতুন এলাকা প্লাবিত হচ্ছে।

আবহাওয়া অধিদফতর জানিয়েছে, সোমবার (১৫ জুলাই) সন্ধ্যা ৬টা থেকে আগের ২৪ ঘণ্টায় দেশের সর্বোচ্চ ১২৬ মিলিমিটার বৃষ্টিপাত রেকর্ড করা হয়েছে নিকলিতে। আর সর্বোচ্চ তাপমাত্রা ৩৭ দশমিক ৮ ডিগ্রি সেলসিয়াস রেকর্ড করা হয়েছে যশোরে। এই অবস্থায় খুলনা বিভাগের ওপর দিয়ে মৃদু তাপপ্রবাহ বয়ে যাচ্ছে। আর বাতাসের আর্দ্রতার পরিমাণ রোববারের (১৪ জুলাই) চেয়ে ৩ ডিগ্রি কমে দাঁড়িয়েছে ৮৩ শতাংশে। ফলে খুলনা ও রাজশাহী বিভাগ ছাড়া দেশের অন্যান্য স্থানে তুলনামূলক কম গরম অনুভূত হচ্ছে।

এরইমধ্যে দেশে বৃষ্টিপাত কমতে শুরু করেছে। আগামী দুই দিনে আরও কমবে বলে আভাস দিয়েছে আবহাওয়া অফিস। এতে আগামী পাঁচ দিনে বন্যা পরিস্থিতি সামান্য পরিবর্তন হবে।

বাংলাদেশ সময়: ২১২৭ ঘণ্টা, জুলাই ১৫, ২০১৯
ইইউডি/জেডএস

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।