ঢাকা, শুক্রবার, ১৩ বৈশাখ ১৪৩১, ২৬ এপ্রিল ২০২৪, ১৬ শাওয়াল ১৪৪৫

জাতীয়

জামালপুরে পানিবন্দি ৫০ হাজার মানুষ

| বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ০১৪৬ ঘণ্টা, জুলাই ১৪, ২০১৯
জামালপুরে পানিবন্দি ৫০ হাজার মানুষ

জামালপুর: উজান থেকে নেমে আসা পাহাড়ি ঢলে জামালপুরের যমুনা তীরবর্তী এলাকায় দ্রুত গতিতে বন্যার পানি বাড়ছে। এতে জেলার প্রায় ৫০ হাজার মানুষ পানিবন্দি হয়ে পড়েছেন। 

জামালপুর পানি উন্নয়ন বোর্ডের গেজ পাঠক আব্দুল মান্নান জানান, জেলার ইসলামপুরের বাহাদুরাবাদ ঘাট পয়েন্টে শনিবার (১৩ জুলাই) দুপুরে যমুনা নদীতে বন্যার পানি বিপদসীমার ৫৮ সেন্টিমিটার উপর দিয়ে প্রবাহিত হয়েছে। গত ২৪ ঘণ্টায় ৬২ সেন্টিমিটার পানি বেড়েছে।

বর্তমানে এ পয়েন্টে পানির স্তর ২০ দশমিক ০৮ সেন্টিমিটার। এখানে পানির স্বাভাবিক স্তর হচ্ছে ১৯ দশমিক ৫০ সেন্টিমিটার।

যমুনায় দ্রুত গতিতে বন্যার পানি বাড়া অব্যাহত রয়েছে। এতে জেলার ইসলামপুর, দেওয়ানগঞ্জ, বকশীগঞ্জ, সরিষাবাড়ী ও মাদারগঞ্জ উপজেলার যমুনা তীরবর্তী এলাকায় ক্রমেই বন্যা পরিস্থিতির অবনতি হচ্ছে।
    
সরেজমিনে ঘুরে জানা গেছে, উজান থেকে নেমে আসা পাহাড়ি ঢল ও গত তিনদিনের টানা বর্ষণে জামালপুরের যমুনা তীরবর্তী এলাকায় দ্রুত গতিতে বন্যা পরিস্থিতির অবনতি হচ্ছে। বন্যার পানিতে ইতোমধ্যেই ইসলামপুরের চিনাডুলি ইউনিয়নের দক্ষিণ চিনাডুলি, দেওয়ানপাড়া, ডেবরাইপেচ, বলিয়াদহ, সিংভাঙা, পশ্চিম বামনা, পূর্ববামনা ও গিলাবাড়ী অঞ্চলসমূহের বিস্তীর্ণ জনপদ প্লাবিত হয়েছে।  

বন্যার পানির তীব্র স্রোতে চিনাডুলি ইউনিয়নের দেওয়ানপাড়া গ্রামের অন্তত ৩০টি বসতভিটা ভেঙে নদীতে বিলিন হয়ে গেছে। বন্যায় ক্ষতিগ্রস্তরা আশপাশের উঁচু রাস্তায় আশ্রয় নিয়ে মানবেতর জীবন যাপন করছেন।
 
ইসলামপুরের প্রজাপতি চরের শহিদুর রহমান বেপারি জানান, যমুনার মধ্যবর্তী দুর্গম হরিণধরা, জিগাতলা, বরুল, মন্নিয়া, প্রজাপতি, শিশুয়া, কাশাড়ীডোবা ও চেঙ্গানিয়া চরাঞ্চলে বন্যার পানি হু হু করে বাড়ছে। শনিবার সকাল থেকে দুপুরের মধ্যে এসব চরাঞ্চলের অন্তত ৫ হাজার বাড়িঘরে বন্যার পানি ঢুকেছে।  

জেলা পরিষদের সদস্য মো. ওয়ারেছ আলী জানান, ইসলামপুরে যমুনার মধ্যবর্তী দুর্গম চরাঞ্চল ছাড়াও যমুনা তীরবর্তী পূর্ব বেলগাছা, কুলকান্দি, মাইজবাড়ী, কাজলা ও কাঠমা গ্রামের অসংখ্য বাড়িঘরে বন্যার পানি ঢুকেছে।

এছাড়া জেলার মাদারগঞ্জের গোপিন্দি, কয়লাকান্দি, দেওয়ানগঞ্জের চুকাইবাড়ি ও চিকাজানি, বকশীগঞ্জের সাধুরপাড়া, মেরুরচর, নিলক্ষিয়া ও বগারচর এলাকার নিম্নাঞ্চলে বন্যার পানি হু হু করে ঢুকছে।

এদিকে, বন্যার্তদের মধ্যে শুকনো খবার ও নগদ টাকা বরাদ্দ করেছে জেলা প্রশাসন। জেলায় মোট ৯০ মেট্রিক চাল, ২ হাজার পেকেট শুকনো খাবার ও নগদ ২ লাখ টাকা বরাদ্দ করা হয়েছে। এছাড়া পরিস্থিতি আরো খারাপ হলে ৩৬০ মেট্রিক চাল ও নগদ ৫ লাখ টাকা মজুদ রাখা হয়েছে।  

জেলা ত্রাণ ও পুনর্বাসন কর্মকর্তা মো. নায়েব আলী জানান, জেলার ইসলামপুর ও দেওয়ানগঞ্জের বন্যার্তদের সাহায্যে ৪০ মেট্রিক টন চাল ও নগদ ১ লাখ টাকা বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে।  

অপরদিকে জেলার অপর ৫টি উপজেলার জন্য ৫০ মেট্রিক টন চাল ও নগদ ১ লাখ টাকা সমহারে বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে। এছাড়া ২ হাজার পেকেট শুকনো খাবার জেলার ৭টি উপজেলায় সমহারে বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে।  

বাংলাদেশ সময়: ২১৪২ ঘণ্টা, জুলাই ১৩, ২০১৯
আরবি/

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।