স্থানীয়দের মধ্যে প্রশ্ন উঠেছে এই চার সন্তানের ভবিষ্যত কী হবে? কে তাদের দেখভাল করবে আর বেঁচে থাকার চাহিদা মেটাবে কে?
স্থানীয়রা জানান, উপজেলার জাহাঙ্গীরনগর ইউনিয়নের রমজানকাঠী গ্রামের মৃত রজ্জব আলী হাওলাদারের ছোট ছেলে কামাল হাওলাদার দারিদ্রতার মধ্য দিয়েও চার সন্তান ও স্ত্রীকে নিয়ে জীবনযুদ্ধ চালিয়ে যাচ্ছিলেন। নিজের কোনো সহায়-সম্পত্তি না থাকলেও অন্যের জমিতে চাষাবাদ, আর ভ্যানগাড়ি চালিয়ে স্ত্রী ও সন্তানদের ভরণপোষণের ব্যবস্থা করে আসছিলেন।
বাড়ির পাশের লোকজন ও স্বজনদের কাছ থেকে জানা গেছে, বাড়ির পাশের পাটক্ষেতে বিদ্যুতের তার ছিঁড়ে পড়েছিল। যা কেউই জানতো না। সেই ক্ষেতে কাজ করতে গিয়ে প্রথমে মমতাজ বিদ্যুৎস্পৃষ্ট হয়ে মারা যান। এ দৃশ্য দেখার পর তাকে উদ্ধারে যান স্বামী কামাল। যদিও এর আগে সন্তানদের সেখানে যেতে বারণ করে গিয়েছিলেন তিনি। উদ্ধারে গিয়ে বিদ্যুৎস্পৃষ্ট হয়ে কামালও মারা যান।
স্থানীয়রা আরও জানান, পরে যদিও কামাল ও তার স্ত্রী মমতাজকে উদ্ধার করে পার্শ্ববর্তী উপজেলা উজিরপুর স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে যাওয়া হয়। তবে সেখানে পৌঁছানোর পরই চিকিৎসক তাদের মৃত ঘোষণা করেন।
এদিকে কৃষক দম্পতির মৃত্যুর খবর দ্রুতই ছড়িয়ে পড়ে গোটা এলাকায়। যা শুনে আশপাশের লোকজন ছাড়াও পাশের গ্রামগুলোর মানুষ মৃত কামাল ও মমতাজের বাড়িতে ছুটে আসেন। আর গত ২দিন ধরে এই কৃষক দম্পতির মৃত্যুর খবর পেয়ে যারা শোকাচ্ছন্ন বাড়িটিতে আসছেন তারা সবাই এতিম চার শিশুকে একনজর দেখে যাচ্ছেন। এই শিশুদের ভবিষ্যত নিয়ে চিন্তিত পড়েছেন তারা।
রমজানকাঠী গ্রামের বাসিন্দা চান্দু মোল্লা বলেন, এভাবে মা-বাবার একসঙ্গে মৃত্যু হবে, আর এতো অল্প বয়সে সন্তানগুলো বাবা-মাকে হারাবে তা গ্রামের কেউ কখনো ভাবেনি। এখনো অনেকে বিশ্বাস করতে পারছে না। চার শিশু সন্তানই বড্ড একা হয়ে গেলো। বাবা-মাকে হারিয়ে ওদের আর কেউ রইলো না। অনিশ্চয়তার পথে ওদের আগামীর ভবিষ্যত।
বাংলাদেশ সময়: ১১৫৩ ঘণ্টা, জুলাই ১৩, ২০১৯
এমএস/এএটি