শুক্রবার (১২ জুলাই) বিশ্বের দীর্ঘতম সমুদ্র সৈকত কক্সবাজারের মৈবাল পয়েন্টের ঝাউবাগানে শেষ হলো রাখাইনদের মনরাঙানো বর্ষা উৎসব। গত ২৪ মে শুরু হওয়া এ উৎসবের শুক্রবার ছিলো শেষদিন।
জানা গেছে, প্রতি বছর বৌদ্ধদের অন্যতম ধর্মীয় অনুষ্ঠান তিন মাসব্যাপী আষাঢ়ী পূর্ণিমার আগে (আষাঢ়ী পূর্ণিমা থেকে আশ্বিনী পূর্ণিমা পর্যন্ত) আড়াই থেকে তিনমাস সৈকতে এ উৎসব পালন করে থাকে রাখাইন সম্প্রদায়। এটি তাদের কোনো সামাজিক বা ধর্মীয় উৎসব নয়, শুধুমাত্র সবাই মিলে-মিশে বৃষ্টি এবং সাগরের জলে সিক্ত হয়ে মহা আনন্দে মেতে ওঠার জন্যই এ উৎসব।
সৈকতের ঝাউবাগানে গোল করে বসে মজার আড্ডায় মেতেছিল রাখাইন তরুণ-তরুণী উসিবু ও কেংগ্রীসহ ১৫জনের একটি দল।
কেংগ্রী ও উসিবু বলেন, এ উৎসবের সঙ্গে ধর্মীয় উৎসবের কোনো সম্পৃক্ততা নেই। সব দ্বিধাদ্বন্দ্ব, সংঘাত হানাহানি ভুলে সবাই মিলে নেচে গেয়ে আনন্দ উল্লাস করে সারাদিন মেতে থাকার জন্যই মূলত এ আয়োজন।
ঢাকা থেকে স্বামীর সঙ্গে উৎসবে যোগ দেন ইংলিশ মিডিয়াম স্কুলের শিক্ষক উমে রাখাইন। তিনি বলেন, উৎসবে এলেই একান্তই নিজের মতো কিছুটা সময় কাটানো যায়। অনেক পুরনো বন্ধু-বান্ধবের সঙ্গে দেখা হয়। তাই প্রতি বছর এ উৎসবে আসা।
উৎসবে এসে কেমন লাগছে? এমন প্রশ্নে রাখাইন যুবক আছিং রাখাইন বলেন, সবাই মিলে-মিশে বৃষ্টি এবং সাগরের জলে সিক্ত হয়ে আনন্দে মেতে ওঠার জন্যই মূলত এখানে আসা। অনেকেই এটিকে বর্ষাকালীন পিকনিকও বলছে। আমি বলবো, এ উৎসবের মধ্যদিয়ে বর্ষাকে বরণ করা।
রাখাইন নেত্রী মাটিন টিন জানান, ধর্মীয় রীতিনীতির সঙ্গে এ উৎসবের কোনো সম্পর্ক নেই। শুধুমাত্র মজা করার জন্য শতাব্দীকাল ধরে রাখাইন সম্প্রদায় এ উৎসব পালন করে আসছে। প্রথম দিকে হিমছড়ির জঙ্গলে উৎসব পালন করা হতো এবং শুধু কক্সবাজারের রাখাইন সম্প্রদায় এ উৎসব পালন করতো। গত তিনদশক ধরে সমুদ্র আর প্রকৃতিকে আরও নিবিড়ভাবে কাছে পেতে সৈকতের ঝাউবাগানে পালন করা হচ্ছে মন রাঙানো এ বর্ষা উৎসব।
বাংলাদেশ সময়: ০৬২৮ ঘণ্টা, জুলাই ১৩, ২০১৯
এসবি/ওএইচ/