ঢাকা, শুক্রবার, ৫ বৈশাখ ১৪৩১, ১৯ এপ্রিল ২০২৪, ০৯ শাওয়াল ১৪৪৫

জাতীয়

শেষ হলো রাখাইনদের বর্ষা উৎসব

সুনীল বড়ুয়া, স্টাফ করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১০৩৫ ঘণ্টা, জুলাই ১৩, ২০১৯
শেষ হলো রাখাইনদের বর্ষা উৎসব কক্সবাজার সমুদ্র সৈকত, ছবি: বাংলানিউজ

কক্সবাজার: একপাশে উপচে পড়ছে সাগরের উত্তাল ঢেউ, অন্য পাশে সবুজ ঝাউবন। এরই মাঝে চলছে রোদ বৃষ্টির লুকোচুরি খেলা। যেন অসাধারণ সুন্দরের মাঝেই চলছে আবাল-বৃদ্ধ-বনিতার মহা মিলনমেলা। যেন এক অন্য রকম আনন্দায়োজন।যে উৎসবটি স্থানীয়ভাবে বর্ষা উৎসব হিসেবে পরিচিতি পেয়েছে। আর এটি পালন করে রাখাইন সম্প্রদায়।

শুক্রবার (১২ জুলাই) বিশ্বের দীর্ঘতম সমুদ্র সৈকত কক্সবাজারের মৈবাল পয়েন্টের ঝাউবাগানে শেষ হলো রাখাইনদের মনরাঙানো বর্ষা উৎসব। গত ২৪ মে শুরু হওয়া এ উৎসবের শুক্রবার ছিলো শেষদিন।

সারাদিন ঝাউবাগানে অন্য রকম আনন্দ উপভোগের পর সন্ধ্যায় সমুদ্রস্নান শেষে উৎসবের ইতি টানেন হাজারও মানুষ।  

জানা গেছে, প্রতি বছর বৌদ্ধদের অন্যতম ধর্মীয় অনুষ্ঠান তিন মাসব্যাপী আষাঢ়ী পূর্ণিমার আগে (আষাঢ়ী পূর্ণিমা থেকে আশ্বিনী পূর্ণিমা পর্যন্ত) আড়াই থেকে তিনমাস সৈকতে এ উৎসব পালন করে থাকে রাখাইন সম্প্রদায়। এটি তাদের কোনো সামাজিক বা ধর্মীয় উৎসব নয়, শুধুমাত্র সবাই মিলে-মিশে বৃষ্টি এবং সাগরের জলে সিক্ত হয়ে মহা আনন্দে মেতে ওঠার জন্যই এ উৎসব।

সৈকতের ঝাউবাগানে গোল করে বসে মজার আড্ডায় মেতেছিল রাখাইন তরুণ-তরুণী  উসিবু ও কেংগ্রীসহ ১৫জনের একটি দল।

কেংগ্রী ও উসিবু বলেন, এ উৎসবের সঙ্গে ধর্মীয় উৎসবের কোনো সম্পৃক্ততা নেই। সব দ্বিধাদ্বন্দ্ব, সংঘাত হানাহানি ভুলে সবাই মিলে নেচে গেয়ে আনন্দ উল্লাস করে সারাদিন মেতে থাকার জন্যই মূলত এ আয়োজন।

ঢাকা থেকে স্বামীর সঙ্গে উৎসবে যোগ দেন ইংলিশ মিডিয়াম স্কুলের শিক্ষক উমে রাখাইন। তিনি বলেন, উৎসবে এলেই একান্তই নিজের মতো কিছুটা সময় কাটানো যায়। অনেক পুরনো বন্ধু-বান্ধবের সঙ্গে দেখা হয়। তাই প্রতি বছর এ উৎসবে আসা।

উৎসবে এসে কেমন লাগছে? এমন প্রশ্নে রাখাইন যুবক আছিং রাখাইন বলেন, সবাই মিলে-মিশে বৃষ্টি এবং সাগরের জলে সিক্ত হয়ে আনন্দে মেতে ওঠার জন্যই মূলত এখানে আসা। অনেকেই এটিকে বর্ষাকালীন পিকনিকও বলছে। আমি বলবো, এ উৎসবের মধ্যদিয়ে বর্ষাকে বরণ করা।  

রাখাইন নেত্রী মাটিন টিন জানান, ধর্মীয় রীতিনীতির সঙ্গে এ উৎসবের কোনো সম্পর্ক নেই। শুধুমাত্র মজা করার জন্য শতাব্দীকাল ধরে রাখাইন সম্প্রদায় এ উৎসব পালন করে আসছে। প্রথম দিকে হিমছড়ির জঙ্গলে উৎসব পালন করা হতো এবং শুধু কক্সবাজারের রাখাইন সম্প্রদায় এ উৎসব পালন করতো। গত তিনদশক ধরে সমুদ্র আর প্রকৃতিকে আরও নিবিড়ভাবে কাছে পেতে সৈকতের ঝাউবাগানে পালন করা হচ্ছে মন রাঙানো এ বর্ষা উৎসব।

বাংলাদেশ সময়: ০৬২৮ ঘণ্টা, জুলাই ১৩, ২০১৯
এসবি/ওএইচ/

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।