ঢাকা, শনিবার, ৭ বৈশাখ ১৪৩১, ২০ এপ্রিল ২০২৪, ১০ শাওয়াল ১৪৪৫

জাতীয়

বগুড়ায় নারীকে মারধরের অভিযোগে এএসআই ক্লোজড

স্টাফ করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১০১৫ ঘণ্টা, জুলাই ১৩, ২০১৯
বগুড়ায় নারীকে মারধরের অভিযোগে এএসআই ক্লোজড শাহানুর রহমান ও হাসপাতালে ভর্তি কোহিনুর বেগম, ছবি: বাংলানিউজ

বগুড়া: পাওনা টাকা চাওয়ায় এক নারীকে মারধরের অভিযোগে বগুড়ার ধুনট থানার সহকারী উপ-পরিদর্শক (এএসআই) শাহানুর রহমানকে ক্লোজড (প্রত্যাহার) করা হয়েছে।

শুক্রবার (১২ জুলাই) বিকেলে জেলার পুলিশ সুপার (এসপি) আলী আশরাফ ভূঞার নির্দেশে এএসআই শাহানুর রহমানকে পুলিশ লাইনে ক্লোজড করা হয়।
 
রাতে ধুনট থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) ইসমাইল হোসেন বাংলানিউজকে এ তথ্য নিশ্চিত করেন।


 
স্থানীয়রা জানায়, বগুড়া শহরের বৌ-বাজার এলাকার জাকির হোসেনের স্ত্রী কোহিনুর বেগম  স্বামীর সঙ্গে বনিবনা না হওয়ায় দীর্ঘদিন ধরে বাবার বাড়িতে থাকেন। কোহিনুর দুই সন্তানের জননী। বগুড়া জজ কোর্ট এলাকায় খাবারের দোকান চালিয়ে সংসার চালান তিনি।  

এদিকে বর্তমানে ধুনট থানায় কর্মরত সহকারী উপ-পরিদর্শক (এএসআই) শাহানুর রহমানের বাড়ি সিরাজগঞ্জের শাহজাদপুর উপজেলার পোতাজিয়া গ্রামে। তার বাবার নাম হবিবুর রহমান। ২০১০ সালে বগুড়া পুলিশ সুপারের কার্যালয়ে চাকরি করতেন এ পুলিশ কর্মকর্তা।

সেই সুবাধে ওই সময় কোহিনুরের দোকানে প্রায়ই খাবার খেতেন শাহানুর রহমান। এভাবে কোহিনুরের সঙ্গে পরকিয়ার সম্পর্কে জড়িয়ে পড়েন পুলিশের এ কর্মকর্তা। ফলে শাহানুর অবাধ কোহিনুরের বাসায় যাতায়াত করতেন।

কিন্তু সমস্যা হয়ে দাঁড়ায় অর্থ। কোহিনুরের দাবি সম্পর্কের সূত্রধরে শাহানুর তার কাছ থেকে ৬০ হাজার টাকা হাতিয়ে নেন। এরই মধ্যে ২০১৬ সালের নভেম্বর মাসে বগুড়া থেকে বদলি হয়ে ধুনট থানায় যোগদান করেন এএসআই শাহানুর রহমান। সময়ের ব্যবধানে তাদের সম্পর্কেও ফাটল ধরে। ফলে শাহানুর রহমানের কাছে পাওনা টাকা দাবি করে কোহিনুর। কিন্তু শাহানুর টাকা দিতে তালবাহানা শুরু করলে তাদের মধ্যে দ্বন্দ্ব দেখা দেয়।

এরই ধারাবাহিকতায় শুক্রবার (১২ জুলাই) বেলা ১১ টার দিকে কোহিনুর টাকার জন্য ধুনট থানায় তাকে মারধর করে থানা থেকে বের করে দেয় শাহানুর রহমান।  

তাৎক্ষণিকভাবে স্থানীয় তাকে উদ্ধার করে উপজেলা স্বাস্থ্য কমেপ্লেক্সে নিয়ে গেলে সেখানেও লোকজনের সামনে কোহিনুর মারধর করে শাহানুর রহমান। পরে স্থানীয়রা তাকে উদ্ধার করে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করেন।

কোহিনুরের সঙ্গে কোনো সম্পর্ক ছিলো না জানিয়ে এএসআই শাহানুর রহমান বলেন, টাকার জন্য কোহিনুর প্রায়ই আমার বিরুদ্ধে নারী নির্যাতন মামলা করার হুমকি দিতো। এরপর বিষয়টি সমাধানের জন্য তাকে দু’দফায় ৮৭ হাজার টাকা দেই। কিন্তু এরপরও সে আমার পিছু ছাড়ছিলো না, তাই ক্ষুব্দ হয়ে তাকে চড়-থাপ্পর মেরেছি’।

খবর পেয়ে জেলার অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (পদোন্নতিপ্রাপ্ত পুলিশ সুপার) মকবুল হোসেন ও অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (শেরপুর-ধুনট সার্কেল) গাজিউর রহমান ঘটনাস্থলে যান এবং জনসম্মূখে ওই নারীকে মারধরের বিষয়টি নিশ্চিত হন। পরে বিকেলে জেলার পুলিশ সুপার (এসপি) আলী আশরাফ ভূঞার নিদের্শে এএসআই শাহানুর রহমানকে পুলিশ লাইনে ক্লোজড করা হয়।

বাংলাদেশ সময়: ০৬০৫ ঘণ্টা, জুলাই ১২, ২০১৯
এমবিএইচ/ওএইচ/

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।