ঢাকা, শনিবার, ১৪ বৈশাখ ১৪৩১, ২৭ এপ্রিল ২০২৪, ১৭ শাওয়াল ১৪৪৫

জাতীয়

খোকসায় ছাত্রীকে উত্ত্যক্ত করার অভিযোগে শিক্ষক বরখাস্ত

ডিস্ট্রিক্ট করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ০১১১ ঘণ্টা, জুলাই ১৩, ২০১৯
খোকসায় ছাত্রীকে উত্ত্যক্ত করার অভিযোগে শিক্ষক বরখাস্ত

কুষ্টিয়া: কুষ্টিয়ার খোকসার সেনগ্রাম মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের একাধিক শিক্ষার্থীকে যৌন হয়রানি করা হয়েছে বলে সহকারী শিক্ষক নজরুল ইসলামের বিরুদ্ধে অভিযোগ পাওয়া গেছে। এ ঘটনায় মৌখিকভাবে বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক সহকারী ওই শিক্ষককে বরখাস্ত করেছেন। 

জানা গেছে, সেনগ্রাম মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক নজরুল ইসলাম ওরফে দুখু অষ্টম শ্রেণির একাধিক ছাত্রীকে নানা সময়ে প্রেম নিবেদনসহ নানা কু-প্রস্তাব দিয়ে আসছিলেন।  

বৃহস্পতিবার (১১ জুলাই) সকালে অষ্টম শ্রেণির এক ছাত্রীকে বিদ্যালয়ের লাইব্রেরিতে ডেকে নিয়ে উত্ত্যক্ত করে।

ছাত্রীটি এ ঘটনা বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের জানালে শিক্ষার্থীরা ক্লাস বর্জন করে জমায়েত হলে তাৎক্ষণিক বিদ্যালয়টি বন্ধ ঘোষণা করে শিক্ষার্থীদের চলে যেতে বাধ্য করা হয়।  

এদিকে প্রধান শিক্ষক লাল মুহাম্মদ ৮ম শ্রেণির ওই তিন ছাত্রীকে ডেকে ঘটনাটি ধামা চাপা দেওয়ার চেষ্টা করে ব্যর্থ হয়ে বিকেলে অভিভাবক ও শিক্ষার্থীদের শান্ত করতে ওই শিক্ষককে মৌখিকভাবে সাময়িক বরখাস্ত করার ঘোষণা দেন।  

ভুক্তভোগী ওই শিক্ষার্থী জানায়, বুধবার (১০ জুলাই) দুপুরের পর শিক্ষক নজরুল ইসলাম আমাকে স্কুলের লাইব্রেরিতে দেখা করতে বলেন। কিন্তু সেদিন আর দেখা করেননি। পরদিন বৃহস্পতিবার সকালে শিক্ষক তাকে আবারও লাইব্রেরিতে ডাকেন। একপর্যায়ে লাইব্রেরিতে গেলে ছাত্রীর বোরকার নেকাব খুলতে বাধ্য করেন এবং প্রেমের প্রস্তাব দেন শিক্ষক নজরুল। বিষয়টি সে তাৎক্ষণিক সহপাঠীদের জানায়।  

এদিকে একইভাবে একই শ্রেণির আরো দুই শিক্ষার্থী তাদের ওপর যৌন হয়রানির অভিযোগ করে ওই শিক্ষকের বিরুদ্ধে।  
তারা অভিযোগ করে, শিক্ষক নজরুল ইসলাম তাদেরও স্কুলের লাইব্রেরিতে ডেকে নিয়ে প্রেমের প্রস্তাব দেয়। অংকে ফেল করিয়ে দেওয়ার ভয়ে তারা প্রথম দিকে এ ব্যাপারে মুখ খোলেনি।  

যৌন হয়রানির শিকার এক ছাত্রীর অভিভাবক জানান, মাস্টারের এ ধরনের আচরণের পর থেকে মেয়ে আর স্কুলে যেতে চাচ্ছে না। আমরা ওই শিক্ষকের বিচার চাই।  
এ ব্যাপারে নজরুল ইসলামের সঙ্গে যোগাযোগের জন্য তার মোবাইল ফোনে একাধিকবার ফোন দিলেও তিনি কল রিসিভ করেননি।  

বিদ্যালয়ের সভাপতি উত্তম কুমার সাহা বলেন, অভিযুক্ত শিক্ষক নিজের দোষ স্বীকার করেছেন। তাকে কারণ দর্শানোর নোটিশ দেওয়া হয়েছে। এছাড়া সাময়িক বরখাস্ত করা হয়েছে। দুই একদিনের মধ্যে সাধারণ সভা ডেকে তার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।  

উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা অফিসার নাজমূল হকের সঙ্গে কথা বলা হলে তিনি জানান, এ বিষয়ে তার কাছে কোনো তথ্য নেই। রোববার অফিসে এসে এ ব্যাপারে শুনবেন।

উল্লেখ্য শিক্ষক নজরুল ইসলাম সাত বছর আগে এই বিদ্যালয়ের এক ছাত্রীকে প্রেমের ফাঁদে ফেলে বিয়ে করে। তার সংসারে ৫ বছর বয়সী একটি সন্তান রয়েছে।  

বাংলাদেশ সময়: ২১০৭ ঘণ্টা, জুলাই ১২, ২০১৯
আরএ

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।