ঢাকা, শুক্রবার, ১৫ চৈত্র ১৪৩০, ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৮ রমজান ১৪৪৫

জাতীয়

কুড়িগ্রামে বিপদসীমার ১২ সে.মি ওপরে ধরলা

ফজলে ইলাহী স্বপন, স্টাফ করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ২৩৪৭ ঘণ্টা, জুলাই ১২, ২০১৯
কুড়িগ্রামে বিপদসীমার ১২ সে.মি ওপরে ধরলা পানি বেড়ে যাওয়ায় নৌকায় পারাপার। ছবি: বাংলানিউজ

কুড়িগ্রাম: উজানের ঢল আর ভারী বর্ষণে ব্রহ্মপুত্র ও ধরলা নদীর পানি বিপদসীমা অতিক্রম করায় চর-দ্বীপচরসহ নিম্নাঞ্চলের বিস্তীর্ণ এলাকা প্লাবিত হয়েছে। পানি বাড়ার ফলে কুড়িগ্রাম সদর, চিলমারী, রৌমারী, উলিপুর, নাগেশ্বরী ও রাজারহাট উপজেলার নিম্নাঞ্চল প্লাবিত হয়ে পানিবন্দি হয়ে পড়েছে হাজারো মানুষ।

শুক্রবার (১২ জুলাই) সন্ধ্যা ৬টায় সেতু পয়েন্টে ধরলা নদীর পানি বিপদসীমার ১২ সেন্টিমিটার ও ব্রহ্মপুত্রের পানি চিলমারী পয়েন্টে বিপদসীমার ১১ সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হয়েছে।  

তিস্তার পানি কাউনিয়া পয়েন্টে বিপদসীমার ৬ সেন্টিমিটার নিচ দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে।

পানি বাড়তে থাকায় বন্যার আশঙ্কা করছে এ এলাকার মানুষ।  

ধরলা, ব্রহ্মপুত্র, তিস্তা অববাহিকার নদ-নদী তীরবর্তী নিম্নাঞ্চলের বিস্তীর্ণ এলাকা প্লাবিত হয়ে যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন হয়ে দুর্ভোগে পড়েছে মানুষজন। তলিয়ে গেছে গ্রামীণ রাস্তাঘাট, মাছের ঘের, শাক-সবজিসহ আমন বীজতলা। মূলত চরাঞ্চলগুলোর বাড়ি-ঘরের চারপাশে পানি ওঠায় অনেকটা পানিবন্দি জীবন-যাপন করছে নদীর তীরের পরিবারগুলো।  

রৌমারী উপজেলার যাদুরচর ইউনিয়নের পুরাতন যাদুরচর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়, পাহাড়তলী সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় এবং সদর ইউনিয়নের বড় মাদারটিলা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের চারদিকে পানি ওঠায় ব্যাহত হচ্ছে শিক্ষা কার্যক্রম।

যাদুরচর ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) চেয়ারম্যান মো. সরবেশ আলী বাংলানিউজকে জানান, ব্রহ্মপুত্রের পানি বাড়তে থাকায় তার ইউনিয়নের ধনারচর নতুন গ্রাম বেড়িবাঁধ ঝুঁকিপূর্ণ হয়ে পড়েছে। ইউনিয়নের দক্ষিণ আলগারচর, উত্তর আলগারচর, খেওয়ার চর, বকবান্দা নামাপাড়া, বকবান্দা ব্যাপারীপাড়াসহ বেশকিছু এলাকা প্লাবিত হতে শুরু করেছে।

শুক্রবার (১২ জুলাই) দুপুরে রৌমারী উপজেলার বন্দর ইউনিয়নের বাগুয়ার চরে ব্রহ্মপুত্র নদীর ভাঙনে ঝুঁকিপূর্ণ প্রায় ৫০টি পরিবারকে নিরাপদ স্থানে সরিয়ে নিয়েছে উপজেলা প্রশাসন।

রৌমারী উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) দীপঙ্কর রায় বাংলানিউজকে জানান, আমরা মোট ৫০টি পরিবার সরিয়ে নিচ্ছি। এসব পরিবারগুলোকে ঢেউটিন, খাদ্য সহায়তা ও অর্থ দেওয়া হবে। আমরা ঝুঁকিপূর্ণ এলাকার লোকজনদের সরিয়ে নেওয়ার ব্যবস্থা নেয়েছি।

কুড়িগ্রাম পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী মো. আরিফুল ইসলাম বাংলানিউজকে জানান, রৌমারীতে বেশকিছু এলাকা নদী ভাঙনের হুমকিতে রয়েছে। নদীভাঙন রোধে কিছু বরাদ্দ পাওয়া গেলেও বর্ষা শেষ না হওয়া পর্যন্ত স্থায়ী কোনোও প্রতিকার সম্ভব হচ্ছে না। নদীভাঙনে ধনারচর নতুন গ্রাম বেড়িবাঁধটি ঝুঁকিপূর্ণ হলেও তাতে রৌমারী-ঢাকা মহাসড়কে কোনোও সমস্যা হবে না।

কুড়িগ্রাম পানি উন্নয়ন বোর্ডের কন্ট্রোল রুম সূত্র জানায়, গত ৩৬ ঘণ্টায় ধরলা নদীর পানি সেতু পয়েন্টে ৬৪ সেন্টিমিটার বেড়ে বিপদসীমার ১২ সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। ব্রহ্মপুত্রের পানি চিলমারী পয়েন্টে ৬৭ সেন্টিমিটার বেড়ে বিপদসীমার ১১ সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। তিস্তার পানি কাউনিয়া পয়েন্টে ২০ সেন্টিমিটার বেড়ে বিপদসীমার ৬ সেন্টিমিটার নিচ দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে।

বাংলাদেশ সময়: ১৯৩০ ঘণ্টা, জুলাই ১২, ২০১৯
এফইএস/আরআইএস/

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।