ঢাকা, শুক্রবার, ১৫ চৈত্র ১৪৩০, ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৮ রমজান ১৪৪৫

জাতীয়

জনবল সংকটে সাতক্ষীরা সদর হাসপাতাল, হয়রানি-দুর্ভোগ

শেখ তানজির আহমেদ, ডিস্ট্রিক্ট করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১২৫৫ ঘণ্টা, জুলাই ১২, ২০১৯
জনবল সংকটে সাতক্ষীরা সদর হাসপাতাল, হয়রানি-দুর্ভোগ

সাতক্ষীরা: সাতক্ষীরা সদর হাসপাতালে চরম আকার ধারণ করেছে জনবল সংকট। এতে মারাত্মকভাবে ব্যাহত হচ্ছে চিকিৎসা সেবা। ফলে হয়রানি ও দুর্ভোগের শিকার হচ্ছেন সেবা নিতে আসা সাধারণ মানুষ। দীর্ঘ লাইনে দাঁড়িয়েও দেখা মিলছে না কাঙ্ক্ষিত চিকিৎসকের। এক রোগের চিকিৎসা নিতে এসে অন্য রোগের চিকিৎসককে দেখাতে বাধ্য হচ্ছেন তারা।  
 

এ অবস্থা দু’একদিনের নয়, চলছে গত দুই বছরের বেশি সময় ধরে। আর তাই হতাশা দীর্ঘ থেকে দীর্ঘতর হচ্ছে সেবা প্রার্থীদের।

 

সাতক্ষীরা সদর হাসপাতাল সূত্রে জানা যায়, সাতক্ষীরা সদর হাসপাতালে চিকিৎসকের ২৭টি পদের মধ্যে শূন্য রয়েছে ১৭টি পদ।  

এর মধ্যে সিনিয়র কনসালটেন্ট (সার্জারি), সিনিয়র কনসালটেন্ট (অর্থোপেডিক সার্জারি), সিনিয়র কনসালটেন্ট (চক্ষু), সিনিয়র কনসালটেন্ট (অ্যানেসথেসিয়া), জুনিয়র কনসালটেন্ট (পেডিয়েট্রিকস), জুনিয়র কনসালটেন্ট (ইএনটি), জুনিয়র কনসালটেন্ট (সার্জারি), জুনিয়র কনসালটেন্ট (প্যাথলজি), জুনিয়র কনসালটেন্ট (অ্যানেসথেসিয়া), আবাসিক মেডিক্যাল কর্মকর্তা, রেডিওলজিস্ট, মেডিক্যাল কর্মকর্তার (হোমিও/ইউনানি/আয়ুর্বেদিক) একটি, জুনিয়র কনসালটেন্টের (বিষয়বিহীন) একটি ও মেডিক্যাল কর্মকর্তার চারটি পদসহ ১৭টি পদ শূন্য রয়েছে।  

সূত্র আরও জানায়, সদর হাসপাতালের আউটডোরে প্রতিদিন চিকিৎসা সেবা নিতে আসেন দেড়শ’ থেকে দুইশ’ রোগী। কিন্তু জনবল সংকটের কারণে এতো রোগী সামলাতেই হিমশিম খাচ্ছে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ।  

সাতক্ষীরা সদর হাসপাতালে

সরেজমিনে সদর হাসপাতালে গিয়ে দেখা যায়, রোগীদের দীর্ঘ লাইন। সেবা নিতে আসা সবার মুখেই হতাশার ছাপ। যারা চিকিৎসক দেখাতে পারছেন তারাও খুশি নন। কারণ যে রোগের চিকিৎসক দেখাতে এসেছেন, সেই রোগের বিশেষজ্ঞ চিকিৎসক নেই। অর্থাৎ, পদটি শূন্য রয়েছে।  

এমনই একজন তালা উপজেলার মীর্জাপুরের ভ্যানচালক জাহাঙ্গীর হোসেন। দীর্ঘদিন দু’টি চোখ নিয়ে ভুগছেন তিনি। এসেছিলেন চোখের চিকিৎসক দেখাতে। কিন্তু চোখের চিকিৎসক না থাকায় সাধারণ মেডিক্যাল কর্মকর্তাকে দেখাতেই বাধ্য হয়েছেন তিনি।  

হাসপাতালের সার্জারি (পুরুষ) ওয়ার্ডে ভর্তি সাতক্ষীরা সদর উপজেলার ভাড়খালী গ্রামের গোলাম মোস্তফা। বাংলানিউজকে তিনি বলেন, চারদিন ধরে ভর্তি রয়েছি, এখনো পর্যন্ত কোনো বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকের দেখা পাইনি। এরই নাম গরীবের কপাল।  

শূন্য রয়েছে আবাসিক মেডিক্যাল কর্মকর্তার (আরএমও) মতো গুরুত্বপূর্ণ পদটিও। সবচেয়ে আতঙ্কের বিষয় হচ্ছে, অ্যানেসথেসিয়া বিশেষজ্ঞের পদটি শূন্য! আর তাই যখন যে পারেন (মেডিক্যাল কর্মকর্তা) তাকে দিয়েই অ্যানেসথেসিয়া দেওয়া হয় রোগীদের।  
 
এ ব্যাপারে সাতক্ষীরার সিভিল সার্জন ডা. রফিকুল ইসলাম বাংলানিউজকে বলেন, জনবল সংকটের জন্য কিছুটা ব্যাহত হচ্ছে সদর হাসপাতালের চিকিৎসা সেবা। বিষয়টি ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে প্রতি মাসেই জানানো হয়। কিন্তু, এখানো কোনো চিকিৎসককে এখানে পদায়ন করা হয়নি।  

বাংলাদেশ সময়: ঘণ্টা, জুলাই ১১, ২০১৯
এসআরএস

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।