ঢাকা, বুধবার, ১০ বৈশাখ ১৪৩১, ২৪ এপ্রিল ২০২৪, ১৪ শাওয়াল ১৪৪৫

জাতীয়

সুনামগঞ্জের বিভিন্ন এলাকা প্লাবিত, শহরেও জলাবদ্ধতা

ডিস্ট্রিক্ট করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ০৩৩৬ ঘণ্টা, জুলাই ১২, ২০১৯
সুনামগঞ্জের বিভিন্ন এলাকা প্লাবিত, শহরেও জলাবদ্ধতা

সুনামগঞ্জ: গত চারদিনের টানা ভারী বর্ষণ ও পাহাড়ি ঢলে সুনামগঞ্জ জেলার সুরমা নদীর পানি বিপদসীমার উপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। ফলে জেলার সদর উপজেলার লালপুর, বিশ্বম্ভরপুর, তাহিরপুর, জামালগঞ্জ, ধর্মপাশা, দোয়ারাবাজার বিভিন্ন এলাকা প্লাবিত হয়েছে। এতে ঘরবন্দি হয়ে পড়েছেন ওইসব এলাকার মানুষ।   

বৃহস্পতিবার (১১ জুলাই) সকাল থেকে টানা বৃষ্টি হচ্ছে। এতে কিছু মানুষের ঘর বাড়িতে ওঠে গেছে।

তবে এখনও আশ্রয় কেন্দ্র যাওয়ার মতো পরিস্থিতি তৈরি হয়নি বলে জানিয়েছেন পানি বন্দি লোকজন।  

ছোট ডিঙি নৌকা দিয়ে তারা তাদের প্রয়োজনীয় কাজ করছেন। বিশেষ করে খাবার পানি আনতে হচ্ছে দূরের টিউবওয়েল
থেকে।

বৃষ্টির কারণে মানুষের স্বাভাবিক কার্যক্রম ব্যহত হচ্ছে। সুনামগঞ্জ শহরের ড্রেনেজ ব্যবস্থা দুর্বল হওয়ার কারণে পৌর এলাকায় দেখা দিয়েছে জলাবদ্ধতা।

পানি জমে থাকার কারণে বাসা থেকে কর্মস্থলে বা বাজারে যেতে প্রচুর ভোগান্তি পোহাতে হচ্ছে পৌর এলাকার বাসিন্দাদের।

বর্তমানে সুরমা নদীর পানি বিপদ সীমার ৮৪ সেন্টিমিটার উপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, পানিতে ক্ষতিগ্রস্ত তাহিরপুর-সুনামগঞ্জ সড়ক, তাহিরপুর-বাদাঘাট সড়ক, বাদাঘাট-সোহালা, আনোয়াপুর-ফতেহপুর সড়ক, বিশ্বম্ভরপুর-সুনামগঞ্জ, সুনামগঞ্জ-জামালগঞ্জ, ছাতক, দোয়ারাবাজারের সড়কের উপর দিয়ে পানি প্রবাহিত হচ্ছে।  

এতে যান চলাচলেও বিঘ্ন ঘটছে। বিগত ৪ দিনের টানা ভারী বর্ষণ ও পাহাড়ি ঢলে সুনামগঞ্জের সুরমা, যাদুকাটা, পাটলাই, কুশিয়ারা, চেলা, খাসিয়ামারাসহ সব ক’টি নদীর পানি বেড়েছে।

জেলায় গত ২৪ ঘণ্টায় ১৮৬ মিলিমিটার বৃষ্টিপাত রেকর্ড করা হয়েছে। বৃষ্টিপাত ও ঢল অব্যাহত থাকালে বড় ধরনের বন্যার আশঙ্কা রয়েছে। নদীতে পানি বাড়ায় ইতোমধ্যে জেলার নতুন নতুন এলাকা প্লাবিত হওয়া অব্যাহত রয়েছে।

সুনামগঞ্জ সদর উপজেলা, বিশ্বম্ভরপুর ও দোয়ারাবাজার উপজেলার অনেক পুকুরের চাষ করা মাছ পানিতে ভেসে গেছে। এতে  ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছেন মৎসজীবীরা।

বন্যা পরিস্থিতি মোকাবেলার জন্য উপজেলায় স্থানীয় পর্যায়ে উদ্ধারকারী টিম, শুকনা খাবার, ওষুধ, পানি বিশুদ্ধকরণ ট্যাবলেট, বন্যায় আশ্রয় কেন্দ্র, মেডিক্যাল টিম গঠনসহ সবকিছু প্রস্তুত রাখা হয়েছে।  তাহিরপুর উপজেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে জানানো হয়, উপজেলা প্রশাসনের সব কর্মকর্তা-কর্মচারীদের কর্মস্থলে অবস্থান করতে বলা হয়েছে।

বিশ্বম্ভরপুর উপজেলার মৎস্য চাষি মনফর আলী বাংলানিউজকে বলেন, আমার বিশাল আয়তনে পুকুরের মাছ ভেসে গেছে। পানি বাড়ার সময় পাড়ের চারদিকে জাল দিয়ে বেড়া দিয়েছিলাম। কিন্তু পানি বাড়ায় আর কাজ হয়নি।

সুনামগঞ্জের জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ আব্দুল আহাদ বাংলানিউজকে বলেন, পরিস্থিতি পর্যবেক্ষণের জন্য প্রতি উপজেলায় কন্ট্রোল রুম খোলা হয়েছে। বন্যা মোকাবেলায় প্রশাসন তৎপর রয়েছে। প্রশাসনের পক্ষ থেকে নগদ টাকা শুকনো খাবার ও চালের ব্যবস্থা রাখা হয়েছে।

বাংলাদেশ  সময়:  ২৩৩৬ ঘণ্টা,  জুলাই ১১,  ২০১৯
এমএ/

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।