ঢাকা, বৃহস্পতিবার, ১২ বৈশাখ ১৪৩১, ২৫ এপ্রিল ২০২৪, ১৫ শাওয়াল ১৪৪৫

জাতীয়

বগুড়াসহ সারাদেশের পৌর নাগরিক সেবা বন্ধের ঘোষণা

স্টাফ করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ২১৪১ ঘণ্টা, জুলাই ১০, ২০১৯
বগুড়াসহ সারাদেশের পৌর নাগরিক সেবা বন্ধের ঘোষণা সংবাদ সম্মেলনে বাংলাদেশ পৌরসভা সার্ভিস অ্যাসোসিয়েশনের বগুড়া জেলা কমিটির সভাপতি মামুনুর রশিদ। ছবি: আরিফ জাহান

বগুড়া: রাষ্ট্রীয় কোষাগার থেকে বেতন-ভাতা ও পেনশনের দাবিতে রোববার (১৪ জুলাই) থেকে লাগাতার আন্দোলনে যাচ্ছেন বগুড়াসহ দেশের সব পৌরসভার কর্মকর্তা-কর্মচারীরা। 

এতে দেশের ৩২৮টি পৌরসভায় জ্বলবে না সড়ক বাতি। বন্ধ হয়ে যাবে পরিচ্ছন্নতা, নাগরিক সনদপত্র, জন্ম ও মৃত্যুসনদ দেওয়াসহ পৌরসভার সব ধরনের নাগরিক সেবা কার্যক্রম।


 
পাশাপাশি ওই দিন থেকে দেশের সব পৌরসভার কর্মকর্তা-কর্মচারীরা একযোগে কর্মবিরতি পালন করে ঢাকার কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে লাগাতার অবস্থান কর্মসূচি পালন করবেন।  
 
বুধবার (১০ জুলাই) দুপুরে বগুড়া প্রেসক্লাবে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে বাংলাদেশ পৌরসভা সার্ভিস অ্যাসোসিয়েশন কেন্দ্রীয় কমিটির ডাকে চলমান আন্দোলনের অংশ হিসেবে এ কর্মসূচি ঘোষণা করেন সংগঠনের বগুড়া জেলা কমিটির সভাপতি মামুনুর রশিদ।
 
সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্যে মামুনুর রশিদ জানান, দেশের অন্য জেলাগুলোতেও একইভাবে সংবাদ সম্মেলন করে আন্দোলনের কর্মসূচি ঘোষণা করা হবে। ঘোষণা অনুযায়ী দেশের সব পৌরসভার কর্মকর্তা-কর্মচারী ১৪ জুলাই ঢাকা কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে লাগাতার অবস্থান কর্মসূচিতে অংশ নেবেন। এতে তাদের পক্ষে স্ব স্ব কর্মস্থলে অবস্থান করা সম্ভব হবে না এবং নাগরিক সেবাও দেওয়া সম্ভব হবে না। তবে ঢাকায় অবস্থান কর্মসূচি চলাকালে শুধু পাইপ লাইনে পানি সরবরাহ চালু থাকবে বলেও জানান তিনি।

সংবাদ সম্মেলনে তিনি জানান, রাষ্ট্রীয় কোষাগার থেকে জনপ্রতিনিধিদের সম্মানী ভাতা ও কর্মকর্তা-কর্মচারীদের বেতন-ভাতা দেওয়ার দাবিতে প্রায় দুই বছর ধরে আন্দোলন করে আসছেন তারা। সংবিধান অনুযায়ী পৌরসভা সরকারি প্রতিষ্ঠান। এসব প্রতিষ্ঠানে কর্মরত কর্মকর্তা-কর্মচারীরাও প্রজাতন্ত্রের কর্মচারী। শহর কেন্দ্রীক অবকাঠামো উন্নয়ন, পরিচ্ছন্নতা, ড্রেনেজ ব্যবস্থার উন্নয়ন, পয়ঃনিষ্কাশন, সড়ক আলোকিত করা, বিভিন্ন সনদ দেওয়া ও নিবন্ধনসহ অন্তত ২০ ধরনের সেবা দেন পৌরসভার কর্মকর্তা-কর্মচারীরা।
 
আইন অনুযায়ী স্থানীয় সরকার প্রতিষ্ঠান হিসেবে পৌরসভার নিজস্ব আয়ে কর্মকর্তা-কর্মচারীদের বেতন-ভাতা দেওয়ার বিধান থাকলেও দেশের ৯০ শতাংশ পৌরসভায় পর্যাপ্ত আয় বা রাজস্ব না থাকায় বর্তমানে স্থান ভেদে তিন থেকে ৬৬ মাস পর্যন্ত বেতন-ভাতা বকেয়া রয়েছে বলেও জানান এ নেতা।

সংবাদ সম্মেলনে তিনি আরও জানান, বগুড়া জেলার ১২টি পৌরসভার মধ্যে কেবল বগুড়া পৌরসভা ছাড়া বাকি ১১টি পৌরসভাতেই দীর্ঘদিন ধরে বেতন-ভাতা বকেয়া রয়েছে। এরমধ্যে শান্তাহার পৌরসভায় ৬৬ মাস, সারিয়াকান্দিতে ৫৭ মাস, গাবতলীতে ২৬ মাস, শেরপুরে ২৫ মাস, নন্দীগ্রামে ২৪ মাস, শিবগঞ্জে ১৩ মাস, কাহালুতে পাঁচ মাস, ধুনট ও দুপচাঁচিয়ায় চার মাস করে এবং তালোড়া ও সোনাতলা পৌরসভায় তিন মাস করে বেতন-ভাতা বকেয়া রয়েছে।

সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত পৌরসভা সার্ভিস অ্যাসোসিয়েশনের বগুড়া জেলা শাখার উপদেষ্টা ও বগুড়া পৌরসভার নির্বাহী প্রকৌশলী আবু হেনা মোস্তফা কামাল জানান, স্থানীয় সরকারের অধীন অপর দুই প্রতিষ্ঠানের মধ্যে ইউনিয়ন পরিষদের কর্মকর্তা-কর্মচারীদের বেতন-ভাতার ৭৫ শতাংশ ও জেলা পরিষদের জন্য শতভাগ বেতন-ভাতা রাষ্ট্রীয় কোষাগার থেকে দেওয়া হয়। পৌরসভাগুলোর জনপ্রতিনিধিরাও এ আন্দোলনে সমর্থন দিয়েছেন যোগ করেন প্রকৌশলী আবু হেনা মোস্তফা কামাল।
 
সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন সংগঠনের নেতা শহর পরিকল্পনাবিদ আল মেহেদী হাসান, উপদেষ্টা বগুড়া পৌরসভার সহকারী প্রকৌশলী আবু জাফর মো. রেজা, হুমায়ন কবির, ইকবাল হোসেনসহ জেলার আরও ১১টি পৌরসভার কর্মকর্তা-কর্মচারীরা।
 
বাংলাদেশ সময়: ১৭৪১ ঘণ্টা, জুলাই ১০, ২০১৯
এমবিএইচ/আরআইএস/

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।