ঢাকা, শনিবার, ৭ বৈশাখ ১৪৩১, ২০ এপ্রিল ২০২৪, ১০ শাওয়াল ১৪৪৫

জাতীয়

নাটোরে মাদ্রাসাছাত্র হত্যার দায়ে ৩ যুবকের আটকাদেশ

ডিস্ট্রিক্ট করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ২০৪২ ঘণ্টা, জুলাই ১০, ২০১৯
নাটোরে মাদ্রাসাছাত্র হত্যার দায়ে ৩ যুবকের আটকাদেশ

নাটোর: নাটোরের চাঞ্চল্যকর মাদ্রাসাছাত্র তানভির আহম্মেদ (১১) হত্যা ও মরদেহ গুম করার দায়ে তিন যুবককে বিভিন্ন মেয়াদে আটকাদেশ দিয়েছেন আদালত।

বুধবার (১০ জুলাই) দুপুরে নাটোর নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনালের বিচারক মোহাম্মদ মাইনুল হক এ আদেশ দেন। এসময় অভিযুক্তরা আদালতে উপস্থিত ছিল।



পরে আইনি প্রক্রিয়া শেষে দু’জনকে নাটোর জেলা কারাগারে (বয়স ১৮ বছর পূর্ণ হওয়ায়) ও একজনকে যশোরের শিশু শোধনাগারে (বয়স ১৮ বছর পূর্ণ না হওয়ায়) পাঠানো হয়েছে।

নিহত তানভির আহম্মদ শহরের উত্তরবড় গাছা (হাফরাস্তা) এলাকার সাইফুল ইসলাম তুষারের ছেলে। সে শহরের আলাইপুর এলাকার আশরাফুল উলুম হাফেজিয়া মাদ্রাসার হেফজ বিভাগের ছাত্র ছিল।

আটকাদেশ প্রাপ্তরা হলো- সিংড়ার জোড়মল্লিকা গ্রামের মুক্তার হোসেনের ছেলে হুমায়িদ হোসেন, বাগাতিপাড়া উপজেলার নওপাড়া গ্রামের বাবলু হাসানের ছেলে বায়েজিদ হাসান ও নাটোর শহরের কালুর মোড় এলাকার আব্দুর রহিমের ছেলে নাঈম।  

এদের মধ্যে হুমায়িদ হোসেন ও বায়েজিদ হাসানকে ৩০২ ধারায় ১০ বছর, ৩৮৭ ধারায় ৫ বছর ও ২০১ ধারায় ৩ বছর করে আটকাদেশ দেওয়া হলেও তারা ১০ বছর করে আটকাদেশ ভোগ করবে। আর নাঈমকে ৩৮৭ ধারায় ৫ বছর ও ২০১ ধারায় ৩ বছর করে আটকাদেশ দেওয়া হলেও সে ৫ বছর আটকাদেশ ভোগ করবে।

নাটোর জজ কোর্টের নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনালের স্পেশাল পাবলিক প্রসিকিউটর (বিশেষ পিপি) অ্যাডভোকেট এ কে এম শাহজাহান কবির এ তথ্য নিশ্চিত করেন।

তিনি বাংলানিউজকে জানান, ২০১৫ সালের ২৫ আগস্ট বিকেলে মাদ্রাসা থেকে নিখোঁজ হয় তানভির আহম্মেদ। বিষয়টি জানার পর আত্মীয় স্বজন বিভিন্নস্থানে খোঁজাখুজি করতে থাকেন। কিন্তু কোথাও তার সন্ধান না পেয়ে বাবা সাইফুল ইসলাম তুষার ২৬ আগস্ট সন্ধ্যার দিকে নাটোর সদর থানায় সাধারণ ডায়রি করেন এবং র‍্যাবকেও বিষয়টি অবহিত করেন। এ অবস্থায় পুলিশ ও র‍্যাব তানভীরকে উদ্ধারে অনুসন্ধানে নামেন।

একপর্যায়ে র‍্যাবের একটি অপারেশন দল মোবাইল ফোনের কললিস্টের সূত্র ধরে বায়েজিদ, হুমায়িদ ও নাঈম নামে তিন কিশোরকে আটক করে। তারা র‍্যাবের কাছে তানভিরকে অপহরণ করে হত্যার দায় স্বীকার করে। পরে তাদের দেওয়া তথ্যমতে র‍্যাব সদস্যরা ১ সেপ্টেম্বর সকাল ১০টার দিকে ওই মাদ্রাসার পেছনে একটি সেপটিক ট্যাংক থেকে তানভীরের গলাকাটা মরদেহ উদ্ধার করে।  

এ ঘটনায় নিহত তানভীরের বাবা সাইফুল ইসলাম বাদী হয়ে ওইদিন সন্ধ্যার দিকে নাটোর সদর থানায় ওই তিন কিশোরকে অভিযুক্ত করে একটি হত্যা মামলা দায়ের করেন। মামলাটি তৎকালীন উপ পরিদর্শক (এসআই) সুকমল দেবনাথ তদন্ত শেষে একই বছরের ২৫ অক্টোবর আদালতে দোষীপত্র দাখিল করেন। মামলায় ১৪ জন সাক্ষীর সাক্ষ্যগ্রহণ ও তথ্য প্রমাণ শেষে বিচারক এ আদেশ দেন।  

তিনি আরো জানান, ঘটনার সময় অভিযুক্তরা কিশোর ছিল। তাই শিশু আইনের ৩৪ ধারার বিধান মতে ১০ বছরের ঊর্ধ্বে তাদের সাজা দেওয়ার সুযোগ নেই। তাই মৃত্যুদণ্ডের মত সাজা পাওয়ার উপযুক্ত হলেও তারা এ আইনের আওতায় পড়েছে। ফলে বিচারক তাদের এ আটকাদেশ দিয়েছেন। বিভিন্ন ধারায় বিভিন্ন আটকাদেশ দেওয়া হলেও তারা একই সঙ্গে এ সাজা ভোগ করবে।

এদের মধ্যে বায়েজিদ ও হুমায়িদের বয়স বর্তমানে ১৮ বছর পূর্ণ হওয়ায় তাদের নাটোর জেলা কারাগারে, আর নাঈমের বয়স ১৮ বছর পূর্ণ না হওয়ায় তাকে যশোরের শিশু শোধনাগার পাঠানো হয়েছে।

বাংলাদেশ সময়: ১৫৫০ ঘণ্টা, জুলাই ১০, ২০১৯ 
আরএ

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।