ঢাকা, শনিবার, ২৮ বৈশাখ ১৪৩১, ১১ মে ২০২৪, ০২ জিলকদ ১৪৪৫

জাতীয়

শিশু নির্যাতনকারীকে আগুনের ছ্যাঁকা দিলো গ্রাম্য সালিশ

ডিস্ট্রিক্ট করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১০১৯ ঘণ্টা, জুলাই ১০, ২০১৯
শিশু নির্যাতনকারীকে আগুনের ছ্যাঁকা দিলো গ্রাম্য সালিশ পুলিশের হাতে গ্রেফতার মনির। ছবি: বাংলানিউজ

মুন্সিগঞ্জ: মুন্সিগঞ্জের লৌহজংয়ে শিশু সিয়ামকে (৭) ছ্যাঁকা দেওয়ার অভিযোগে অভিযুক্ত যুবক মনিরকে (২৫) গ্রাম্য সালিশের মাধ্যমে সিগারেটের ছ্যাঁকা দেওয়া হয়েছে বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে।

মঙ্গলবার (৯ জুলাই) সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে গ্রাম্য সালিশে মনিরকে শাস্তি দেওয়ার ভিডিও ভাইরাল হয়েছে।

ভিডিও ফুটেজে দেখা যায়, কবুতরখোলা ইউনিয়নের মেম্বার কালাম মাদবরের নির্দেশে এক ব্যক্তি একটি সিগারেট জ্বালিয়ে কালাম মাদবরের হাতে দেয়।

সেটি কালাম মাদবর অন্য এক ব্যক্তিকে মনিরের পিঠে ছ্যাঁকা দিতে বলেন। সবার সামনেই মনিরের পিঠে ছ্যাঁকা দেয়। এরপর তার শরীরে বেত দিয়ে আঘাত করতে দেখা যায়। বেতের আঘাত দেওয়ার সময় মনিরের মা বাধা দিলেও থামেননি।

মঙ্গলবার (২ জুলাই) শ্রীনগর উপজেলার কবুতর খোলা গ্রামে এই সালিশে শাস্তি দেওয়ার ঘটনা ঘটে। মনির লৌহজং উপজেলার যশলদিয়া গ্রামের আমির ঢালীর ছেলে। শিশু সিয়াম যশলদিয়া গ্রামের নূরবাগ ইসলামিয়া মাদ্রাসার ছাত্র।

মনিরের ভাই আনোয়ার হোসেন বলেন, একটি শিশুকে সিগারেটের ছ্যাঁকা দেওয়ার অভিযোগে আমার ভাই মনিরকে কালাম মেম্বারের নেতৃত্বে গ্রাম্য সালিশে অভিযুক্ত করে ২০টি বেতের বাড়ি, ৬টি সিগারেটের ছ্যাঁকা, ৫ হাজার টাকা জরিমানা ও তিনদিনের মধ্যে গ্রাম ছাড়ার শাস্তি দেওয়া হয়। তাকে কালাম মেম্বারের স’মিলে প্রকাশ্যে ২০টি বেতের বাড়ি মারা ও সিগারেটের আগুনে ছয়বার ছ্যাঁকা দেওয়া হয়। এই বিচার মেনে নিয়ে চলে আসলে পরবর্তীতে মামলা দিয়ে মনিরকে গ্রেফতার করে কারাগারে পাঠায়।

তিনি আরও বলেন, যারা বিচার করেছেন তাদের বিরুদ্ধে আইনি ব্যবস্থা নেওয়ার মতো অবস্থা আমাদের নেই। তবে যেহেতু এই অভিযোগে মনিরকে একবার বিচার করা হয়েছে।  সেহেতু মনিরের বিরুদ্ধে যেই মামলাটি করেছে সেটি প্রত্যাহার করলে খুবই উপকৃত হতাম। এই বিষয়ে কালাম মেম্বারকে মোবাইল ফোনে কল দিলে তার ফোনটি বন্ধ পাওয়া যায়।

লৌহজং থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (তদন্ত) জাহাঙ্গীর হোসেন খান বলেন, সালিশের ব্যাপারটি আমাদের জানা নেই। যদি তারা এ ধরনের সালিশ করে বিচার করে থাকে এবং সিগারেটের আগুনের ছ্যাঁকা দেয়, তাহলে তদন্ত সাপেক্ষে তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

তিনি আরও বলেন, ঘটনার দিন সিয়াম বাড়ির আঙিনায় খেলা করছিল। কিছুক্ষণ পর সিয়ামের কোনো খোঁজ পাওয়া যাচ্ছিল না। পরে বাড়ির পাশের জঙ্গল থেকে তাকে অজ্ঞান অবস্থায় উদ্ধার করে হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। মনির ও হান্নান আইসক্রিম কিনে দেবে বলে তাকে ডেকে নিয়ে গিয়েছিল।

বুধবার (৩ জুলাই) রাতে সিয়ামের মা রহিমা বেগম লৌহজং থানায় নারী ও শিশু নির্যাতন আইনে মামলা করে এবং মনিরকে গ্রেফতার করা হয়। এরপর শুক্রবার দুপুরে আদালতে হাজির করা হলে তাকে কারাগারে পাঠানো হয়।

বাংলাদেশ সময়: ০৬১৬ ঘণ্টা, জুলাই ১০, ২০১৯
এএটি

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।