ঢাকা, বৃহস্পতিবার, ১৪ চৈত্র ১৪৩০, ২৮ মার্চ ২০২৪, ১৭ রমজান ১৪৪৫

জাতীয়

পাহাড় ধসের ঝুঁকিতে ৩ হাজারের বেশি পরিবার 

| বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ২১১৩ ঘণ্টা, জুলাই ৯, ২০১৯
পাহাড় ধসের ঝুঁকিতে ৩ হাজারের বেশি পরিবার 

রাঙামাটি: রাঙামাটিতে টানা চারদিনের বৃষ্টির কারণে পাহাড় ধসের শঙ্কা বেড়ে গেছে। ঝুঁকিতে রয়েছে জেলার ৩৩৭৮টি পরিবারের ১৫ হাজারের বেশি মানুষ। প্রশাসন ওইসব ঝুঁকিপূর্ণ এলাকায় বসবাসকারীদের সরিয়ে নিতে প্রতিনিয়ত চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে। তবে প্রশাসনের চেষ্টা অব্যাহত থাকলেও তারা মৃত্যু ঝুঁকি নিয়ে পাহাড়ে বাস করছেন। 

তাদের দাবি দারিদ্র্যের যাতাকলে পিষ্ট হয়ে পাহাড়কে বেছে নিয়েছেন বসবাসের জন্য। বাস করার জন্য সমতল জায়গা কিনে বা নিরাপদ জায়গায় বাড়ি ভাড়া করে থাকার সামর্থ্য তাদের নেই।

 

এদিকে মঙ্গলবার (৯ জুলাই) সকাল থেকে প্রচুর বৃষ্টিপাত হচ্ছে। ফলে বিঘ্ন ঘটছে স্বাভাবিক জীবনযাপনে। এতে দুর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে ব্যবসায়ী এবং স্কুল-কলেজগামী শিক্ষার্থীদের।  

বলে রাখা ভাল, ভূ-প্রকৃতিগতভাবে রাঙামাটি অঞ্চলটি পাহাড় বেষ্টিত। সমতলের লেশমাত্র নেই। সরকারি-বেসরকারি প্রতিষ্ঠানগুলোও গড়ে তোলা হয়েছে পাহাড়ে। তাই সেসব প্রতিষ্ঠানগুলোও ঝুঁকিপূর্ণ আওতায় রয়েছে।

প্রশাসনের তথ্যমতে, রাঙামাটির ৩১টি পয়েন্টকে ঝুঁকিপূর্ণ হিসেবে চিহ্নিত করেছে স্থানীয় প্রশাসন। রাঙামাটি পৌরসভাসহ ১০টি উপজেলায় মোট ৩৩৭৮টি পরিবারের ১৫ হাজারেও বেশি মানুষ ঝুঁকিতে রয়েছে। এর মধ্যে রাঙামাটি পৌর শহরের নয়টি ওয়ার্ডে ৩৪টি স্থানে ৬০৯ পরিবারের প্রায় আড়াই হাজার লোক ঝুঁকি নিয়ে বাস করছেন।  

এগুলোর মধ্যে- জেলা শহরের  রিজার্ভ বাজারের চম্পানিমার টিলা, চেঙ্গির মুখ, এসপি অফিস সংলগ্ন ঢাল, পুরাতন বাস স্টেশনের মাতৃমঙ্গল এলাকা, কিনারাম পাড়া, স্বর্ণটিলা, রাজমনি পাড়া, পোস্ট অফিস কলোনি, মুসলিম পাড়া, কিনা মোহন ঘোনা, নতুন পাড়া পাহাড়ের ঢাল, শিমুলতলী, রূপনগর এলাকার পাহাড়ের ঢাল, কাঁঠালতলী মসজিদ কলোনি, চম্পকনগর পাহাড়ের ঢাল, আমানতবাগ স্কুলের ঢাল, কলেজ গেটস্থ কাদেরিয়া মার্কেটের নিচু এলাকা, জালালাবাদ কলোনির পাহাড়ের ঢাল। এর বাইরে রাঙামাটি সদর উপজেলার ছয়টি ইউনিয়নের ৭৫০ পরিবারের তিন হাজার ৪২৪ জন লোক পাহাড়ের ঢালে ঝুঁকিতে আছে। ওইসব এলাকায় ২০১৭ সালে সবচেয়ে বেশি পাহাড় ধসের ঘটনা ঘটেছে।  

আশ্রয় কেন্দ্রে আশ্রিতদের খাবার দেওয়া হচ্ছে।  ছবি: বাংলানিউজরাঙামাটি জেলা প্রশাসক একেএম মামুনুর রশীদ বাংলানিউজকে বলেন, পাহাড়ের পাদদেশে ঝুঁকিপূর্ণ এলাকায় বসবাসকারীদের নিরাপদ স্থানে সরিয়ে আনার কাজ জেলা প্রশাসন গত এপ্রিল মাস থেকেই চালিয়ে যাচ্ছে। বর্ষা মৌসুমে বিগত বছরগুলোর মতো ঘটনার পুনরাবৃত্তি না ঘটে সেই লক্ষ্যে প্রশাসনের পক্ষ থেকে সর্বোচ্চ প্রস্তুতি নেওয়া হয়েছে।

ডিসি আরও বলেন, যেকোন দুর্যোগ মোকাবেলায় প্রশাসন সর্বোচ্চ প্রস্তুতি নিয়েছে। খুলে রাখা হয়েছে ২১টি আশ্রয় কেন্দ্র। এর মধ্যে সোমবার রাত থেকে কয়েকটি আশ্রয়কেন্দ্রে মানুষ আশ্রয় নিয়েছে। জেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে তাদের খাবারের ব্যবস্থা করা হয়েছে।  

২০১৭ সালের ১৩ জুন রাঙামাটিতে স্মরণকালের সবচেয়ে ভয়াবহ পাহাড় ধসে সরকারি হিসেবে মতে ৯৮ জন এবং বেসরকারি হিসেব মতো আরো বেশি মানুষ মারা যায়। এছাড়া ২০১৮ সালের ১২ জুন নানিয়ারচর উপজেলার সাবেক্ষং ইউনিয়নে ১১ জন পাহাড় ধসে মারা যায়।  

বাংলাদেশ সময়: ১৭০৮ ঘণ্টা, জুলাই ৯, ২০১৯
আরএ

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।